নিউ ইয়র্ক: ‘পৃথিবীতে নেই কোনো বিশুদ্ধ চাকরি’। ‘সৃষ্টির তীরে’ কবিতায় লিখেছিলেন জীবনানন্দ দাস। তবে তিনি তো আর রেবেকা ডিক্সন-কে চিনতেন না। অবশ্য তাঁকেই বা দোষ দেওয় যায় কী করে? বিশ্বের অধিকাংশ মানুষকে জিজ্ঞাসা করলেই তারা জানাবে, তার যে কাজটা করে, তা কত খারাপ। কত খাটতে হয়, কিন্তু সেই তুলনায় বেতন ভাল নয়, ইত্যাদি। বিশেষ করে, করোনা মহামারির পর তো চাকরি নিয়ে বিশ্বজুড়ে মানুষের অভাব অভিযোগ বেড়েছে। কিন্তু কাজটা যদি হয় সারাদিন ধরে পর্ণ ভিডিয়ো বা অশ্লীল ভিডিয়ো দেখা? আর যদি এমন ধারা কাজের জন্য মোটা টাকা পাওয়া যায়? এর থেকে সুখের চাকরি আর হয় নাকি? এরকমই স্বর্গীয় চাকরি জুটিয়ে এখন সংবাদ শিরোনামে ২২ বছরের স্কটিশ মেয়ে রেবেকা ডিক্সন।
নিউইয়র্ক পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘বেড-বাইবেল’ নামে এক অশ্লীল ভিডিয়োর ওয়েবসাইটে, সম্প্রতি পর্ণ রিসার্চ হেড বা পর্নগ্রাফি গবেষণা প্রধান পদে যোগ দিয়েছেন রেবেকা। ২২ বছরের মেয়েটিকে পর্ন ভিডিয়ো শুধু দেখলেই হয় না, তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা করতে হয়। তাঁর কাজ হল ওয়েবসাইটে কোন কোন ধরণের পর্ন ভিডিয়ো মানুষকে বেশি আকৃষ্ট করছে, তা খুঁজে বের করা। সেই সঙ্গে তাঁকে বেছে বেছে অশ্লীল ভিডিয়ো তৈরির ভালো আইডিয়া দিতে হয়। সেই আইডিয়া অনুযায়ী পর্ন ভিডিয়ো বানাবে সংস্থাটি। কাজেই, সংস্থার বাণিজ্যিক সাফল্যের পিছনে রেবেকার কাজের গুরুত্ব অপরিসীম। এর জন্য ঘন্টা প্রতি ১,৫০০ টাকা করে কামাচ্ছেন তিনি।
তবে, এই স্বর্গীয় সুখের চাকরি জোগার করাটা রেবেকার জন্য সহজ ছিলনা। নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেড-বাইবেলের পর্ণ রিসার্চ হেড পদে চাকরি পাওয়ার জন্য সারা বিশ্ব থেকে নব্বই হাজারেরও বেশি মানুষ আবেদন করেছিল। তাদের সকলকে হারিয়ে এই পদ জিতে নিয়েছে ২২ বছরের স্কটিশ মেয়েটি। বর্তমানে তিনি বেড-বাইবেল পর্ন সাইটে ১০০টি সর্বাধিক দেখা পর্ণ ভিডিয়ো নিয়ে গবেষণা করছেন। খুব ঘনিষ্ঠভাবে বারবার করে এই ১০০টি পর্ন ভিডিয়ো দেখছেন তিনি। কেন মানুষ সেগুলি এত পছন্দ করেছে, তা বোঝার চেষ্টা করছেন। ভিডিয়োগুলিতে যে নারী ও পুরুষ পর্ন তারকারা অভিনয় করেছেন, তাঁদের বিশদ তথ্য সংগ্রহ করছেন। পাশাপাশি, ভিডিওগুলিতে কোন কোন সেক্স পজিশন দেখানো হয়েছে তারও আনাদা ডেটাবেস তৈরি করছেন। এছাড়াও, পর্ন তারকাদের চুলের রঙ, ভাষা, সম্পর্কেও নোট তৈরি করতে হবে। সব তথ্য সংগ্রহের পর তাঁকে একটি রিপোর্ট তৈরি করে জমা দিতে হবে।
শুনতে খুব মজার হলেও, সারাদিন ধরে পর্নোগ্রাফি দেখাটা মানসিক দিক থেকে ক্লান্তিকর হতে পারে। মনের উপর চাপ তৈরি করতে পারে। তবে, রেবেকার মতে পর্ণ রিসার্চ হেডের চাকরিই হল বিশ্বের সেরা চাকরি। নিউইয়র্ক পোস্টকে তিনি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘এটা অবশ্যই একটা ভিন্ন ধরনের কাজ। আর পাঁচটা সাধারণ চাকরির মতো নয়। এই কাজের বিভিন্ন ধরণের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে, আমি সেই সবের জন্য প্রস্তুত। আমি খুবই মুক্ত মনের মেয়ে। নতুন কিছু করে দেখতে আমি সবসময়ই আগ্রহী। তা, সেই কাজ যেমনই হোক না কেন।’