জিডিপি-তে বেনজির সাফল্য, বাংলাদেশ নিয়ে উৎসাহী আমেরিকা, লাভ হবে বাংলারও
• অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধির কারণে চীন সহ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহী হচ্ছে।
TV9 বাংলা ডিজিটাল: মাথাপিছু জিডিপি-তে (GDP) বাংলাদেশের নজিরবিহীন সাফল্য। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের (IMF)ভবিষ্যদ্বানী, চলতি বছরের শেষে ভারতের মাথাপিছু জিডিপি-কে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) দেশের মাথাপিছু জিডিপি-তে কম করে ৪ শতাংশ বৃদ্ধি দেখছে আইএমএফ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এই সাফল্য পেতে পারে শ্রীলঙ্কাও।
অন্যদিকে, ভারত যেখানে ৫ লক্ষ কোটির অর্থনীতি তৈরির স্বপ্ন দেখছে, সেখানে দেশ সাফল্য পাওয়া তো দূর কার্যত গাড্ডায় পড়েছে দেশের অর্থনীতি। আইএমএফ-এর আশঙ্কা, ২০২০ অর্থবর্ষে ভারতের মাথা পিছু জিডিপি-তে ১০ শতাংশ সংকোচন হতে পারে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিরোধীদের নিশানায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অতীতে নোটবন্দি, জিএসটি-র মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে কংগ্রেস সহ দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর চক্ষুশূল হয়েছেন নমো। আর এবার বিরোধীদের আক্রমণের হাতিয়ার দেশীয় অর্থনীতির বেহাল দশা।
আইএমএফ এর সম্ভাবনা অনুযায়ী ভারত ও বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি-তে ফারাক হবে ১১ ডলার। ব্যবধান অল্প হলেও ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, যেখানে বিগত সময়ে বাংলাদেশের জিডিপি-র থেকে ৪০ শতাংশ এগিয়ে ছিল ভারত, সেখানে প্রতিবেশী দেশ কোন কৌশলে সাফল্য পেল?
বাংলাদেশ সাফাল্য পেয়েছে রফতানি বাড়িয়ে। তার ওপর এই সময়ে চিনের সঙ্গে ১৫ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা শেখ হাসিনার দেশকে বাড়তি জ্বালানি জুগিয়েছে। বাংলাদেশ ২০১৯ অর্থবর্ষে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার পণ্য রফতানি করতে সক্ষম হয়েছে। সেই তুলনায় ভারতের পারফর্ম্যান্স একেবারেই আশাব্যঞ্জক নয়। এই সাফল্যের ফলে উপসাগরীয় দেশগুলো নিয়ে বিশ্বের যা ধারণা ছিল, তার বদল তো ঘটলই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের বাংলাদেশে ব্যবসা নিয়ে উৎসাহ বাড়ল। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত এবং পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোনও দেশের কথা ভাবাই হত না, বাংলাদেশের শ্রীবৃদ্ধি সেই একবগ্গা চিন্তার বদল ঘটাল।
এক দশক আগেও বাংলাদেশের তুলনায় ৬ হাজার কোটি টাকার অর্থনীতির দেশ ছিল পাকিস্তান (Pakistan)। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ওপর দেশের সরকারের নিয়ন্ত্রণ এবং ঢাকায় (Dhaka) মুদ্রাস্ফীতি রুখে দিয়ে সেই ছবিটা পাল্টে ফেলল বাংলাদেশ। এখন যেখানে বাংলাদেশি টাকায় এক ডলারের মূল্য ৮৫ টাকা, পাকিস্তানে সেখানে এক ডলারের মূল্য ১৬২ টাকা। উপসাগরের পূর্বাঞ্চলে বিশেষ করে আঞ্চলিক ক্ষেত্রে আরও বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করেছে বাংলাদেশ। যার ফলে সার্ক-এর পরিবর্তে দিল্লি এবার ভারত, ভূটান, নেপালের আঞ্চলিক ক্ষেত্রে আরও বেশি করে নজর দিতে পারবে।
অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধির কারণে চিন-সহ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহী হচ্ছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের সাফল্য দিল্লি ও ঢাকার সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। বিশেষ করে দেশের পূর্বভাগে যোগাযোগের উন্নয়নে আরও অগ্রসর হবে কেন্দ্র। এতে আখেরে লাভ হবে পশ্চিমবঙ্গের এবং একই সঙ্গে দুই বাংলার একই ভাষাভাষি-র মানুষের।