‘গাজ়ায় হামলা চলবে, তবে হামাসের মতো নয়…’, কড়া বার্তা ইজরায়েলের

ইজরায়েলের আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম থাকার জন্য আকাশেই শেষ হয়ে যাচ্ছে গাজ়ার ছোড়া অধিকাংশ রকেট।

'গাজ়ায় হামলা চলবে, তবে হামাসের মতো নয়...', কড়া বার্তা ইজরায়েলের
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 16, 2021 | 11:20 AM

জেরুজালেম: এখনই বন্ধ হবে না ধ্বংসলীলা। গাজ়ায় লাগাতার হামলা করবে ইজরায়েল। এ কথাই সাফ বুঝিয়ে দিলেন ইজরায়েলের (Israel) প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। শনিবার তিনি জানান, যতদিন প্রয়োজন পড়বে ততদিন গাজ়ায় হামলা চালিয়ে যাবেন তারা। তবে যাতে সাধারণ মানুষের মৃত্যু না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবে ইজরায়েল।

নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা এখনও অভিযানের মাঝখানে রয়েছি। এটা চলবে। হামাস সাধারণ মানুষের পিছনে লুকিয়ে সাধারণ মানুষকে মারার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা সন্ত্রাসীদের মারার সময় সাধারণ মানুষের মৃত্যু যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করব।” সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে লাগাতার একে অপরের দিকে রকেট ছুড়েছে ইজরায়েল ও হামাস। রবিবারই গাজ়ায় হামাস প্রধানের বাড়িতে রকেট ছুড়েছে ইজরায়েল। লাগাতার এই হামলায় গাজ়ায় অন্তত ১৪৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। যার মধ্যে ৪১ জনই শিশু। ইজরায়েলেও ২ শিশু-সহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইজরায়েলের আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ থাকার জন্য আকাশেই শেষ হয়ে যাচ্ছে গাজ়ার ছোড়া অধিকাংশ রকেট। যার ফলে তুলনামূলক কম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেল আভিভ।

কোথায় সমস্যা ইজরায়েল ও হামাসের?

ইজরায়েল (Israel) ও প্যালেস্তাইনের বিবাদ দীর্ঘদিনের। বারবার স্বাধীন প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রের দাবি করে এসেছে প্যালেস্তাইনের কট্টরপন্থী সংগঠন হামাস। অন্যদিকে সেই প্রথম থেকে ইজরায়েলের দাবিটাও সাফ ছিল, তারা জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে চায়। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে। কিন্তু ২০১৪ সালের পর এই প্রথম এত পরিমাণে ধ্বংসলীলা দেখল গাজ়া ও তেল আভিভ। রাষ্ট্রসঙ্ঘ তড়িঘড়ি শান্তি স্থাপনের কথা বলেছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা, হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে বিবাদ অব্যাহতই।

Housing Building which hit by Israeli airstrikes,

ইজরায়েলের রকেট স্ট্রাইক

এ বারে সংঘর্ষের সূত্রপাত:

জেরুজালেম লাগোয়া শেখ জারাহ এলাকায় প্যালেস্তাইন পরিবারের উচ্ছেদ থেকে শুরু এ বারের ইজরায়েল-হামাস উত্তেজনা। ইজরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট একাধিক প্যালেস্তাইন পরিবারকে উচ্ছেদ করার নির্দেশ দিতে যাচ্ছে, এই আশঙ্কা থেকেই আল আকসা মসজিদে অবস্থান বিক্ষোভ করছিল প্যালাস্তাইনিরা। শুক্রবার বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে তৎপর হয় ইজরায়েলের পুলিশ। সোমবার তা চরম আকার ধারণ করে। রাবার বুলেট, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে ইজরায়েলের পুলিশ। যার ফলে আহত হন অন্তন ১ হাজারের বেশি প্যালেস্তাইনিরা। এরপরই মসজিদ থেকে ইজরায়েলকে পুলিশ প্রত্যাহারের হুঁশিয়ারি দেয় প্যালেস্তাইনের কট্টরপন্থী সংগঠন হামাস। তারপরেও ইজরায়েল পুলিশ প্রত্যাহার না করলে রকেট ছোড়ে হামাস।

সেই রকেটের পাল্টা দিতে গিয়ে দফায় দফায় বিমানে হামলা চালায় ইজরায়েল। ওই হামলায় ১০ শিশু-সহ অগণিত প্যালাস্তাইনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম মারফত। ইজরায়েলের বিমান হামলার পর হামাসের সামরিক শাখা তেল আভিভ লক্ষ্য করে রকেট ছোড়ে। হামাসের পাল্টা হামলায় ইজরায়েলের একাধিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। হামাসের হামলার পর ফের ১৩০টি রকেট ছোড়ে ইজরায়েল।

গোটা ঘটনায় বিশ্বের অন্যান্য দেশ স্রেফ শান্তি ফেরানোর বার্তা দিয়েছে। প্রত্যক্ষ ভাবে মধ্যস্থতা করার কোনও প্রস্তাব আসেনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইজরায়েলের নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছেন। ব্রিটেন ইজরায়েলের ওপর হামলার নিন্দা করেছে। রাশিয়া কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। জার্মানি দুই পক্ষের মধ্যে শান্তির আহ্বান করেছে।

আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে কটাক্ষ করে ভারতের পাশে ম্যাথু হেডেন