ভুয়ো খবরে জেরবার পর্যটকরা, দিঘা প্রশাসনের তরফে জারি সতর্কতা

Digha: সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, হোটেলে থাকতে গেলে করোনা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়া বাধ্যতামূলক। না হলে সঙ্গে রাখতে হবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট। হোটেল মালিকদের দাবি, এই নির্দেশিকা জারি হওয়ার পর থেকে দিঘায় পর্যটকদের আনাগোনা কমেছে।

ভুয়ো খবরে জেরবার পর্যটকরা, দিঘা প্রশাসনের তরফে জারি সতর্কতা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 25, 2021 | 6:15 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: ফেক নিউজ বা ভুয়ো খবরে বিশ্বাস করবেন না। দিঘা বেড়ানো নিয়ে সরকারি কোনও নিয়মে বদল হয়নি। দিঘা সৈকতে বেড়াতে এলে গত সাত জুলাইতে জারি করা নির্দেশিকাই বহাল রয়েছে। এই নিয়ম রাজ্যে সব পর্যটন কেন্দ্রেও জারি হয়েছে। ফলে দিঘাও আলাদা নয়। কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল ছড়িয়ে পড়া একাধিক গুজবকে উড়িয়ে দিয়ে জানাল দিঘা প্রশাসন।

খাতায়-কলমে আগের নিয়মই বহাল থাকছে। তবে, চাইলে এবার হোটেলেও করোনার অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে পারবে কর্তৃপক্ষ। আগামী কিছু দিনের মধ্যেই হয়ত টেস্ট কিট সরবরাহ করতে পারে স্বাস্থ্য দফতর। এমনটাই আশা করা যাচ্ছে। সেই টেস্ট করা হবে দিঘা রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে। কিন্ত প্রশ্ন হল, এত বিপুল সংখ্যক পর্যটক , তার মধ্যে যদি কেউ করোনা পজেটিভ হন সে ক্ষেত্রেও তো পরিস্থিতিতে সামাল দেওয়া অসুবিধার হবে। তার জন্য তো উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই সৈকত শহরে।

এদিন জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠকের পর দিঘা, তাজপুর, মন্দিরমণিতে হোটেল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মালিকপক্ষ। যদিও জেলাশাসকের দরবারে দিঘা এবং নিউ দিঘার হোটেল মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা থাকলেও উপস্থিত ছিলেন না তাজপুর ও মন্দারমণি হোটেল মালিকের কোনও প্রতিনিধি।

রাজ্যে করোনা বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পর পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়েছিল। কিন্তু সরকারের ভ্যাকসিন নির্দেশিকার পরই ছবিটা আমূল বদলে দিয়েছে। বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন হোটেল মালিকরা। পরিস্থিতি এমনই যে, অদূর ভবিষ্যতে দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুর, তাজপুরে হোটেল বন্ধ করে দেওয়ারও চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছিলেন তাঁরা।

এদিকে সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, হোটেলে থাকতে গেলে করোনা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়া বাধ্যতামূলক। না হলে সঙ্গে রাখতে হবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট। হোটেল মালিকদের দাবি, এই নির্দেশিকা জারি হওয়ার পর থেকে দিঘায় পর্যটকদের আনাগোনা কমেছে।

বিভিন্ন জটিলতার কারণে অনেকেই করোনার পরীক্ষা নেগেটিভ রিপোর্ট সংগ্রহ করতে পারছেন না। এর মধ্যে পুলিশি ধরপাকড়ের পর বেশ কয়েকটি হোটেল মালিক ব্যাবসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দিঘা, তাজপুর, শঙ্করপুর ও মন্দারমণির বিভিন্ন হোটেলের মালিকরা। তাঁরা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, সমস্যার যদি সুরাহা না হয়, সেক্ষেত্রে হোটেল বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।

মালিকদের দাবির পর রামনগর ১ বিডিও মারফত কাঁথি মহকুমা শাসক হয়ে জেলা শাসকের কাছে খবর যায়। জেলা শাসক সমগ্র বিষয়ে নিয়ে হোটেল মালিকদের সাথে দিঘায় আবার আলোচনায় বসার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেন। শনিবার দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন ও নিউ দিঘার হোটেল মালিকদের চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাক পূর্ণেন্দু মাঝি।

বৈঠক শেষে জেলা শাসক বলেন, “ওঁনারা কোভিড বিধি মেনে চলার আশ্বাস দিয়েছেন। হোটেলে আমরা টেস্ট করার ছাড়পত্র দিয়েছি। যদি কারও করোনা ধরা পড়ে, সেক্ষেত্রে আর দিঘায় থাকা যাবে না।” এদিকে জানা গিয়েছে, দিঘায় হোটেল কর্মীর সংখ্যাই প্রায় সাড়ে ছয় হাজার। তাঁদের বেশিরভাগই এ পর্যন্ত ভ্যাকসিন পাননি। জেলা শাসক জানান, যাতে দ্রুত ওই কর্মীদের টিকাদানের কাজ শেষ করা যায় তার চেষ্টা চলছে।

রামনগরের বিডিও বিষ্ণুপদ রায় বলেন, “সরকারি সিদ্ধান্ত কোনো পরিবর্তন হয়নি। আগামিদিনে যদি নতুন কোনও নির্দেশিকা জারি হয় রাজ্য বা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে, আমরা তাই পালন করব।” আরও পড়ুন: পেয়ারা বেচছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার! ভাইরাল হল ভিডিয়ো