বীরভূমের গোড়া ব্রাহ্মণ পরিবারের ছেলে অভিনেতা খরাজ মুখোপাধ্যায়। ১৯৯৩ সালে বিয়ে করেছিলেন। বাড়িতে কখনও অব্রাহ্মণ বউ আসেনি। প্রেম করেও কেউ বিয়ে করেননি। সেই অসাধ্য সাধনটাই করেছিলেন কেবল খরাজই।
পরিবারে বাবা-জেঠারা পৌরহিত্য করতেন সকলে। সেই পরিবারের ছেলে হয়ে কলকাতার অব্রাহ্মণ মেয়ে প্রতিভা রায় স্বর্ণকারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছিলেন খরাজ। পরিবারের সকলের অমতে বিয়েও করেছিলেন তাঁকে।
তারপর যা ঘটে খরাজ ব্যক্ত করেছিলেন TV9 বাংলাকে। ব্রাহ্মণ মেয়েকে বিয়ে করার বিষয়টা কিছুতেই মানেননি খরাজের গ্রামের ব্রাহ্মণেরা। আর্তনাদ করে ওঠেন অভিনেতার বাবা।
বলেন, “আর কোনও মেয়ে পাওনি তুমি!” পুত্রবধূরে দূর-দূর করেছিলেন বাবা। কিন্তু মৃত্যুশয্য়ায় সেই অব্রাহ্মণ মেয়েটির হাতেই শেষ জলটুকু খেয়েছিলেন তিনি।
খরাজ TV9 বাংলাকে বলেছিলেন, “গোটা গ্রাম এবং বাবার অমতে আমি প্রতিভাবে বিয়ে করেছিলাম। গ্রামে ঢুকতেই পারিনি। সেই বিয়েতে অনুপস্থিত ছিলেন আমার বাবা।”
খরাজের স্ত্রীকে তাঁদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পিছনে অনুঘটকের কাজ করেছিলেন তাঁর বড়দা। মহাদেবের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয় স্ত্রীর। এটা করলে যে কোনও মেয়েই গোত্রহীন হন। তখন আর তাঁকে বিয়ে করতে বাধা থাকে না।
প্রতিভাকে বিয়ে করে প্রথমেই নিজের বাড়িতে তুলতে পারেননি খরাজ। বেহালায় তাঁর মামার বাড়ির পাশেই এক ভাড়াবাড়িতে উঠেছিলেন। পাতেন সংসার। কিন্তু স্ত্রীও নাছোড়।
বলে বসেন, শ্বশুরবাড়ির বড়দের আশীর্বাদ ছাড়া সংসার শুরু করতে পারবেন না। খরাজ তাঁকে সাবধান করেন, “না বাবু। বাড়ি যেও না। বাবা তোমাকে দূর-দূর করবেন। আমার সেটা দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে দেখতে ভাল লাগবে না।”
কিন্তু সে সব কিছুই হল না। খরাজকে সাদরে মেনে নিলেন খরাজের বাবা। প্রতিভা বাড়িতে গিয়ে বাবার ঘরে ঢুকলেন এবং কী সব বললেন তাঁকে। খরাজ গিয়ে দেখলেন, “দেখি প্রতিভা বাবার পা টিপছেন…”