এশিয়াতেও পরমাণু যুদ্ধের উদ্বেগ! আমেরিকা-দক্ষিণ কোরিয়াকে ভয়ঙ্কর হুমকি দিলেন কিম

Kim Jong Un: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ হলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবে না উত্তর কোরিয়া। সাফ জানালেন উত্তর কোরিয়ার একচ্ছত্র নেতা কিম জং উন।

এশিয়াতেও পরমাণু যুদ্ধের উদ্বেগ! আমেরিকা-দক্ষিণ কোরিয়াকে ভয়ঙ্কর হুমকি দিলেন কিম
কোরিয় যুদ্ধের ৬৯তম বার্ষিকিতে কিম জং উন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 28, 2022 | 10:02 PM

পিয়ংইয়ং: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ হলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবে না উত্তর কোরিয়া। সাফ জানালেন উত্তর কোরিয়ার একচ্ছত্র নেতা কিম জং উন। বুধবার (২৭ জুলাই) কোরিয় যুদ্ধের সমাপ্তির ৬৯তম বার্ষিকীতে প্রাক্তন সামরিক কর্তাদের এক সম্মেলনে কিম জং উন আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে এই কড়া বার্তা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সেই দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম। তবে, সামরিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, কিম তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের হুমকি দিলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা তার মিত্রশক্তিগুলির বিরুদ্ধে প্রথমে হামলা চালাবেন না। তবে, উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে অভিযান হলে, কী হবে তা বলা মুশকিল। কিমের এই হুমকি “গভীর উদ্বেগের” বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার যে কোনও উস্কানির মোকাবিলা করার জন্য তারা প্রস্তুত বলে জানিয়েছে সিওল।

উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যমের মতে কিম বুধবারের বক্তৃতায় বলেছেন, “আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যেকোনও সঙ্কটের সাড়া দিতে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। আর আমাদের দেশের পারমাণবিক যুদ্ধ প্রতিরোধকও অভিযান অনুযায়ী, সঠিকভাবে এবং দ্রুত নিরঙ্কুশ শক্তি সঞ্চালন করতে প্রস্তুত।” প্রসঙ্গত, প্রথম থেকেই উত্তর কোরিয়ায় পরমাণু অস্ত্র বিকাশের কারণ হিসেবে কিম জং উন পারমাণবিক যুদ্ধ প্রতিরোধ করার কথা বলেছেন।

শুধু পরমাণু হামলার হুমকিই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিম উত্তর কোরিয়াকে বদনাম করার অভিযোগও করেছেন। কিমের দাবি মার্কিন প্রচারেই বহির্বিশ্বে উত্তর কোরিয়া ‘পৈশাচিক’ দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতা করার অভিযোগ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আমেরিকা-দক্ষিণ কোরিয়া নিয়মিত সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার ‘রুটিন সামরিক কার্যকলাপ’কে তারা উস্কানি বা হুমকি বলে দাবি করে। রুটিন সামরিক কার্যকলাপ বলতে কিম উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কথাই উল্লেখ করেছেন বলে মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা।

কিম আরও অভিযোগ করেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার নয়া প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের নয়া সরকারের নেতৃত্বে রয়েছে “পাগল” এবং “গুন্ডা”রা। এই সরকার পূর্ববর্তী দক্ষিণ কোরিয় রক্ষণশীল সরকারগুলির থেকেও অনেক বেশি আগ্রাসী বলে দাবি করেছেন কিম। প্রসঙ্গত গত মে মাসেই দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন ইউন সুক ইওল। তারপর থেকে, গত কয়েক মাসে ইউন সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সিওলের সামরিক জোটকে শক্তিশালী করেছেন। পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয় বাহিনীর নিজস্ব ক্ষমতাও জোরদার করার লক্ষ্য নিয়েছেন।

কিম বলেছেন, তাঁর দেশের হাতে চরম অস্ত্র রয়েছে। তারপরও উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ করার কথা বলা অযৌক্তিক, অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং আত্মঘাতী পদক্ষেপ। এই ধরনের ‘বিপজ্জনক প্রচেষ্টা’ করা হলে অবিলম্বে ‘শাস্তি’ দেওয়া হবে এবং ইউন সুক ইওল সরকার এবং তার সামরিক বাহিনীকে ধ্বংস করা হবে বলে জানিয়েছেন কিম।

উত্তর কোরিয়ার একচ্ছত্র নেতার এই কড়া হুমকির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দক্ষিণ কোরিয় রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্কের ভিত্তিতে তারা জাতীয় নিরাপত্তা এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের জন্য উত্তর কোরিয়াকে তারা আলোচনায় টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে, উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান পরমাণু হুমকির প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলছে।