Corpses Found At Thai Temple: মঠের মধ্যে লুকনো ৭৩টি মৃতদেহ, পোষা হয় ৬০০ বেশি কুমির! ‘সাধনার সামগ্রী’ দেখে শিউরে উঠল পুলিশও
Corpses Found At Thai Temple: ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব এশিয়ার দেশ তাইওয়ানে। কেন একটি মঠে ৭৩টি মরদেহ নিয়ে এসে রাখা হয়েছে?
বৌদ্ধ মঠ মানেই আমাদের মনে আসে শান্ত পবিত্র এক ছবি। গেরুয়া বসন পরে চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা। কিন্তু ধরুন সেই মঠেই লুকনো থরে থরে মৃতদেহ। শুনলেই গায়ে কাঁটা দেয়। যেন মনে হয় কোনও গল্প পড়ছি। তবে গল্প হলেও সত্যি। সম্প্রতি একটি বৌদ্ধ মঠ থেকে ৭৩ টি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব এশিয়ার দেশ তাইওয়ানে। কেন একটি মঠে ৭৩টি মরদেহ নিয়ে এসে রাখা হয়েছে? ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুসারে প্রশ্নের মুখে মঠের প্রধান জানান, সন্ন্যাসীদের আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্যই নাকি রেখে দেওয়া হয়েছে সেই সব মরদেহ। এখানেই শেষ নয়, বৌদ্ধ মন্দির চত্বরের একাধিক পুকুরে ৬০০টি কুমিরের হদিস মিলেছে। মন্দিরের ভিতরে কুমির বা কেন পোষা হয়েছিল তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
২২ নভেম্বর, তাইল্যান্ডের পুলিশ মধ্য তাইল্যান্ডের ফিচিট প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত থিফাকসং পা সাংনায়াথাম মন্দিরে অভিযান চালিয়ে ৪১টি মরদেহ উদ্ধার করে।
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, মঠটি, ঘন জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত। প্রায় ১৬,০০০ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। মূলত নানা আধ্যাত্মিক অনুশীলনের জন্য বিখ্যাত ছিল এই মঠ। অসংখ্য ভক্ত মঠকে প্রচুর জমি দান করেন। ফলে মঠ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ধীরে ধীরে ফুলে ফেঁপে ওঠে মঠের সম্পত্তি।
এই মঠেই খোলা আকাশের নীচে ধ্যান করার জায়গার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। পর্যটক ও সাধুদের খাওয়া দাওয়া করার জন্য আছে চারটি ডাইনিং হল, বাঁশের তৈরি বেশ কয়েকটি ধ্যান মণ্ডপ। যার প্রত্যেকটিতে ৪-৫ করে কফিনের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।
প্রায় ৬০০ বেশি কুমিরে ভর্তি পুকুরের সন্ধান মিলছে। যা ‘উইশিং ওয়েল’ নামে পরিচিত। পর্যটকরা গেলে দূর থেকে এই পুকুর দেখার অনুমতি পেত।
এত মৃতদেহ মঠে এল কী ভাবে? মঠ কতৃপক্ষের দাবি এই মৃতদেহগুলি হয় মঠের পুরনো ভিক্ষুদের। যারা নিজেদের দেহ মৃত্যুর আগে নিজেদের দেহদান করে গিয়েছিলেন। অথবা সন্ন্যাসীদের আত্মীয়দের। প্রমাণ হিসাবে অনেকগুলি ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ দেখিয়েছেন পুলিশকে। শংসাপত্রগুলি ক্ষতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এই ঘটনার পরেই ২৬ নভেম্বর ফিচিট প্রদেশের দক্ষিণে অবস্থিত ব্যাং মুন নাক মঠ জেলার একটি মন্দির থেকে আরও ৩২টি মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
দু’টি মঠেরই দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান ভিক্ষু ফ্রা আজান সাই ফন পান্ডিতোর দাবি, মৃতদহগুলি ভিক্ষুদের মৃত্যুভয় কাটিয়ে তোলার জন্য ব্যবহার করা হত। পান্ডিতোর নিজেও অলৌকিক শক্তির অধিকারী বলে দাবি করেন তাঁর ভক্তরা। তাঁর নাকি দিব্যদৃষ্টি রয়েছে এবং অলৌকিক শ্রবণ শক্তি রয়েছে।
পান্ডিতোর দাবি সাধনার এই বিশেষ পদ্ধতি তাঁর নিজের আবিষ্কৃত, যা সন্ন্যাসীদের মনকে শান্ত করতে এবং জীবনে নিয়মাবর্তিতা আনতে সাহায্য করে। অনেক সন্ন্যাসী এই বিশেষ পদ্ধতির টানে ছুটে আসে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বর্তমানে, পুলিশ মৃতদেহগুলিকে বাজেয়াপ্ত করে, মন্দিরের সমস্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। মৃতদেহগুলির পরিচয় এবং কোথা থেকে এল তা নিয়েও তদন্ত চলছে।
ন্যাশানাল অফিস অব বুদ্ধিসম তাইল্যান্ড বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। সমাজমাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে এই খবর।