টিভি নাইনের খবরের জের! টিকার কুপন বিলি-কাণ্ডে অপসারিত অভিযুক্ত পুলিশ অধিকর্তা

TV9 Impact: মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিকাকেন্দ্রে এসে প্রাপকদের সহযোগিতা প্রার্থনা করলেন ডিএসপি-সহ অন্য়ান্য উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তারা। পাশাপাশি, অভিযুক্ত পুলিশ অধিকর্তাকে অপসারিত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে রায়গঞ্জ থানা।

টিভি নাইনের খবরের জের! টিকার কুপন বিলি-কাণ্ডে অপসারিত অভিযুক্ত পুলিশ অধিকর্তা
টিকাকেন্দ্রে বিক্ষোভ, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 25, 2021 | 5:44 PM

উত্তর দিনাজপুর: টিভি নাইন বাংলার খবরের জের (TV9 Impact)। টিকা লাইনে টাকার বিনিময়ে কুপন বিক্রির অভিযোগে অপসারিত রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যালের পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসি মিন্টু মণ্ডল । মঙ্গলবার, মেডিক্যাল কলেজে টিকাপ্রাপকেরা অভিযোগ করেন ওই পুলিশ অধিকর্তা টাকার বিনিময়ে কুপন বিলি করছেন। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। এরপরেই মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিকাকেন্দ্রে এসে প্রাপকদের সহযোগিতা প্রার্থনা করলেন ডিএসপি-সহ অন্য়ান্য উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তারা। পাশাপাশি, অভিযুক্ত পুলিশ অধিকর্তাকে অপসারিত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে রায়গঞ্জ থানা।

এদিন, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের টিকা নিয়ন্ত্রক বিভাগের আধিকারিক সব্য়সাচী মুখোপাধ্যায় বলেন, “মঙ্গলবার টাকার বিনিময়ে কুপন বিলির অভিযোগ উঠেছিল ওই পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে। এমনকী, তাঁর নির্দেশে সিভিক পুলিশকর্মীরাও অন্য় টিকাপ্রাপকদের মারধর করেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়েই আমরা থানায় জানাই। তত্‍ক্ষণাত্‍ তদন্ত শুরু হয়। আপাতত, অভিযুক্ত মিন্টু মণ্ডলকে অপসারিত করা হয়েছে। তবে আশা রাখি, ওঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভুল প্রমাণিত হবে এবং ওঁ দ্রুত ওঁর দায়িত্বে ফিরে আসবেন।”

বুধবার, মেডিক্যাল কলেজের টিকাকেন্দ্রে এসে উচ্চপদস্থ পুলিশ অধিকর্তারা টিকাপ্রাপকদের জানান, তাঁদের নিরাপত্তা যাতে নিশ্চিত করা হয় সেদিকে যথাযথ নজর রাখা হবে। পাশাপাশি, টিকাকেন্দ্রে যাতে কোনওভাবে উত্তেজনা না ছড়ায় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে নির্দেশ দেন পুলিশ কর্তারা। এদিন টিকাকেন্দ্রে মাইকিং করে সতর্কতামূলক প্রচারও করেন তাঁরা।

মঙ্গলবার সকালে, টিকার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজনকে ৩০০ টাকার বিনিময়ে কুপন বিলি করার অভিযোগ ওঠে কর্তব্য়রত পুলিশ অধিকর্তা মিনটু মণ্ডলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, টাকা দিলেই ওই পুলিশ অধিকর্তার কাছে টিকার কুপন মিলছে। অন্য টিকাপ্রাপকেরা ঘটনাটি হাতেনাতে ধরে ফেলতেই মেডিক্যাল কলেজের সামনে বিক্ষোভ চরমে ওঠে। কিন্তু, অভিযোগ অস্বীকার করে ওই পুলিশ আধিকারিক টিকাপ্রাপকদের মারধর করেন বলে অভিযোগ। এমনকী, মহিলাদের গায়েও হাত দেওয়া হয়।

টিকা নিতে আসা এক মহিলা বলেন, “আমরা ভোর পাঁচটা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। আচমকা দেখি, একটি ছেলে বেলাইনে এসে কুপন পেয়ে আগে টিকা নিতে চলেছে। আমরা সবাই মিলে ওই ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারি তিনি এক পুলিশ কর্মীর ছেলে। কর্তব্যরত এসআই ওই ছেলেটির হাতে একটি কুপন দিয়েছেন। আমরা গিয়ে সেই পুলিশ অধিকর্তাকে প্রশ্ন করতেই তিনি ছেলেটির হাত থেকে কুপন ছিনিয়ে নিয়ে  চিবিয়ে খেয়ে ফেলেন। তখন পেছন থেকে এক যুবক এসে জিজ্ঞেস ওই অফিসারকে  জিজ্ঞেস করেন কেন তিনি কুপন খেলেন। তখন সেই যুবককে ধরে নিয়ে যান সিভিক ভলেন্টিয়ার আর ওই পুলিশ অধিকর্তা। বন্ধ ঘরে তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। আমরা আটকাতে গেলে আমাদেরও মারধর হেনস্তা করা হয়। ওখানে কোনও মহিলা পুলিশ ছিলেন না।” এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

পাল্টা, ওই পুলিশ অফিসার দাবি করেন, তিনি কোনও টিকাপ্রাপককেই কোনওরকম আঘাত করেননি। ওই অধিকর্তার কথায়, “আমি কি কোনও পুলিশ কর্মীর ছেলেকে টিকার কুপন দিতে পারব না? আমি পুলিশ হিসেবে অবশ্যই চাইব যাঁরা রাস্তায় থেকে কাজ করছেন তাঁদের সুরক্ষা আগে নিশ্চিত করা হোক। আমি কেবল কুপনটাই দিয়েছি। কোনও টাকা পয়সা নেওয়া হয়নি। যাঁরা মারধর হামলার অভিযোগ তুলছেন তাঁরা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন।” যদিও টিকাপ্রাপকদের দাবি, যে ছেলেটিকে মারধর করেছেন ওই অফিসার, সেই যুবক গুরুতর অসুস্থ। এমনকী, তাঁর মৃত্যুও হতে পারত বলে অভিযোগ টিকাগ্রাহকদের। TV9-এ এই খবর সম্প্রচার হওয়ামাত্রই রায়গঞ্জ থানার পুলিশ অধিকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৈঠকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত অধিকর্তাকে অপসারিত করা হয়। আরও পড়ুন: ‘তিনদিন ধরে ঘেরাও করব ওঁকে, পাগলামি ছাড়িয়ে ছাড়ব’, উপাচার্যকে হুঁশিয়ারি অনুব্রতর!