তর্পণ করলেই হল না, মহালয়ায় পিতৃপুরুষকে সন্তুষ্ট করতে হলে মানতে হবে এই নিয়ম!
credit: Tv9
TV9 Bangla Desk
মহালয়ার ভোরে তর্পণ করা হিন্দু শাস্ত্রে এক বিশেষ আচার। পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে জল দান এই প্রথার শুরু। বিশ্বাস, মহালয়ার দিন ভোরে তর্পণ করলে পিতৃপুরুষ সন্তুষ্ট হন এবং তাঁদের আশীর্বাদে পরিবারের কল্যাণ ঘটে। এই আচার পালন করতে গেলে কিছু বিশেষ নিয়ম মেনে চলা জরুরি।
তর্পণ
মহালয়ার তর্পণ শুরু করার আগে সূর্যোদয়ের পূর্বে স্নান করা অপরিহার্য। শাস্ত্র মতে, পবিত্রতা ছাড়া তর্পণ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। স্নানের পর পরিষ্কার কাপড়, বিশেষ করে সাদা পোশাক পরে তর্পণের জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত।
ভোরবেলা পবিত্র স্নান
তর্পণ দেওয়ার সময় দক্ষিণ দিকেই মুখ করে বসতে হয়, কারণ দক্ষিণ দিককে “যমদিক” বলা হয় এবং এই দিকেই পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে জল অর্পণ করা হয়। অন্যদিকে মুখ করে তর্পণ করা শাস্ত্রবিরুদ্ধ।
দক্ষিণ দিকে মুখ করে বসা
তর্পণকালে হাতে কুশ এবং জলে মিশ্রিত কালো তিল রাখা উচিত। কুশকে শাস্ত্রে পবিত্রতা ও শক্তির প্রতীক ধরা হয়। কুশ ছাড়া তর্পণ করলে তা পূর্ণ ফল দেয় না।
কুশ ও কালো তিল
তর্পণের সময়ে তিন প্রজন্মের নাম উচ্চারণ করা হয়—পিতৃ, পিতামহ ও প্রপিতামহ। নাম উচ্চারণের মাধ্যমে পূর্বপুরুষদের আত্মাকে আহ্বান করা হয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে মাতৃকুলের পূর্বপুরুষদের নামও স্মরণ করা যায়।
পূর্বপুরুষের নাম স্মরণ
তর্পণের মূল উদ্দেশ্য শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ। তাই মনকে শান্ত ও স্থির রেখে, কোনো রাগ-দ্বেষ ছাড়া নিষ্ঠাভরে তর্পণ করা উচিত। বাহ্যিক নিয়ম যতই মানা হোক, আন্তরিক ভক্তি না থাকলে তর্পণ ফলপ্রসূ হয় না।
শুদ্ধ মন ও নিষ্ঠা
তর্পণের সময় হাতের আঙুল ফাঁক করে দক্ষিণ দিকের দিকে জল ঢালতে হয়। জলের সঙ্গে কালো তিল ও কুশ মিশিয়ে অর্পণ করলে তা অধিক ফলদায়ক হয়। শাস্ত্রে বলা আছে, এভাবে অর্পিত জল পূর্বপুরুষদের কাছে পৌঁছে যায়।
জল অর্পণের নিয়ম
মহালয়ার তর্পণ শেষে ওই দিন মাংস, মাছ বা মদ্যপান সম্পূর্ণ বর্জনীয়। পরিবারের সবার জন্য নিরামিষ ভোজন রাখা উচিত। এটি পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে পবিত্রতা বজায় রাখার অন্যতম শর্ত।
নিরামিষ ভোজন
তর্পণের সময় যজ্ঞোপবীত ধারণ করে মন্ত্রপাঠ করা শাস্ত্রে বিধান। মন্ত্র জানা না থাকলে পুরোহিতের সহযোগিতা নেওয়া উত্তম। মন্ত্রপাঠ ছাড়া তর্পণ অসম্পূর্ণ ধরা হয়।