HS Results 2022 : হোমে থেকে ৮৪ শতাংশ নম্বর, লড়াই এখনও থামেনি ডায়মন্ড হারবারের প্রিয়ার

HS Results 2022 : তাঁর দুই বোনই হোমে থাকে। কিন্তু, প্রিয়ার ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় কিছুদিন আগে তাঁকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় হোম কর্তৃপক্ষ। মাসখানেক আগে বাড়িতে আসেন প্রিয়া।

HS Results 2022 : হোমে থেকে ৮৪ শতাংশ নম্বর, লড়াই এখনও থামেনি ডায়মন্ড হারবারের প্রিয়ার
শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন প্রিয়া হালদারের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 15, 2022 | 8:37 PM

ডায়মন্ড হারবার : উচ্চ মাধ্যমিকে (Higher Secondary) ভাল ফল। স্বপ্ন আরও পড়াশোনার। কিন্তু, বাধা অনেক। ছোটবেলা থেকেই অবশ্য বাধা পেরিয়েই এতদূর এসেছেন। তাই হাল ছাড়তে চান না ডায়মন্ড হারবারের প্রিয়া হালদার। ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করতে চান। স্বপ্ন শিক্ষিকা হওয়ার।

ডায়মন্ড হারবারের ন্যাটরা। এখানেই দুই বোন ও বাবা-মার সঙ্গে থাকতেন প্রিয়া। বাড়িতে মদ খেতে রোজ অশান্তি করতেন বাবা। একসময় তা সহ্য করতে না পেরে তিন মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন প্রিয়ার মা। ডায়মন্ড হারবারের ভারত সেবাশ্রমে এসে আশ্রয় নেন।

ঠিকঠাকই চলছিল। আচমকা একদিন তিন বোনকে তিনটি পরিবারের হাতে তুলে দেন তাঁর মা। কয়েকদিন পর খবর পায় ডায়মন্ড চাইল্ড লাইন। তাঁদের তিন বোনকে উদ্ধার করে একটি হোমে গিয়ে রাখে। সেখানে প্রিয়ারা তিন বোন পাঁচ বছর ছিলেন।

ছোটবেলা থেকে বাবা-মার এই ঝগড়া দেখে একদিকে যেমন মনে ভয় ঢুকেছিল। তেমনই পড়াশোনা করে বড় হওয়ার জেদ চেপে বসে প্রিয়ার মনে। হোমে থেকেই পড়াশোনা শুরু করেন প্রিয়া। পাঁচ বছর ওই হোমে থাকার পর তাঁদের তিন বোনকে পাঠানো হয় দিগম্বরপুর অম্বিকা হোমে।

মাধ্যমিকে ৩৯৮ নম্বর পেয়ে পাশ করেন প্রিয়া। দিগম্বরপুর অম্বিকা হোমে থেকেই উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশোনা করেন। এবছর ওই হোমে থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন। ৪২০ নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন। প্রিয়ার বোন এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। আর ছোট বোন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।

তাঁর দুই বোনই হোমে থাকে। কিন্তু, প্রিয়ার ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় কিছুদিন আগে তাঁকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় হোম কর্তৃপক্ষ। মাসখানেক আগে বাড়িতে আসেন প্রিয়া। ভেবেছিলেন, বাবা হয়ত বদলে গিয়েছেন। কিন্তু, কয়েকদিনের মধ্যেই ভুল ভাঙল তাঁর। আগের মতোই মদ্যপান করে বাড়িতে চিৎকার করেন তাঁর বাবা। এমনকি, তাঁর বিয়ে দেওয়ার জন্য জোরাজুরি শুরু করেছেন।

কয়েকদিন পরই বাবার বাড়ি থেকে পিসির বাড়িতে এসে উঠেছেন প্রিয়া। তিনি বলেন, “মা আবার বিয়ে করেছে। আমাদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ নেই। বাবাও মদ্যপ অবস্থায় থাকে।” তবে হাল ছাড়তে চান না প্রিয়া। পিসির বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতে চান। বললেন, হোমের ম্যাডামরা তাঁকে পড়াশোনায় খুবই সাহায্য করেছেন। তাই, ভাল ফল করতে পেরেছেন।

এখন শুধু সামনে তাকাতে চান প্রিয়া। ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষিকা হওয়াই স্বপ্ন। দু’চোখে সেই স্বপ্ন নিয়ে সমস্ত বাধা অতিক্রম করতে বদ্ধপরিকর অষ্টাদশী প্রিয়া।