Iran and Israel War: ইজরায়েলে বৃষ্টির মতো ব্যালিস্টিক মিসাইল, কোন পথে পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি?

TV9 Bangla Digital | Edited By: সুপ্রিয় ঘোষ

Oct 02, 2024 | 11:32 PM

ডেভিড ও অ্যারো সেখানে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত আকাশসীমায় যে কোনও থ্রেটকে ধ্বংস করতে সক্ষম। ব্যালেস্টিক, ক্রুজ মিসাইল ছাড়ার সুপারসনিক ড্রোনকেও অকেজো করতে পারে। আয়রন ডোমের পাশাপাশি এই দুই অস্ত্রকে কাজে লাগিয়েই ইরানের হামলা রুখতে পেরেছে আইডিএফ।

মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা। পৌনে দু-ঘণ্টা একটানা ইজরায়েলের ৪টি শহরে মিসাইল হামলা। ইজরায়েলি সেনার দাবি, হামলা চালিয়েছে ইরান। মোট ১৮১টি মিসাইলের মধ্যে অন্তত ৬০-৭০টা ব্যালেস্টিক মিসাইল। শুধুমাত্র জেরুজালেম শহর লক্ষ্য করেই ৬০-এর বেশি মিসাইল হামলার চেষ্টা হয়েছিল। এছাড়াও সীমান্ত এলাকায় আইডিএফের ৩টে ঘাঁটিকে টার্গেট করেছিল ইরান। ইজরায়েলের দাবি মিসাইল হামলায় কোনও প্রাণহানি হয়নি। যদিও আন্তর্জাতিক মিডিয়া বলছে, অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কিছু বাড়ি-অফিস ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে। দুটোর যেটাই ঘটে থাকুক, এটা ঠিক যে সেই অর্থে ইজরায়েলের বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

ইরান যে হামলা চালাবে, সেটা ইজরায়েল জানত। আর তাই হামলা রোখার প্রস্তুতিও ছিল। প্রস্তুতি ছিল বলেই আকাশেই অধিকাংশ মিসাইল ধ্বংস করে দেয় আইডিএফ। ঝাঁকে ঝাঁকে ব্যালেস্টিক মিসাইলকে ইন্টারসেপ্ট করে ধ্বংস করা চাট্টিখানি কথা নয়। ইজরায়েল সফলভাবে সেই চ্যালেঞ্জ সামলেছে। এদিনও আইডিএফের মুখপাত্র বললেন, আয়রন ডোমের জন্যই এই সাফল্য। তবে সেটা পুরো সত্যি নয়। ইজরায়েলের নিজস্ব আয়রন ডোম মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম অবশ্যই নিজের কাজ করেছে। তবে আসল কাজটা করেছে ডেভিড স্লিং ও অ্যারো-টু এবং অ্যারো-থ্রি। এই ৩টে মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমই মঙ্গলবার রাতের রিয়েল হিরো। অত্যাধুনিক এই মিসাইল ডিফেন্সকে এতদিন হাতের গোপন তাসের মতোই লুকিয়ে রেখেছিল আইডিএফ। ইরানি হামলার আগাম খবরে এগুলোকে অ্যাকটিভেট করা হয়। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা হার্জের দাবি, আয়রন ডোম ৪ থেকে ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত আকাশসীমা কভার করতে পারে। ডেভিড ও অ্যারো সেখানে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত আকাশসীমায় যে কোনও থ্রেটকে ধ্বংস করতে সক্ষম। ব্যালেস্টিক, ক্রুজ মিসাইল ছাড়ার সুপারসনিক ড্রোনকেও অকেজো করতে পারে। আয়রন ডোমের পাশাপাশি এই দুই অস্ত্রকে কাজে লাগিয়েই ইরানের হামলা রুখতে পেরেছে আইডিএফ। তবে মিসাইল হামলা শুরুর পর পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা ইজরায়েল বা আমেরিকা কেউই বুঝে উঠতে পারেনি। সেই সময়ে অন্তত আধ ঘণ্টার জন্য হলেও পুরোদস্তুর যুদ্ধ বাধার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। ইরানি আক্রমণের আশঙ্কা থাকলেও খামেনেই যে বৃষ্টির মতো ব্যালেস্টিক মিসাইল হামলা চালাবেন, সেটা আঁচ করতে পারেনি ইজরায়েল ও আমেরিকা।

নিউইয়র্ক টাইমস দাবি করেছে, ইজরায়েল যুদ্ধে গেলে আমেরিকা কতটা ঝাঁপাবে, সেসব নিয়েও কথাবার্তা শুরু করে দিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। তবে সেই সম্ভাবনা এখন আর নেই, এমন নয়। কারণ, ইরানের মিসাইল হামলার পরে ইজরায়েল তো আর চুপ করে বসে থাকবে না। কাল রাতে আইডিএফের মুখপাত্রের পর আজ ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীও সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। ইজরায়েল কবে, কীভাবে ইরানকে জবাব দেয়, তার উপরই এখন নির্ভর করছে পশ্চিম এশিয়ার ভাগ্য। তবে তাদের তৈরি মিসাইল ডিফেন্স যেভাবে রেকর্ড নম্বর পেল, সেটা নেতানিয়াহু ও তাঁর সেনার কাছে বড় স্বস্তি। ঠিক এক বছর আগে এই অক্টোবরেই হামাসের মিসাইল বৃষ্টির সামনে অকেজো হয়ে যায় ইজরায়েলের বহু-বিখ্যাত আয়রন ডোম। হামাসের মিসাইলই যেখানে আটকানো গেল না, সেখানে ইরান হামলা চালালে কী হবে? প্রশ্ন ওঠায় ইজরায়েলের প্রয়োজন ছিল নতুন একটা বিকল্প। মঙ্গলবারের রাত বুঝিয়ে দিল, সেই বিকল্প তাদের হাতে এসে গেছে।