ভয়াবহ ভূমিকম্পে গ্রিস-তুরস্কে নিহত ২২, ১৯৬ বার আফটার শক, ফিরল ১৯৯৯-র ভয়ানক স্মৃতি!

রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ ম্যাগনিটিউড। উৎস ছিল গ্রিক শহর কার্লোভাসি থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে সামোসে।

ভয়াবহ ভূমিকম্পে গ্রিস-তুরস্কে নিহত ২২, ১৯৬ বার আফটার শক, ফিরল ১৯৯৯-র ভয়ানক স্মৃতি!
ছবি- সংগৃহীত
Follow Us:
| Updated on: Nov 02, 2020 | 9:29 AM

TV 9 বাংলা ডিজিটাল:  ভয়ানক ভূমিকম্পের কবলে পড়ল গ্রিস (Greece) ও তুরস্ক (Turkey) । সংবাদ মাধ্যম মারফত ইতিমধ্যেই ২২ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে শুক্রবারের ভূমিকম্পের মাত্রা ৭। উৎস ছিল গ্রিক শহর কার্লোভাসি থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে সামোসে।

ভূমিকম্পের পর তুলনামূলক কম শক্তিশালী সুনামি আছড়ে পড়ে উৎস সামোসের এজিয়ান দ্বীপে। যার জেরে তুরস্কের পশ্চিম উপকূলের প্রত্যেকটি নদীতে অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ে জলস্তর। ভূমিকম্পের মাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে ইস্তানবুল ও এথেন্স, দুই শহরেই অধিক মাত্রায় অনুভূত হয় কম্পন। এমনকি ভূমিকম্পের একদিন পরে শনিবারও ১৯৬ বার আফটার শক অনুভূত হয়।

Turkey

ছবি-সংগৃহীত

বিধ্বস্ত ইজমির: সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে তুরস্কের ইজমিরে। ৩০ লক্ষ মানুষের ইজমির দ্বীপ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ভূমিকম্পের জোরাল আঘাতে। একাধিক বাড়ি-ঘর মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছে। বাড়ি থেকে আসবাব, বালিশ এসে পড়েছে রাস্তায়। ভূমিকম্পের পর হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। ধ্বংস লীলায় স্তম্ভিত অনেকেই কিছুক্ষণের জন্য মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলেন।

চোখে মুখে ভয়ের ছাপ নিয়ে ৩২ বছরের গোখন খান বলেন, “১০ মিনিট কম্পন হওয়ার পর ভাবছিলাম বোধহয় আর থামবে না।” ইজমিরের মেয়র টুনক সোয়ার সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন ২০ টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। ভাঙা বাড়ির ধ্বংসাবশেষ থেকে ১৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে অবশ্য ইজমিরের গভর্নর জানান ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ি-ঘর থেকে ৭০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

তুরস্কের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, শক্রবারের ভূমিকম্পে ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন ৮০০-র বেশি মানুষ। পড়শি দেশ গ্রিসে ভূমিকম্পের সময় স্কুল থেকে ফেরার পথে প্রাণ হারিয়েছে ২ স্কুল পড়ুয়া।

Turkey

ছবি-সংগৃহীত

কম্পনে কাছাকাছি গ্রিস-তুরস্ক (Greece-Turkey):

গ্রিস ও তুরস্ক, দুই দেশই ভূমিকম্প বলয়ের অন্তর্গত। ক্রমাগত ভূমিকম্পের কবলে পড়েছে দুই দেশই। বিগত বছরগুলিতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক খুব একটা ভাল দিকে এগোয়নি। কিন্তু ভূমিকম্পের সময় তুরস্কের পাশে দাঁড়িয়েছে গ্রিস। প্রথমে তুরস্কের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন গ্রিসের বিদেশমন্ত্রী। তারপর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্ডোগানকে ফোন করেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিয়রাস্কো মিসোতাকিস। টুইটে গ্রিক প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “যাই মতভেদ থাকুক না কেন, এমন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান উচিত।” সেই টুইটের উত্তরে এর্ডোগান লিখেছেন, “ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী।”

আমেরিকার স্টেট বিভাগ ভূমিকম্প কবলিত দুই দেশের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে। ফ্রান্সের সঙ্গে একেবারেই সম্পর্ক ভাল না তুরস্কের। তবু ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ দুই দেশেরই পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন।

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত ২ দেশের ধ্বংস লীলার ছবি দেখে আঁতকে উঠেছেন নেটিজেনরা। যেখানে বাড়িগুলি ভেঙেছে সেখানে শুধুই সাদা ধোঁয়া। জল ঢুকে এসেছে রাস্তায়। অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পয়েছে সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতা। এর আগেও ভয়াবহ ভূমিকম্পের সম্মুখীন হয়েছে গ্রিস ও তুরস্ক। ১৯৯৯ সালে ৭.৪ ম্যাগনিটিউডের শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্কের উত্তরাংশে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৭ হাজার মানুষ। ইস্তানবুলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার জন।