কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়
লিয়েন্ডার পেজ মানে হিসেব না মানা এক ‘তরুণ’। বয়সের বিরুদ্ধে যে কোনও মুহূর্তে স্ম্যাশ করতে পারেন। লিয়েন্ডার পেজ মানে বাঙালির আবেগ। লিয়েন্ডার পেজ মানে আজও, একই রকম ভাবে কলকাতার গর্ব। সোমবার সন্ধেয় সিসিএফসির লিয়েন্ডার আরও একবার মনে পড়িয়ে দিলেন এই কথাগুলোই। নানা রংয়ের যে এক্সক্লুসিভ লি ধরা দিলেন ‘tv9বাংলা’য়, তাই তুলে ধরলাম…
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও জৈব সুরক্ষা : খেলার দুনিয়া এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। সবাইকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। বায়ো বাবলের মধ্যে থেকে পারফর্ম করা অত্যন্ত কঠিন। রাফায়েল নাদাল, নোভাক জকোভিচ, নাওমি ওসাকাদের মতো স্টার প্লেয়ারদের সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে হচ্ছে। আমার বিশ্বাস এর মধ্যেও ওরা সেরাটা দেবে।
অলিম্পিক ও লিয়েন্ডার : ১১ মাস পর কোর্টে ফিরেছি। যে কারণে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে যাইনি। আমি যেখানেই খেলি না কেন, নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। ক্লাসটা তুলে ধরার চেষ্টা করি। আপাতত ফিটনেস নিয়ে কাজ করছি। এর পর ফরাসি ওপেন, অলিম্পিক সহ আরও অন্যান্য টুর্নামেন্টগুলো নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করে দেব।
কলকাতার প্রতি ভালোবাসা : এই শহরে আমার জন্ম। এই শহরই আমাকে বড় করেছে। এই শহরের সংস্কৃতি, আবেগ আমার মধ্যে আজও আছে, থাকবেও। আমার বাবা খেলতেন মোহনবাগানে, সিসিএফসিতে। এই শহরের ক্রীড়া সংস্কৃতিটাও আমার মধ্যে থেকে গিয়েছে।
ভারতীয় টেনিসের ভবিষ্যত্ : একটা প্রজন্ম থেকে আর একটা প্রজন্মে এগিয়ে যায় খেলা। টেনিসে টিম কালচারটা নেই। টেনিস ব্যক্তিগত একটা ইভেন্ট। আমি চাই, পরবর্তী প্রজন্ম থেকে এমন কেউ উঠে আসুক, যে গ্র্যান্ড স্লাম জিতবে। ভারতীয় টেনিসের স্বপ্নপূরণ করবে।
রজার ফেডেরার : গ্রেট অ্যাথলিট। ও জানে, কী ভাবে ফিরতে আসতে হয়। কেরিয়ারে এত সাফল্য এই কারণেই পেয়েছে। চোটের কারণে ও অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেলছে না। আমার বিশ্বাস ফেডেরার খুব তাড়াতাড়ি কোর্টে স্বমহিমায় ফিরবে। ক্লে কোর্টে ওকে দেখার জন্য মুখিয়ে আছি।
বায়োপিক : খুব তাড়াতাড়ি আবার সিনেমায় ফিরছি। এ বার একটা বায়োপিকের কাজ চলছে। সেটা আমার উপরেই। ১৯৭২ সালের মিউনিখ অলিম্পিকের ভারতীয় হকি টিমের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন আবার বাবা ভেস পেজ। ১৯৯৬ সালে আটলান্টা অলিম্পিকে আমার ব্রোঞ্জ পাওয়া। সেখান থেকে ধীরে ধীরে উঠে আসা। এই পুরো যাত্রাটা নিয়ে হবে সিনেমাটা।
রাহানেদের অস্ট্রেলিয়া জয় : একটা টিম ওই পরিমাণ চোট-আঘাত সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ার মতো একটা টিমকে ওদের ঘরের মাঠে গিয়ে হারিয়ে এল। কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। গাব্বায় তিন দশক অপরাজিত ছিল অজিরা। ক্যাপ্টেন রাহানে আর ওর টিম অবিশ্বাস্য পারফর্ম করল। আমি তো ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড সিরিজেও দারুণ কিছু দেখার অপেক্ষায় আছি।
রাজনীতি ও লিয়েন্ডার : মাইকেল মধুসূদনের বংশধর আমি। আমার পুরো পরিবার আজও দেশের প্রতি সমান দায়বদ্ধ। দেশের প্রতি টান একই রকম আছে। থাকবেও। পরবর্তী প্রজন্মকে তুলে আনার জন্য, যুব সমাজের জন্য যদি কোনও কাজ করতে পারি, আমি সব সময় রাজি আছি।
বড় ম্যাচ : আমার মা বাঙালি। বাবা পর্তুগিজ। আমার রক্তে আছে ফুটবল। মোহনবাগান আর ইস্টবেঙ্গল যে কারণে ছেলেবেলা থেকে বুঝি। বড় ম্যাচ মানে বিরাট ব্যাপার। আজও একই রকম রয়েছে ওই ম্যাচটা। ইলিশ মাছ না চিংড়ি মাছ, এটা নিয়েই তো বাঙালির লড়াই। আইএসএলের ফিরতি বড় ম্যাচটা তো দেখবই।
বর্ণবিদ্বেষ : খেলার মাঠ কঠিন একটা জায়গা। ওখানে সবচেয়ে বেশি যেটা জরুরি, মানসিক ভাবে নিজেকে যত বেশি সম্ভব কঠিন করে তোলা।