Cancer Cure: ‘সকালে উঠে দেখি টিউমার ভ্যানিশ’! ঐতিহাসিক ক্যান্সারের চিকিৎসার অংশ এই ভারতীয় মহিলাও

Indian origin woman part of cancer drug trial: নিউ ইয়র্কের মেমোরিয়াল স্লোয়ান কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারের পরীক্ষামূলক চিকিৎসায় সম্পূর্ণ ক্যান্সার মুক্ত হওয়া ১৮ জন রোগীর মধ্যে একজন ভারতীয় মহিলাও ছিলেন। ক্যান্সার মুক্তি নিয়ে কী জানালেন তিনি?

Cancer Cure: 'সকালে উঠে দেখি টিউমার ভ্যানিশ'! ঐতিহাসিক ক্যান্সারের চিকিৎসার অংশ এই ভারতীয় মহিলাও
আশা জাগাচ্ছে এই নয়া চিকিৎসা পদ্ধতি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 08, 2022 | 5:09 PM

নিউ ইয়র্ক: ঐতিহাসিক পরীক্ষামূলক ক্যানসার চিকিৎসার অংশ হলেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলাও। নিউ ইয়র্কের মেমোরিয়াল স্লোয়ান কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারে সম্প্রতি এক ওষুধের ক্লিনিকাল ট্রায়ালে, ট্রায়ালে অংশ নেওয়া ১৮ জন রোগীই মলদ্বারের ক্যান্সার থেকে মুক্ত হয়েছেন। চিকিৎসকদের দাবি, এর আগে ক্যান্সারের কোনও পরীক্ষামূলক চিকিৎসাতেই ১০০ শতাংশ সাফল্য আসেনি। তাই, এই প্রথম ক্যান্সারের একটি কার্যকর ওষুধ হাতে পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ওই ১৮ জন রোগীরই একজন হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা নিশা বারুগেজ। সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বাকি ১৭ জনের মতো এই ভারতীয়-মার্কিন মহিলাও মলদ্বারের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। কিন্তু, ওই পরীক্ষামূলক চিকিৎসার পর তিনি সম্পূর্ণরূপে ক্যান্সার মুক্ত হয়েছেন। তাঁর টিউমারও সেড়ে গিয়েছে।

তাঁর এই ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার বিষয়ে নিশা বলেছেন, ‘এটা একটা মিরাকল’। তিনি আরও জানিয়েছেন, যেদিন প্রথম ক্যান্সার মুক্ত হয়েছিলেন, প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি তিনি। ওই দিনের বিষয়ে নিশা বারুগেজ বলেছেন, ‘ওই দিন আমি কোনও টিউমার দেখতে পাইনি। আমি ভাবছিলাম, কোথায় গেল টিউমারটা? তারপর মনে হয়েছিল, ওটা ভিতরে কোথাও লুকিয়ে রয়েছে, দেখা যাচ্ছে না। পরে ডাক্তাররা আমায় জানান, টিউমারটি আর নেই। এটা সত্যিই মিরাকল’।

নিশা ভারুগেজ এবং অন্যান্য রোগীরা সকলেই মলদ্বারের ক্যান্সারের রোগী ছিলেন। শুধুমাত্র মলদ্বারেই স্থানীয়ভাবে ছড়িয়েছিল ক্যান্সার, আর অন্য কোনও অঙ্গে ছড়ায়নি। কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন, শল্য চিকিৎসা-সহ বিভিন্নরকম চিকিৎসার মাধ্যমে তাঁরা ক্যান্সার সাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, কাজ হয়নি। সঙ্গে দেখা দিয়েছিল অন্ত্রের সমস্যা, প্রস্রাবের সমস্যা এবং এমনকি যৌনক্ষমতা হারানোর মতো সমস্যাও। আরও একবার সেই সকল অসুবিধাজনক চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য মানসিকরভাবে তৈরি ছিলেন তাঁরা। সেই সময়ই এই পরীক্ষামূলক চিকিৎসা পদ্ধতির অংশ করা হয়েছিল নিশা ও বাকিদের। ছয়মাস ধরে, তিন সপ্তাহ অন্তর তাঁদের ডস্টারলিম্যাব নামে একটি ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। আর এই ওষুধেই তাঁরা ক্যান্সার মুক্ত হয়েছেন, অন্য আর কোনও চিকিৎসা লাগেনি।

ইয়র্কের মেমোরিয়াল স্লোয়ান কেটারিং ক্যান্সার সেন্টার জানিয়েছে, ডস্টারলিম্যাব ওষুধ প্রয়োগে ইমিউনোথেরাপিতেই মলদ্বারের ক্যান্সার সেড়ে গিয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ডস্টারলিম্যাব ওষুধে গবেষণাগারে তৈরি কিছু অণু থাকে, যেগুলি, মানবদেহে অ্যান্টিবডির বিকল্প হিসাবে কাজ করে। ইমিউনোথেরাপি শরীরের নিজস্ব ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহযোগী হিসাবে ব্যবহার করে।

মানবদেহের ইমিউন কোষে একটি ‘চেকপয়েন্ট’ নামক সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকে। ওই চেকপয়েন্টই ইমিউন কোষগুলিকে, মানবদেহের স্বাভাবিক কোষগুলিকে আক্রমণ করা থেকে প্রতিরোধ করে। ক্যান্সারের কোষগুলি এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে ইমিউন কোষগুলির কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে। ফলে, টিউমারগুলি গোপনে বেড়ে উঠতে পারে। ইমিউনোথেরাপি, ক্যান্সার কোষগুলিকে শনাক্ত করে, সেগুলিতে আক্রমণ করার বিষয়ে ইমিউন কোষগুলিকে সহায়তা করে। এই গবেষণা দলের অন্যতম সদস্য তথা ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ আন্দ্রেয়া সেরসেক জানিয়েছেন, ‘ইমিউনোথেরাপিতে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক দ্রুত টিউমারগুলি সঙ্কুচিত হয়েছে’।