COVID Vaccination: কখনও মোবাইলের আলো কখনও ভরসা মোমবাতি, দুপুর গড়িয়ে রাত, টিকার আশায় দীর্ঘ লাইন!

COVID Vaccination: সরকারিভাবে আয়োজিত এই টিকাকেন্দ্রে কেন এই অস্বাভাবিকত্ব? কেন বেলাগাম ভিড়? কেনই বা কোনও লক্ষ্যমাত্রা স্থির না করে এইভাবে টিকাকরণ চলছে? কেনই বা টিকাকরণের নূন্যতম নিয়মবিধি পালিত হচ্ছে না?

COVID Vaccination: কখনও মোবাইলের আলো কখনও ভরসা মোমবাতি, দুপুর গড়িয়ে রাত, টিকার আশায় দীর্ঘ লাইন!
এভাবেই চলছে টিকাকরণ, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 20, 2021 | 11:35 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ফের টিকাকেন্দ্রে চরম বিশৃঙ্খলার ছবি। পাওয়ার কাটের জেরে অন্ধকার টিকাকেন্দ্রে (COVID Vaccination Center) মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে কখনও বা মোমবাতি জ্বেলে চলছে টিকাকরণ। ভাঙড়ের ২ নম্বর ব্লকের হাটগাছা হরিদাস বিদ্যাপীঠে উঠে এল এমনই বিশৃঙ্খলার ছবি। যদিও, তা নিয়ে মুখে কুলুপ প্রশাসনের।

সোমবার ঠিক কী দেখা যায়  ভাঙড়ের ওই টিকাকেন্দ্রে? টিকাপ্রাপকদের অভিযোগ, নোটিস পেয়েই এদিন দুর্যোগ মাথায় নিয়ে টিকা নিতে আসেন সকলে। কেউ সকাল দশটা থেকে লাইন দেন, কেউ বা বেলা একটায়। কিন্তু, লাইনে দাঁড়িয়েও টিকা মেলে না। প্রাপকদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই যে পারছেন লাইন ভেঙে অথবা মাঝখান থেকে এসে টিকা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। বারবার বলেও কিছু হচ্ছে না। যারা টিকাকরণের দায়িত্বে রয়েছেন তাঁরাও কোনও প্রশ্ন করছেন না। উপরন্তু পাওয়ার কাট।

দিনের আলো যেতেই অন্ধকারেই চলছে টিকাকরণ। অভিযোগ, মোবাইলের টর্চ জ্বেলে, মোম জ্বালিয়েই চলছে টিকাকরণ। প্রাপকদের আশঙ্কা এর জেরে টিকাকরণে সমস্যা হতে পারে। মাপে ভুলচুক হতে পারে। কিন্তু, দুর্যোগ আবহে টিকাকেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ারও উপায় নেই। কারণ, এরপর কবে টিকাকরণ হবে তা জানেন না কেউ।

টিকা নিতে আসা এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, “সেই দুপুর থেকে লাইন দিয়েছি। এতক্ষণে টিকা পেলাম। তারমধ্য়ে লোডশেডিং। কী টিকা দিল কী যে হল কিছুই বুঝলাম না। যে যেভাবে পারছে এসে টিকা নিয়ে চলে যাচ্ছে। না রয়েছে কোনও নিয়ম না কিছু। অন্ধকারে মোম জ্বেলে টিকাকরণ চলছে।”

অন্যদিকে টিকার লাইনে অপেক্ষারত এক যুবকের কথায়, “মায়ের আজ টিকা নেওয়ার কথা। সকাল দশটা থেকে এসে দাঁড়িয়ে রয়েছি। কিন্তু ভ্যাকসিন পাইনি। কোনও নিয়ম নেই এখানে। যে যেভাবে পারছে টিকা নিয়ে চলে যাচ্ছে। এদিকে লোডশেডিং। তারমধ্যে ঝড়বৃষ্টি। এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছি এই আশায় যদি আজ ভ্যাকসিনেশনটা হয়ে যায়।”

টিকাকেন্দ্রে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, পাওয়ার কাটের জেরে টিকাকরণে বিস্তর সমস্যা হচ্ছে। প্রথমত টিকা দেওয়ার মতো গুরুত্বপূ্র্ণ কাজ সঙ্গে অন্যান্য সরকারি নিয়মবিধি পূরণ ও পালন। সব মিলিয়ে নাজেহাল অবস্থা তাঁদেরও।

কিন্তু, সরকারিভাবে আয়োজিত এই টিকাকেন্দ্রে কেন এই অস্বাভাবিকত্ব? কেন বেলাগাম ভিড়? কেনই বা কোনও লক্ষ্যমাত্রা স্থির না করে এইভাবে টিকাকরণ চলছে? কেনই বা টিকাকরণের নূন্যতম নিয়মবিধি পালিত হচ্ছে না? এ প্রসঙ্গে ব্লক স্বাস্থ্য় আধিকারিক ও ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক জানিয়েছেন, মূলত প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্যই এই সমস্যা। পাওয়ার কাটের জন্য বিদ্যুত্‍ অফিসে ফোনও গিয়েছে। সোমবারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮০০। সেইমতো কুপন বিলি করা হয়েছিল। প্রায় ৭০০ জনকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বাকি ১০০ জনের টিকাকরণ চলছে। আলো না থাকায় সময় বেশি লাগছে বলেই দাবি করেছে ব্লক প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি এই প্রথম নয়। কিছুদিন আগেই সোনারপুরের কালিকাপুরে টিকাকেন্দ্রে চরম বিশৃঙ্খলার ছবি সামনে এসেছিল। সেখানকার ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক জানিয়েছিলেন, অধিকাংশ সময়েই টিকা যে আসছে বা টিকার স্টক ফুরিয়ে গেলে তা পুনরায় সঞ্চয় করা হচ্ছে, সেই খবরই আসছে রাতে। সরকারি নীতি ও নিয়মে টিকার জোগান পূর্তি হলে তারপর কমপক্ষে ১৪-১৫ দিন পর্যন্ত ওই সঞ্চিত টিকা ব্যবহারযোগ্য। তাই টিকা এলেই দিয়ে দিতে হবে এমন তাড়াই মূল এমনটা নয়। আগেভাগে টিকাকরণ করতে হবে এমন চিন্তা যেমন রয়েছে তেমন রয়েছে সঞ্চিত টিকা শেষ করেই দ্রুত টিকা মজুত করা। হিসেবের অঙ্ক মেলাতে গিয়েই এই বিপত্তি। সূত্রের খবর, সোনারপুরে টিকা এসে পৌঁছনোর পরের দিনের মধ্যেই টিকাকরণ কর্মসূচি শেষ করতে যান প্রশাসকেরা। ফলে, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা থেকে শুরু করে টিকাকরণের গোটা কর্মসূচিটির নেপথ্যে থাকে প্রশাসকের পরিকল্পনার অভাব। তবে শুধু সোনারপুরেই নয়, গোটা জেলাজুড়েই কমবেশি এমন সমস্যা বলে দাবি করেন ব্লক আধিকারিক।

আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে নিহত আইএসএফ কর্মীর বাড়িতে সিবিআই