Kami Rita Sherpa: এভারেস্টই যেন তাঁর ঘরবাড়ি! ২৬ বার শৃঙ্গ জয় করে ইতিহাসে এই নেপালি শেরপা
Kami Rita Sherpa: ২৬তম বার এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করে ইতিহাস গড়লেন নেপালি শেরপা কামি রিটা শেরপা।
কাঠমাণ্ডু: নিজের রেকর্ডই ভেঙে নয়া বিশ্বরেকর্ড গড়লেন নেপালের প্রখ্যাত পর্বতারোহী কামি রিটা শেরপা। শনিবার সন্ধ্যায় তিনি ২৬তম বারের জন্য বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ, মাউন্ট এভারেস্ট জয় করলেন। প্রসঙ্গত, গত বছরই তিনি ২৫তম বারের মতো ৮,৮৪৮.৮৬ মিটার উচ্চতার এই শিখর জয় করেছিলেন। এবার নিজের রেকর্ডই ভেঙে ৫২ বছরের এই নেপালি পর্বতারোহী ইতিহাস গড়লেন।
শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা বেজে ৫৫ মিনিট নাগাদ কামি রিটা শেরপা শিখরে পৌঁছান। তাঁর সঙ্গে শিখর জয় করেন আরও ১০জন নেপালি পর্বতারোহী। তাঁরা হলেন সোনা শেরপা, এনগিমা তাশি শেরপা, ফুরবা সেরিং শেরপা, তেনজিং গয়ালজেন শেরপা, লাকপা তেনজি শেরপা, ফুরবা কুসাং শেরপা, মিংমা দন্ধু শেরপা, পাস্তেনজি শেরপা, তারেমান তামাং এবং ফুরবা ছোটার। দলটির নেতৃত্বে ছিলেন কামি রিটা শেরপাই। চিরাচরিত দক্ষিণ-পূর্ব রিজের পথ ধরেই শিখরে আরোহণ করেন তাঁরা।
১৯৯৪ সালের ১৩ মে, প্রথমবারের মতো এভারেস্ট চূড়ায় উঠেছিলেন কামি রিটা। তারপর থেকে এভারেস্টকে প্রায় নিজের ঘর-বাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন এই অভিজ্ঞ পর্বতারোহী। ১৯৯৪ থেকে ২০২২ – ২৮ বছরের মধ্যে কামি রিটা ২৬ বার এভারেস্ট আরোহণ করেছেন। এছাড়া এই সময়কালে একবার করে কে২ এবং লোটসে শৃঙ্গে, তিনবার মানাসলু শৃঙ্গে এবং আটবার চো ওয়ু শৃঙ্গ জয় করেছেন। শনিবার সন্ধ্যায় ইতিহাস গড়ার পর, তাঁর স্ত্রী জাঙ্গমু জানিয়েছেন, স্বামীর এই সাফল্যে তিনি অত্যন্ত খুশি। বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট প্রথম জয় করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের পর্বতারোহী এডমন্ড হিলারি এবং নেপালি শেরপা তেনজিং নোরগে। সেটা ছিল ১৯৫৩ সাল। তারপর থেকে এতদিনে ১০ হাজারেরও বেশিবার মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় পা রেখেছেন বিভিন্ন পর্বতারোহীরা। তার মধ্যে বেশ কয়েকজন এভারেস্টের মাথায় ফিরে গিয়েছেন বারংবার। তবে, কামি রিটা শেরপার মতো এতবার শিখর জয় করতে পারেননি কেউই।
প্রকৃত পক্ষে এভারেস্ট বিজয়ের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পর্বতারোহীরাই হিমালয়ের কোলে অবস্থিত ছোট্ট দেশটির বিদেশী মুদ্রার একমাত্র উৎস। তাই বর্তমানে প্রতি বছরই কয়েকশো পর্বতারোহীকে এভারেস্ট অভিযানে যাওয়ার অনুমতি দেয় কাঠমাণ্ডু। তবে, অভিযানের সংখ্যা যত বেড়েছে, ততই দূষিত হয়েছে এভারেস্ট। এই নিয়ে নেপাল সরকারকে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে। ২০২১ সালে ৪০৮ জনকে এভারেস্ট অভিযানের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, এবারে অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৩১৬ জনকে।
তাই বলে, এভারেস্ট অভিযান জলভাত হয়ে গিয়েছে, এমনটা ভাবা ভুল হবে। প্রথম সফল অভিযানের পর থেকে ৩১১ জন পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়েছে। বস্তুত, রবিবার সকালে নেপালের পর্যটন বিভাগের কর্মকর্তারা মাউন্ট এভারেস্টের প্রথম বেসক্যাম্পে পাভেল কোস্ট্রিকিন নামে এক রুশ পর্বতারোহীর মৃত্যুর সংবাদ দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, প্রায় ৬,৪০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত দ্বিতীয় বেসক্যাম্পেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁকে দ্রুত প্রথম বেসক্যাম্পে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মেঘলা আবহাওয়ার উন্নতি হলে তাঁর মরদেহ কাঠমান্ডুতে আনা হবে।