গরমকালে তীব্র গরম আর ঘামের জেরে ত্বকের অবস্থা হয় বেহাল। ত্বকের জেল্লায় জল পড়ে যায় এই গরমেই। কাঠফাটা রোদের তাপে ও ঘামের কারণে শুধু মহিলাদেরই নয়, পুরুষের ত্বকও মারাত্মকভাবে ক্ষতি হয়। বহু পুরুষ মনে করেন, পুরুষদের ত্বকের যত্নের কোনও প্রয়োজন নেই। এমনটা যারা ভাবেন, তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। প্রত্যেক মানুষেরই ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল। সূর্যের তাপ ও অতিবেগুনি রশ্মির কারণে ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। সাধারণত পুরুষরা কাজের সূত্রে বাড়ির বাইরে বেশিক্ষণ থাকেন। গাড়ি নিয়ে বা দৌড়াদৌড়ি করেই সারাদিন কেটে যায়। সরাসরি সূর্যের তাপের সংস্পর্শে থেকে ত্বক পুড়ে কালো হয়ে যায়। ট্যানড হয়ে ত্বকের অবস্থা হয় বেহাল। গরমে পুরুষদের ত্বকের যত্নের জন্য বেশ কিছু জিনিস মেনে চললেই কেল্লাফতে। এই নিয়মগুলি মেনে চললে ঘরের বাইরে যতক্ষণ থাকুক না কেন, ত্বকে কখনও প্রভাব পড়বে না।
গরমে পুরুষদের কীভাবে ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত?
১. সমীক্ষা অনুসারে, মহিলাদের থেকে পুরুষরাই সবচেয়ে বেশি বাইরের থাকে। পুরুষ মহিলাদের চেয়ে বেশি ঘরের বাইরে থাকে। অনেকের আবার একমাত্র নেশা ও পেশাই হল ভ্রমণ। গরমে ত্বকের তাই বিশেষ যত্ন নিতে হয়। দিনে ২-৩বার জল জল দিয়ে মুখের ত্বক পরিষ্কার করা উচিত। ক্লিনজিং দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করলে ত্বকে থাকা ছিদ্রে জমে থাকা ধুলো-ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়। অতিরিক্ত তেলও বের হয়ে যায়। তবে মুখের ত্বক পরিষ্কার করার সময় কখনও খারযুক্ত সাবান ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত। তাতে ত্বক আরও শুষ্ক মনে হয়।
২. মহিলাদের মতো পুরুষদেরও টোনার লাগানো উচিত। পুরুষদের ত্বক টানটান ও মোটা, তাই টোনার ব্যবহার করা উচিত। টোনার ব্যবহার করলে ত্বকের ছিদ্র পরিষ্কার হয়। তবে টোনার ব্যবহার করার আগে ডার্মালজিস্টের পরামর্শ নিতে পারেন।
৩. যদি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করেন তাহলে অবশ্যইগরমে বা়ড়ির বাইরে বের হওয়ার আগে ব্যবহার করা উচিত। ত্বককে রাখে আর্দ্র। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক হয় না আর। বলিরেখা প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। চিকিত্সকের পরামর্শ মেনে ভাল মানের ও হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। তাতে ত্বকের অন্যান্য সমস্যা যেমন ব্রণ, শুষ্কতা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
৪. গরমকালে বাড়ির বাইরে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। শুধু মহিলারাই নয়, পুরুষদের ত্বকের জন্যও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। ত্বককে ট্যানড হওয়া থেকে রোধ করে। রোদে পুড়ে কালো ছোপ পড়ার প্রবণতাও তৈরি হয় না। ত্বকের ধরন অনুযায়ী সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা উচিত।
৫. চাইলে স্ক্রাবও ব্যবহার করতে পারেন। তাতে ত্বক ও ছিদ্রে লুকিয়ে থাকা বা জেদি ময়লা সহজেই পরিষ্কার হয়ে যায়। ছিদ্রের মুখ পরিষ্কার হয়ে যায়। স্ক্রাবিংয়ের মাধ্যমে ত্বকের মৃতকোষও দূর হয়। সপ্তাহে দুবার ডিপ এক্সফোলিয়েশনের জন্য স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকও খুব পরিষ্কার ও ঝকঝকে থাকবে।
৬. গ্রীষ্মকালে প্রতিদিন দাড়ি কামানোও এড়িয়ে চলা উচিত। এর কারণে ত্বক অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে ওঠে। দাড়ির আড়ালে ত্বক থাকে সুরক্ষিত। শেভিং করলে ত্বক থাকে পরিষ্কার। কারণ সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি সরাসরি ত্বকে পড়ে। ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে হালকা দাড়ি রাখাই ভালো। শেভ করার পরে, অবশ্যই আফটার শেভ ব্যবহার করুন। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য আফটার শেভিং ব্যবহার করা উচিত। সূর্যের রশ্মি থেকেও ত্বককে রক্ষা করে।