উত্তর ২৪ পরগনা: টিনের চালের একটা ঝুপড়ি দোকান। ভিতরে চৌকি রাখা। পাশে কয়েকটা ড্রাম। দড়িতে টাঙানো জামা। টিনের ঘরটার সামনে পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। আর তার পাশে পুকুর। সাতসকালে সেখানেই একটা বিকট শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শব্দের উৎস সন্ধানে স্থানীয় বাসিন্দারা সেই এলাকায় গিয়ে দেখেন ডান হাতটা চেপে ধরে এক ব্যক্তি কাতরাচ্ছেন। হাতের সামনের অংশ খুবলে হাড় বেরিয়ে গিয়েছে। স্থানীয়রাই খবর দেন থানায়। তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুরভোটের আগেই বোমা বাঁধতে গিয়ে বনগাঁয় আহত ব্যক্তি। রাত পোহালেই ১০৮ পুরসভার ভোট। পুরভোটের আগে অশান্ত বনগাঁ। বোমা বাঁধতে গিয়ে ফেটে গুরুতর জখম এক জন। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ শিমুলতলা আয়রনগেট ক্লাবের মাঠ সংলগ্ন এলাকায়। আহতকে উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যে ব্যক্তি বোমা বাঁধছিলেন, তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা নন বলে জানা গিয়েছে।
হাসপাতালের বেডে শুয়েই ওই ব্যক্তি অত্যন্ত সাবলীল ভাবে ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন তাঁর নাম বিদ্যুৎ নাগ। তিনি ইছাপুরের বাসিন্দা। তাঁকে বনগাঁতে নিয়ে এসেছেন অজিত অধিকারী। তিনি যে ঘরটিতে বসেছিলেন, সেখানে অজিতই তাঁকে নিয়ে এসেছিল। ওই ঘরে বসেই তিনি বোমা বাঁধছিলেন বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ঘরটা আগে থেকেই দেখে নিয়েছিলেন অজিত। আমি বলেছিলাম, ভালো করে জায়গা দেখে নেওয়া জন্য। আমাকে যেখানে থেকে পুলিশ উদ্ধার করে, সেখানেই বসে বোমা বাঁধছিলাম।”
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির হাতের সামনের অংশ কার্যত উড়ে গিয়েছে। পুরভোটের আগে এই ধরনের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। তবে প্রশ্ন অজিত অধিকারী কে? কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য তিনি? পুলিশ আহত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
রাত পোহালেই পুরভোট। তার আগে বনগাঁর একাধিক অশান্তির খবর আসছে। শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বনগাঁর বিভিন্ন এলাকা। একাধিক বিক্ষিপ্ত অশান্তি, বোমাবাজির খবর আসছে। প্রশাসনের তরফ থেকে বনগাঁর বিভিন্ন এলাকায় রুট মার্চ করা হয় শুক্রবার সন্ধ্যাতেই । রবিবার সকালে ফের এই ঘটনায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
তবে শাসকদলের বক্তব্য, এর পিছনে বিরোধীদের চক্রান্তই রয়েছে। বিরোধীরাই বহিরাগতদের নিয়ে এসে এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। পুলিশকে এই ব্যাপারে আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে।
আরও পড়ুন: জেলায় জেলায় পাঠানো হল নির্দেশিকা, নির্বাচনের একদিন আগে ঘাসফুল কর্মীদের কী বার্তা দিল নেতৃত্ব?