‘কে পিকে? ওর থেকে রাজনীতি শিখতে হবে’, বিদ্রোহ শুরু তৃণমূলের অন্দরে
TV9 বাংলা ডিজিটাল: ‘কে পিকে?’ ভরা সভায় সওয়াল খোদ তৃণমূলের বিধায়কের। ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছিলই ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishore)-কে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে অসন্তোষ। কিন্তু মুর্শিদাবাদের বিধায়ক যে ভাবে প্রকাশ্যে পিকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন, তাতে শাসক দল যে বিড়ম্বনায়, এ নিয়ে সন্দেহ নেই। বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে ক্রমেই সরগরম হচ্ছে বঙ্গ রাজনীতির পট। […]
TV9 বাংলা ডিজিটাল: ‘কে পিকে?’ ভরা সভায় সওয়াল খোদ তৃণমূলের বিধায়কের। ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছিলই ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishore)-কে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে অসন্তোষ। কিন্তু মুর্শিদাবাদের বিধায়ক যে ভাবে প্রকাশ্যে পিকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন, তাতে শাসক দল যে বিড়ম্বনায়, এ নিয়ে সন্দেহ নেই।
বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে ক্রমেই সরগরম হচ্ছে বঙ্গ রাজনীতির পট। ইতিমধ্যেই রাজ্যের দ্বিতীয় শক্তি বিজেপি আদা জল খেয়ে নেমে পড়েছে ময়দানে। খুব সন্তর্পণে সাজাচ্ছে একের পর এক ঘুঁটি। ভিন রাজ্যের একাধিক নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলার। বিজেপি বলছে, দশের শক্তিই দলের শক্তি। তাই বাংলার বিধানসভা দখলে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে চাইছে তারা। বাম-কংগ্রেসও ইদানিং ফের বিভিন্ন ইস্যুতে সরব। বিহারে ঘুরে দাঁড়ানোটা আলাদা অক্সিজেন জুগিয়েছে বামকে। অন্যদিকে ভরাডুবি সত্ত্বেও বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তীদের পাশে পেয়ে কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান, মনোজ চক্রবর্তীরা আজকাল বেশ চনমনে। আর ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishore)-কে নিয়ে বিদ্রোহ বেড়েই চলেছে ঘাসফুল শিবিরে। এতদিন জেলা কিংবা বুথস্তরের নেতাদের মধ্যে এই ক্ষোভ ছিল। এখন ভরা সভায় পিকের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন দলের বিধায়করাও। প্রশ্ন তুলছেন, ‘কে পিকে?’। দলের একাধিক মন্ত্রীও পিকের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট। সপ্তাহখানেক আগে শুভেন্দু অধিকারী (Shubhendu Adhikary)-এর সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেও তাই সফল হননি তৃণমূলের ভোট কুশলী।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর ইস্য়ু নিয়ে কার দিকে ঝুঁকবেন বাইডেন, প্রশ্ন অনেক, উত্তরও বেশ জটিল
লোকসভা ভোটের পর থেকেই পিকের বিরুদ্ধে এক চোরা ‘বিদ্রোহ’ চলছে তৃণমূলের অন্দরে। পিকের রণকৌশল, দলের মন্ত্রী, বিধায়কদের জন্য বরাদ্দ করে দেওয়া ‘টাস্ক’ না-পসন্দ একাধিক নেতৃত্বের। শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা তো স্পষ্ট জানিয়েও দিয়েছিলেন, ‘দাদা রাজনীতিটা পিকের কাছ থেকে শিখবেন না। দাদা মাঠে নেমে রাজনীতি করা মানুষ।’ সূত্রের খবর, দলের সঙ্গে শুভেন্দুর ‘মন কষাকষি’র অন্যতম কারণও নাকি এই প্রশান্ত কিশোর। তাই সে ক্ষতি মেরামতের চেষ্টা পিকে নিজেই করেছিলেন। তবে তাঁর সঙ্গে কোনওরকম কথা বলতে চাননি শুভেন্দু।
তৃণমূল (Trinamool Congress) সূত্রে খবর, উল্টে ‘আগ বাড়িয়ে’ পিকের তৎপরতায় খানিক বিরক্তই হন পূর্ব মেদিনীপুরের এই নেতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে দলের এক শীর্ষনেতা এবং বর্ষীয়ান সাংসদকে মাঠে নামতে হয়। মঙ্গলবারও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসার কথা শুভেন্দুর। তবে ভোটের মুখে পিকের বিরোধিতায় তৃণমূলের একাধিক নেতা, বিধায়ক যেভাবে সরব হচ্ছেন তা চাপে রাখছে দলকে।
বহুকাল পরে এবার এক নিস্প্রভ দীপাবলী দেখে মন বিষণ্ণ হয়েছিল। তেমনই ভেবে বিস্মিত হয়ে যাই, যে দলের অভিধানে ‘সম্মান’ বলে…
Posted by Mihir Goswami on Monday, November 16, 2020
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ ভরা সভায় বলেছেন, “কে এই পিকে? আমাদের পিকের কাছে রাজনীতি শিখতে হবে? বাংলায় যদি তৃণমূলকে ভুগতে হয় তার একমাত্র দায় পিকের।” অন্যদিকে কোচবিহারের বিধায়ক মিহির গোস্বামী ফেসবুকে লিখেছেন, ”আমার দল আর আমার নেত্রীর হাতে নেই। মনে হচ্ছে কোনও কনট্র্যাক্টরকে দল হস্তান্তর করা হয়েছে। আইপ্যাকের মতো কর্পোরেট সংস্থা…তারা নির্দেশ দেবে, আর আমাদের মতো বর্ষীয়ান নেতাদের তা মেনে চলতে হবে! এর থেকে যন্ত্রণাদায়ক আর কী বা হতে পারে।” পিকের সংস্থা আইপ্যাক (IPAC) নিয়ে একইরকম অভিযোগ সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়ার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের ভিতর এই ক্ষোভের আগুন একুশের আগে দাবানল না হয়ে যায়!। এমনটা হলে তার পুরো সুবিধাটাই পাবে বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন, বিজেপি যেভাবে এগোচ্ছে তাতে তাদের আটকাতে ভোটের ময়দানে ভালই বেগ পেতে হবে তৃণমূলকে। তার মধ্যে তৃণমূলের অন্দরের কোলাহল অতিরিক্ত নম্বর যোগ করবে বিজেপির খাতায়।
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য পিকের বিরুদ্ধে অভিযোগকে খুব একটা আমল দিচ্ছে না। তাঁরা বলছেন, পিকের সংস্থা যে কর্মসূচি করাচ্ছে তা আসলে দলেরই কর্মসূচি। পিকের সংস্থা শুধু নজর রাখছে, ঠিকঠাক সকলে কর্মসূচি পালন করছেন কি না। তাছাড়া ভোট সংক্রান্ত বুদ্ধি তো অনেকের কাছ থেকেই নেওয়া হয়। সেদিক থেকে জাতীয় ক্ষেত্রে আইপ্যাকের রেকর্ডও ভাল। তা হলে অসুবিধা কোথায়?