Sri Lanka Crisis: প্রধানমন্ত্রীর পদে শপথ রনিল বিক্রমাসিংঘের, পাঁচ বারের প্রধানমন্ত্রীই ফের শ্রীলঙ্কার মসনদে

Sri Lanka Crisis: বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ করা হল, সেই দেশের অন্যতম বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ রনিল বিক্রমাসিংঘে-কে। এর আগে ৫ বার তিনি এই দায়িত্ব সামলেছেন।

Sri Lanka Crisis: প্রধানমন্ত্রীর পদে শপথ রনিল বিক্রমাসিংঘের, পাঁচ বারের প্রধানমন্ত্রীই ফের শ্রীলঙ্কার মসনদে
ষষ্ঠবারের জন্য ক্ষমতায় রনিল বিক্রমাসিংঘে
Follow Us:
| Updated on: May 12, 2022 | 9:11 PM

কলম্বো: ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং তীব্র রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে, বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন সেই দেশের অন্যতম বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ রনিল বিক্রমাসিংঘে। এর আগে ৫বার দ্বীপরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। এদিন এই ৭৩ বছরের এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি গোটবায়া রাজাপক্ষ। দু’দিন আগেই, মঙ্গলবার তীব্র জনরোষের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষ। তারপর থেকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার ফাঁকাই ছিল। অর্থনৈতিক সঙ্কটে তিতিবিরক্ত জনতা অবশ্য রাষ্ট্রপতি গোটবায়া রাজাপক্ষেরও ইস্তফা দাবি করেছিল। তবে, তিনি যে পদ ছাড়বেন না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। চলতি সপ্তাহেই নতুন প্রধানমন্ত্রী ও নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।

গত বছর দুয়েক ধরেই তীব্র আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। সম্প্রতি সেই সঙ্কট চরমে পৌঁছেছে। নজিরবিহীন মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ার প্রায় খালি, নেই ওষুধ, চিকিৎসা সংক্রান্ত সাজ-সরঞ্জাম, আকাশ-ছোঁয়া নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম – দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যেতেই বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ। চাপের মুখে গত সোমবার পদত্যাগ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষ। তারপর গোটা দেশে নৈরাজ্যের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে বুধবারই জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি গোটবায়া রাজাপক্ষ বলেছিলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই এমন একজন প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভা নিয়োগ করা হবে, যে সরকার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে এবং জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে’।

সূত্রের খবর, ওই ভাষণ দেওয়ার আগে এবং পরে দফায় দফায় রনিল বিক্রমাসিংঘের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন গোটবায়া রাজাপক্ষ। এই নিয়ে ষষ্ঠ বারের মতো শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব নিলেন বিক্রমাসিংঘে। তবে, মজার বিষয় হল, এর আগে পাঁচবার প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসলেও, কোনবারই তিনি সম্পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। এবার দ্বীপরাষ্ট্রের তীব্র অর্থনৈতিক মন্দার মোকাবিলা করার কঠিন চ্যালেঞ্জ তাঁর সামনে।

২০২০ সালের শ্রীলঙ্কা নির্বাচনে গোহারা হেরেছিল বিক্রমাসিংঘের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি বা ইউএনপি। ভোটের ঠিক আগে, বিক্রমাসিংঘের প্রাক্তন ডেপুটি সাজিথ প্রেমাদাসা দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তৈরি করেছিলেন নতুন দল সামাগী জন বালাওয়েগয়া। নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল রাজাপক্ষদের দল। বর্তমানে সংসদে বিক্রমাসিংঘেই ইউএনপি দলের একমাত্র সাংসদ। কাজেই সংসদে তাঁর সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন পাওয়া ক্ষমতাসীন দলের সমর্থনের উপরই নির্ভরশীল। শোনা যাচ্ছে ২২৫ আসনের শ্রীলঙ্কা সংসদে, বিক্রমাসিংঘে এক ঐক্যবদ্ধ সরকার চালাবেন। রাজাপক্ষর দলের পাশাপাশি এসজেবি দলেরও প্রায় জনা বারো সাংসদ তাঁকে সমর্থন করতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।

তবে, গোটবায়া রাজাপক্ষর এই পদক্ষেপে কতটা কাজ হবে, সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিক্রমাসিংঘে শপথ নেওয়ার আগেই, সেই দেশের বেশ কয়েকজন ধর্মীয় নেতা তাঁর ফের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তাঁদের দাবি, এই ভাবে শ্রীলঙ্কার চলতি সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। বরং এতে সঙ্কট আরও বেড়ে যেতে পারে, এমন শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তাঁরা।