Bangladesh News: ‘বিরোধীহীন’ হচ্ছে বাংলাদেশের সংসদ, পদত্যাগের ঘোষণা বিএনপি-র সাত সাংসদের

Bangladesh News: বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করলেন বিএনপি-র সাত সাংসদ। এদিন ঢাকায় দলের মহাসমাবেশ থেকে এই কথা ঘোষণা করেন তাঁরা।

Bangladesh News: 'বিরোধীহীন' হচ্ছে বাংলাদেশের সংসদ, পদত্যাগের ঘোষণা বিএনপি-র সাত সাংসদের
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 10, 2022 | 6:14 PM

ঢাকা: নয়া রাজনৈতিক সংকটের মুখে বাংলাদেশ (Bangladesh)। ২৩ সালের সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার ঢাকায় মহাসমাবেশের আয়োজন করেছিল বাংলাদেশের সবথেকে বড় বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপি (BNP)। এই সমাবেশে আগামী নির্বাচন নিয়ে একাধিক দাবি তোলা হয়েছে বিএনপির তরফে। আর এই সমাবেশ থেকেই বাংলাদেশের সংসদ থেকে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন সংসদে নির্বাচিত ৭ জন সাংসদ।

শনিবার বিএনপি-র সমাবেশ :

শনিবার রাজধানী ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির তরফে মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়। এই সমাবেশ ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশের একাধিক জায়গায় উত্তেজনা ছড়াচ্ছিল। সমাবেশ আজ হলেও গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএনপির একাধিক কর্মী সমর্থকরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। গতকালেই রাতেই অনেকে এই সমাবেশ স্থলে পৌঁছে যান। আবার বিভিন্ন জায়গায় নেতা কর্মীদের সভাস্থলে উপস্থিত হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার অভিযোগও তোলা হয়েছে। পুলিশের তরফে বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে গতকালই রাজধানী শহর সহ একাধিক জায়গা থেকে আরও ৫০০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানা গিয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগিরকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা, যানবাহন বন্ধ ও ব্যাপক বাধা ও হামলার পরও লক্ষ লক্ষ মানুষ অংশ নেয় বিএনপির এই সমাবেশে। আর আজই সাত সাংসদ পদত্য়াগের কথা ঘোষণা করেন সমাবেশের শেষে।

৭ সাংসদের পদত্যাগের ঘোষণা:

এই সমাবেশে বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ প্রথম পদত্যাগের ঘোষণা করেন। এরপর অন্য সাংসদরা একে একে পদত্যাগের ঘোষণা করেন। দেশের বাইরে থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মোহম্মদ হারুনুর রশিদের হয়ে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন গোলাম মোহাম্মদ। একাদশতম জাতীয় সংসদে বিএনপির সাত সাংসদ হলেন ভারতের সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আমিনুল ইসলাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মোহম্মদ হারুনুর রশিদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আবদুস সাত্তার, বগুড়া-৪ আসনের মোহম্মদ মোশাররফ হোসেন, বগুড়া–৬ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের জাহিদুর রহমান ও বিএনপির সংরক্ষিত সাংসদ রুমিন ফারহানা।

বাংলাদেশের সংসদে বিরোধী রইল কারা?

জাতীয় সংসদে আসন সংখ্যা ৩৫০। ৩০০ টি আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়। বাকি ৫০ টি নারীদের জন্য সংরক্ষিত। এদিকে ৩০০ টি আসনে কোন দল কত ভোট পেয়েছে তার আনুপাতিক হারে বাকি ৫০ টি আসন বণ্টন করা হয়। সব মিলিয়ে ৩৫০ টি আসনের মধ্যে ৩০২ টি আসন রয়েছে আওয়ামি লিগের ঝুলিতে। ২৬ টি রয়েছে জাতীয় পার্টি (এরশাদ)-র কাছে। এদিকে জাতীয় পার্টি আওয়ামি লিগের সঙ্গে জোট বেঁধেই গত সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল তারা। জাতীয় সংসদে বিরোধী বলতে ছিলেন বিএনপি-র ৭ সদস্য। কিন্তু তাঁদের পদত্যাগে বিরোধী শূন্য হয়ে পড়বে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে বিরোধী হিসেবে শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলবেন কারা। এটাই কি গণতন্ত্রের আসল কাঠামো কি না তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচন:

২০১৮ সালে বাংলাদেশে একাদশতম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই নির্বাচনে জিতে বাংলাদেশে ফের সরকার গঠন করেন শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ। এই নির্বাচন ঘিরে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলে বিরোধী দলগুলি। ভোটগ্রহণের দিনই বিএনপির তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, ভোটে কারচুপি হয়েছে। সেদিনই বিএনপির তরফে জানানো হয়, এই নির্বাচনে তারা অংশ নেবে না। শেষমেশ তারা সাতটি আসন পায়। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ সাতজন সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন। বিতর্কিত ও বহুল কারচুপির অভিযোগ এনে এই সংসদে শপথ নেননি মির্জা ফখরুল। নির্ধারিত সময়ে শপথ না নেওয়ায় ফখরুলের আসনটি শূন্য ঘোষণা করে আবার নির্বাচন হয়। তাতে জয়ী হন বিএনপির প্রার্থী জিএম সিরাজ।

২০২৩ সালের সাধারণ নির্বাচন:

২০২৩ সালের সাধারণ নির্বাচন ঘিরে এখন থেকেই ঝাঁঝ বাড়ছে বাংলাদেশে। ২৩ সালের সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার ঢাকায় মহাসমাবেশের আয়োজন করেছিল বাংলাদেশের সবথেকে বড় বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপি (BNP)। এই সমাবেশে আগামী নির্বাচন নিয়ে একাধিক দাবি তোলা হয়েছে বিএনপির তরফে। আর এই সমাবেশ থেকেই বাংলাদেশের সংসদ থেকে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন সংসদে নির্বাচিত ৭ জন সাংসদ। এই সমাবেশ থেকে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেছে বিএনপি। তাদের তরফে দাবি তোলা হয়েছে,বর্তমানের অনির্বাচিত, অবৈধ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে গণতন্ত্র হরণকারী এই ক্ষমতাসীন সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। খালেদা জিয়া সহ সব বিরোধী দলনেতাদের সাজা বাতিল সহ একাধিক দাবি তোলা হয়।