সূচ ফোটানোর পরই অন্ধকার! চোখ খুলল যোগী রাজ্যে, গৃহবধূর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা…
এক মহিলাকে ফুসলিয়ে ফের অজ্ঞান করে ভিনরাজ্যে পাচারের ছক কষেছিল ওই পাচার চক্র।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বিশ্ব পাচার বিরোধী দিবসেই বড় সাফল্য। আন্তঃরাজ্য নারী পাচার চক্র ফাঁস করল ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ। এক মহিলাকে ফুসলিয়ে ফের অজ্ঞান করে ভিনরাজ্যে পাচারের ছক কষেছিল ওই পাচার চক্র। কিন্তু উপস্থিত বুদ্ধি এবং সাহসে ভর করে পুলিশের মদতে ফের বঙ্গে ফিরে আসতে সক্ষম হলেন সেই মহিলা।
ঠিক কী ঘটেছিল? পুলিশ সূত্রে খবর, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা থেকে নিখোঁজ হয়ে যান এক মহিলা। পুলিশে একটি নিখোঁজ ডায়রিও করেছিল তাঁর পরিবার। কিন্তু কোনও খোঁজ মেলেনি। অন্যদিকে, উদ্ধার হওয়া মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, মহেশতলার অন্তর্গত চকমিরে নিজের শ্বশুরবাড়ি থেকে তিনি কাজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। সেই সময় এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ি ওই গৃহবধূর কাছে একটি ঠিকানা জানতে চায়। তিনি ঠিকানা বলতে গেলেই সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা তাঁকে টেনেহিঁচড়ে গাড়ির মধ্যে তুলে নেয়।
মহিলার আরও দাবি, গাড়িতে তুলে নেওয়ার পর তাঁকে কোনও ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় যার জেরে তিনি জ্ঞান হারান। জ্ঞান ফেরার পর চোখ খুলে তিনি জানতে পারেন, উত্তর প্রদেশের মথুরা জেলার একটি হোটেলে তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। পুলিশকে দেওয়া বয়ান অনুযায়ী, পাচারচক্রে জড়িত দুষ্কৃতীদের কাছে তিনি নিজের ফোবাইল ফোনটি ফেরত চান। সিম কার্ড খুলে সেই ফোন ফেরাতে রাজি হয় অপহরণকারীরা। মহিলাও তাই করেন। কিন্তু চালাকি করে ডুয়্যাল সিম ফোনের একটি মাত্র সিম তিনি খুলে দেন। বাকি একটি সিম চুপিসাড়ে ফোনের ভেতরেই রাখেন।
সেই বিষয়টি ঘুণাক্ষরে টের না পেলেও মহিলার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে অপহরণকারীরা। এরই মাঝে ওই মহিলা নিজের এক বন্ধুকে ফোন করে পুরো বিষয়টি জানান। এরপর ওই মহিলার বন্ধু পুরো বিষয়টি প্রথমে মহেশতলা থানায় এবং পরে ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশকে জানায়। পুলিশ তদন্তে নেমে মোবাইল নম্বর ধরে লোকেশন ট্র্যাক করা শুরু করে। মহিলার লোকেশন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরই উত্তর প্রদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর ডায়মন্ড হারবার পুলিশের একটি দল যোগী রাজ্যে গিয়ে উদ্ধার করে ওই মহিলাকে। ঘটনায় ইতিমধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে ধৃত ও অপহৃতের নাম গোপন রাখা হচ্ছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। আরও পড়ুন: নির্দেশিকা নবান্নর: বঙ্গেও ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’ চালু, কী কী বদল এল পদ্ধতিতে?