‘লভ জেহাদ’-এর বিরুদ্ধে অধ্যাদেশ আনছেন যোগীও, বিরোধীরা বলল, বিভেদ তৈরির চেষ্টা
মধ্য প্রদেশ ও হরিয়ানার পর এবার উত্তর প্রদেশ সরকারও 'লভ জেহাদ'-এর বিরুদ্ধে অধ্যাদেশ আনার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে, বিরোধীদের দাবি, এহেন পদক্ষেপ আসলে ধর্মীয় বিভেদ ও মেরুকরণকে প্রশ্রয় দেওয়ার উদ্দেশেই
TV9 বাংলা ডিজিটাল: চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসেই কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government) সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, ‘লভ জেহাদ’ (Love jihad) বলে কিছুই নেই। তবে কেন্দ্রের সেই কথার তোয়াক্কা না করেই একের পর এক বিজেপি শাসিত রাজ্য ‘লভ জেহাদ’-এর বিরুদ্ধে আইন আনার পথে হাঁটছে। মধ্য প্রদেশ ও হরিয়ানার পর এবার উত্তর প্রদেশ সরকারও (UP Government) এর বিরুদ্ধে অধ্যাদেশ (Ordinance) আনার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। খোদ কেন্দ্রীয় সরকার ‘সাফাই’ দেওয়ার পরও একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যের এহেন পদক্ষেপ আসলে ধর্মীয় বিভেদ ও মেরুকরণকে প্রশ্রয় দেওয়ার উদ্দেশেই নেওয়া হয়েছে বলে দাবি একাধিক বিরোধী রাজ্যের।
শুক্রবার সন্ধেয় যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) স্বরাষ্ট্র দফতর আইন বিভাগকে একটি প্রস্তাবনা (Love jihad law) পাঠিয়েছে এই নিয়ে। যেখানে কেবল ‘ধর্ম পরিবর্তনের জন্য করা বিয়ে’কে বাতিল ঘোষণা করার কথা বলা হয়েছে। পাঁচটি অবিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তর প্রদেশ সরকারের এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করে দেশে বিভাজন তৈরির জন্যই বিজেপি লভ জেহাদ নামক শব্দের আমদানি করেছে। বিয়ে সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়। এবং কোনও আইন এনে সেই স্বাধীনতা খর্ব করা পুরোপুরি অসাংবিধানিক। কোনও আদালতে এই আইন ধোপে টিকবে না।’
একই সুরে কথা বলেছেন ছত্তীসগঢ়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বরিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা টিএস সিং দেও। ‘লভ জেহাদ আসলে মিডিয়া প্রপাগান্ডার মাধ্যমে বিজেপি দ্বারা তৈরি করা একটি সম্পূর্ণ ধর্মান্ধদের শব্দ’, বলেন তিনি। একই বিষয়ে কেরলের সিপিএম শাখার সম্পাদক বিজয়রাঘবনের মত, ‘সমাজ ও সাংবিধান; বিয়ের ক্ষেত্রে দু’টোই প্রাপ্তবয়স্কদের পছন্দকে সম্মতি দিয়ে এসেছে। কিন্তু ভারতের সেই একতাকে ভাঙতে যা যা করা যায় ওরা (বিজেপি) করছে।’ পশ্চিমবঙ্গের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ব্যাখ্যা, ‘ভালবাসা ব্যক্তিগত বিষয়। জেহাদ শব্দটি এর সঙ্গে যায় না।’
আরও পড়ুন: তিহার জেলে এখন কেমন আছেন উমর খালিদ? আদালতকে জানালেন মনের কথা
একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যের এই পদক্ষেপের সমালোচনা শোনা গিয়েছে পঞ্জাব ও দিল্লির শাসকদলের নেতাদের মুখেও। সবমিলিয়ে, সিএএ ও এনআরসি নিয়ে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে ঠিক যেভাবে দেশ আড়াআড়ি দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। ‘লভ জেহাদ’-এর ইস্যুও ফের একই ধরনের বিভেদের দেওয়াল তুলে দিচ্ছে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে।