China’s naval base: নিশানায় ভারত, তরতরিয়ে এগোচ্ছে চিনের ‘মিশন ইন্ডিয়ান ওশ্যান’, উদ্বেগ বাড়াল নয়া উপগ্রহ চিত্র
China's naval base in Djibouti: ভারতের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিল 'ম্যাক্সার'এর সদ্য প্রকাশিত কয়েকটি উপগ্রহ চিত্র। জিবুতিতে চিনের নৌ ঘাঁটি এখন সম্পূর্ণরূপে কাজ করা শুরু করে দিয়েছে।
ওয়াশিংটন: ভারতের জন্য চিনা হুমকি আরও বাড়ল। ইতিমধ্য়েই শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে অবস্থান করছে চিনের ২৫,০০০ টন ওজনের স্যাটেলাইট এবং ব্যালিস্টিক মিসাইল ট্র্যাকিং জাহাজ ইউয়ান ওয়াং ৫। এরই মধ্যে নয়াদিল্লির উদ্বেগ বাড়িয়ে দিল উপগ্রহ চিত্র প্রদানকারী সংস্থা ‘ম্যাক্সার’এর সদ্য প্রকাশিত কয়েকটি ছবি। উপগ্রহ চিত্রগুলি থেকে স্পষ্ট, জিবুতিতে চিনের নৌ ঘাঁটি এখন সম্পূর্ণরূপে কাজ করা শুরু করে দিয়েছে। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে মোতায়েন চিনা যুদ্ধজাহাজগুলি ইতিমধ্যেই এই ঘাঁটিতে নোঙর গাঁড়া শুরু করে দিয়েছে। নৌযুদ্ধ বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে শুধু যে মার্কিন নৌবাহিনীরক কপালের ভাঁজ বাড়বে তাই নয়, চিনা নৌবাহিনীর নিশানায় রয়েছে ভারতীয় নৌসেনাও।
২০১৬ সাল থেকেই আফ্রিকার দেশ জিবুতিতে নৌঘাঁটি তৈরির কাজ শুরু করেছিল চিন। মোট ৫৯ কোটি মার্কিন জলার ব্যয়ে এই নৌঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। কৌশলগত স্থান বাব-এল-মান্দেব প্রণালীতে এই ঘাঁটিটি তৈরি করা হয়েছে। এই প্রণালীই এডেন উপসাগর এবং লোহিত সাগরকে পৃথক করে। এই এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল সুয়েজ খালের উপর নজরদারি করা অত্যন্ত সহজ। প্রসঙ্গত, এটিই চিনের প্রথম বিদেশের মাটিতে গড়ে তোলা সামরিক ঘাঁটি। উপগ্রহ চিত্রগুলি বিশ্লেষণ করে নৌযুদ্ধ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জিবুতি নৌঘাঁটিটি অত্যন্ত সুরক্ষিত উপায়ে তৈরি করা হয়েছে। প্রায় মধ্যযুগীয় দূর্গের মতো কঠিন প্রতিরক্ষার স্তরে সুরক্ষিত করা হয়েছে ঘাঁটিটি। সরাসরি আক্রমণ করেও ঘাঁটিটির ক্ষতি করা প্রায় অসম্ভব।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ‘ম্যাক্সার’এর প্রকাশিত ছবিগুলি অনুযায়ী জিবুতি ঘাঁটি শুধু কাজ করা শুরু করে দেয়নি, ইতিমধ্যেই সেখানে নোঙর করেছে একটি চিনা ইউঝাও-শ্রেণির জাহাজ। ৩২০মিটার লম্বা বার্থিং এলাকায় এই রণতরীটি নোঙর করেছে। ‘চাংবাই শান’ নামে চিহ্নিত জাহাজটি ৮০০ জন পর্যন্ত সৈন্য, বহু সামরিক যানবাহন, এয়ার-কুশনযুক্ত ল্যান্ডিং ক্রাফট এবং হেলিকপ্টার মিলিয়ে প্রায় ২৫,০০০ টন ওজন বহন করতে পারে। সাধারণত, এই জাহাজটির সামনে একটি চিনা ‘ডেস্ট্রয়ার’ রণতরী থাকে। এই রণতরীটি বহু ট্যাঙ্ক, ট্রাক এমনকি হোভারক্রাফ্টও বহন করতে পারে বলে জানা গিয়েছে। এই রণতরীগুলির বহরই চিনের উভচর আক্রমণ বাহিনীর মূল ভিত্তি। অর্থাৎ, এই রণতরীগুলির মাধ্যমে জলপথে গিয়ে অন্যান্য দেশে আক্রমণ চালাতে পারে চিন।
এই উন্নয়নের প্রেক্ষিতে, এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে ভারতীয় নৌবাহিনী প্রাক্তন প্রধান অ্যাডমিরাল অরুণ প্রকাশকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, চিনের সামুদ্রিক উদ্দেশ্য বা সক্ষমতা সম্পর্কে নয়াদিল্লির কোনো ভ্রম থাকা উচিত নয়। ১৪ বছর ধরে ‘হর্ন অব আফ্রিকা’র কাছে তারা একটি স্থায়ী টহলদারী বাহিনী প্রতিষ্ঠা করেছে। জিবুতিতে চীনের উপস্থিতি ভারত মহাসাগরে তাদের উপস্থিতি প্রতিষ্ঠার একটি বিশদ পরিকল্পনার অংশ। পারস্য উপসাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর প্রধান ঘাঁটি রয়েছে। তারাই চিনাদের প্রধান লক্ষ্য ঠিক। তবে, ওই অঞ্চলে দ্বিতীয় বৃহত্তম উপস্থিতি রয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনীর। কাজেই ভারতও চিনাদের নিশানায় রয়েছে। জিবুতি, হাম্বানটোটার পাশাপাশি পাকিস্তানের গ্বদর বন্দরও বারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনা প্রবাব সম্প্রসারণের অন্যতম চাবিকাঠি হয়ে উঠতে চলেছে। এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।