দুর্গাপূজার অন্যতম বিশেষ আচার নবপত্রিকা স্নান। সপ্তমীর সকালে নদীতে কলাগাছকে স্নান করিয়ে প্রতিমার পাশে বসানো হয়। আরও স্পষ্ট করে বললে গণেশের পাশে।
সপ্তমীর সকাল
চলতি কথায় এই প্রথা কলাবউ স্নান নামে পরিচিত। যদিও অধিকাংশ মানুষই মনে করেন, কলাগাছটি নাকি আসলে গণেশের স্ত্রী। নেপথ্যে রয়েছে অন্য রহস্য। জানুন সেই কাহিনি।
কলাবউ স্নান
শাস্ত্র মতে কলাবউ আসলে নবপত্রিকার অংশ। নবপত্রিকা মানে নয়টি পবিত্র গাছের সমাহার। যা দেবী দুর্গার নয়টি শক্তির প্রতীক হিসেবে পূজিত। কলাগাছ সেই নয়টির মধ্যে প্রধান। কলার পাতায় পুরো নবপত্রিকাকে মুড়ে রাখা হয়। তাই কলাগাছটি সবার চোখে পড়ে।
কলাবউ কে?
শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা অনুযায়ী, কলাবউ আসলে দেবী দুর্গারই এক অঙ্গরূপ। তিনি উর্বরতা, সমৃদ্ধি ও অন্নদাত্রীর প্রতীক। তবুও বাংলার লোকবিশ্বাসে সহজভাবে বোঝাতে গিয়ে বলা হয়—দেবীর পরিবারের পূর্ণতা দিতে গণেশের বউ হিসাবে কলাবউকে বসানো হয়।
দেবীর অংশ
নিয়ম অনুসারে প্রতিমার ডান পাশে নবপত্রিকা থাকার কথা। আগে গ্রামেগঞ্জে সে ভাবেই রাখা হত। কিন্তু দৃষ্টিনন্দন না হওয়ায় নিয়ম মেনে দুর্গার ডান দিকে এবং গণেশের বাম দিকে রাখা হয় তাঁকে।
গণেশের স্ত্রী রূপে কলাবউ
নবপত্রিকা স্ত্রী রূপে পূজিতা, এদিকে পুরুষের বাম দিকে থাকায় সে বামা। অর্থাৎ, স্ত্রী। এই জায়গা থেকে কলাবউ য়ের নাম গণেশের বউ হয়েছে বলে ধারণা।
কলাবউ নাম
কথিত, গণেশ ভোজনরসিক, কলা তাঁর প্রিয় ফল। দুর্গাপূজার সময়ে মা দুর্গা গণেশকে খুশি রাখতে কলাগাছকে প্রতীকীভাবে তাঁর পত্নী করে দেন, যাতে ভোগে কলা ও কলাপত্র অবশ্যই যুক্ত হয়। এর থেকেই বিশ্বাস জন্ম নেয় যে, কলাবউ আসলে গণেশের গৃহলক্ষ্মী। যদীও বাস্তবে তা নয়।