Fraudster: সল্টলেকে বসে ফোন পুরুলিয়ার গ্রামে, মোবাইলের টাওয়ার বসানোর নামে ৪০ লাখের প্রতারণা

Fraud case in Purulia: বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনায় মূল পান্ডা সহ মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। আজ তাদের পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের ১৪দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Fraudster: সল্টলেকে বসে ফোন পুরুলিয়ার গ্রামে, মোবাইলের টাওয়ার বসানোর নামে ৪০ লাখের প্রতারণা
জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার ২০
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 13, 2022 | 11:09 PM

পুরুলিয়া : ফোনের রিংটোনটা বেজে উঠল। রিসিভ করতেই ফোনের ওপারে এক মহিলা কণ্ঠস্বর। বেশ শান্ত নম্র গলায় কথা বলল চিত্তরঞ্জন মাহাতোর সঙ্গে। চিত্তরঞ্জন বাবু পুরুলিয়ার বাসিন্দা। কেন্দা থানা এলাকার কুদা গ্রামে বাড়ি। ফোনের ওপারে থাকা মহিলা তখন চিত্তরঞ্জন বাবুকে বাড়িতে মোবাইলের টাওয়ার বসানোর কী কী সুবিধা, সেই কথাই বোঝাচ্ছিল। মোবাইলের টাওয়ার বসাতে দেওয়ার বিনিময়ে মোটা টাকা তো রয়েছেই, তার সঙ্গে আবার চাকরিও পাবে ছেলে। ছয় হাজার টাকা মাসহারা পাবে। আর এই টোপেই ফাঁদে পড়ে যান চিত্তরঞ্জন বাবু। মোবাইলে টাওয়ার বসানোর নাম করে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার প্রতারণা করা হয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনায় মূল পান্ডা সহ মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। আজ তাদের পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের ১৪দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

জানা গিয়েছে, ওই প্রতারণা চক্রটি কলকাতা-উত্তর ২৪ পরগনা এলাকা থেকে নিজেদের ফাঁদ পেতে বসত। মোবাইল টাওয়ার বসানোর নাম করে চাকরি ও মোটা টাকার প্রলোভন দিত। এভাবেই শুধু প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করত তারা। ২০১৩ সালে প্রতারকদের পাতা এই ফাঁদেই পা দেন পুরুলিয়ার চিত্তরঞ্জন মাহাতো। তাঁর থেকে প্রায় চল্লিশ লক্ষ টাকার প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রথমে নানা রকম টোপ দেওয়া হয় চিত্তর়ঞ্জন বাবুকে। একবার তিনি সেই টোপে পা দিয়ে সম্মতি জানানোর পরই শুরু হয়ে প্রতারণা। বলা হয়, টাওয়ার বসাতে গেলে ১ লাখ টাকা লাগবে। সেই সময় চিত্তরঞ্জন বাবু নগদ টাকা দিতে চান, কিন্তু প্রতারকরা বলে, নগদ নয়, চেক দিতে হবে। দফায় দফায় তাঁর পাঁচটি ব্ল্যাক ভাঙিয়ে নেয় প্রতারকরা। কোনওটিতে ৩৭ হাজার, কোনওটিতে ১ লাখ ৪০ হাজার, আবার কোনওটিতে ১ লাখ ৩৫ হাজার, আবার কখনও ১ লাখ ৮০ হাজার।

এখানেই শেষ নয়। প্রতারণার এ ছিল সবে শুরু। এরপর তারা আবার বলে পলিসি করতে হবে। সেই মতো ছেলের নামে, বউয়ের নামে, নিজের নামে বিভিন্ন অঙ্কের মোট ১৩ টি পলিসি করানো হয় চিত্তরঞ্জন বাবুকে দিয়ে। ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চলে এই কাণ্ড। যখন চিত্তরঞ্জন বাবু বিষয়টি বুঝতে পারেন, ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে কেন্দা থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। এই অভিযোগের তদন্ত করছিল সিআইডি। ঘটনায় সিআইডি গতকাল রাতে সল্টলেক থেকে এই চক্রের মূল পান্ডা সহ ২০ জনকে গ্রেফতার করে। সন্দীপ বিশ্বাস এই চক্রের মূল পান্ডা। ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণা সহ একাধিক মামলা রুজু করা হয়েছে। আজ তাদের জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেন।