
নয়া দিল্লি: বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর ওপর প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে। নাগরাকাটায় বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বিজেপি সাংসদ-বিধায়ক আক্রান্ত হওয়ায় ঘটনায় এবার সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করেন বিজেপির মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, “কেবলমাত্র ফটোশুট, ভিডিয়ো শুট করতেই গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।”
শেহজাদ বলেন, “আমাদের আধিবাসী সম্প্রদায়ের সাংসদ খগেন মুর্মুকে ঘৃণ্যভাবে মারা হয়েছে। ওনার ওপর প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে। ওনার পরিস্থিতি এতটাই আশঙ্কাজনক, চোখটা নষ্ট হতে বসেছিল। কোনওভাবে রক্ষা করা গিয়েছে। ICU তে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর এক্স রে রিপোর্টে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে, মুখে চোখের নীচের হাড় ভেঙে গিয়েছে।”
বর্তমানে শিলিগুড়ি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খগেন। ওষুধের ও বিশ্রামের মাধ্যমে আপাতত তাঁর চোখের নীচের হাড় জোড়ার চেষ্টা চলছে। চার সপ্তাহ তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। যদি তাতে উন্নতি না হয়, তাহলে অপারেশন করে পাত বসানো হতে পারে। সেক্ষেত্রে দিল্লির এইমসেও নিয়ে যাওয়ার হতে পারে খগেনকে। ইতিমধ্যেই তাঁর মুখে সাতটা সেলাই পড়েছে। মঙ্গলবারই শিলিগুড়ি বেসরকারি হাসপাতালে খগেন মুর্মুকে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বেরিয়ে এসে বলেছিলেন, “কথা হয়েছে, অবস্থা স্থিতিশীল, কানের পিছনের নীচে একটু লেগেছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে বিঁধেই শেহজাদ বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওখানে লোক দেখাতে ফটোশুট করতে গিয়েছিলেন। এক মিনিটের কম সময় থাকেন। আর বাইরে বেরিয়ে এসেই ভিডিয়ো শুট করে বলেন, কেবল কানের নীচে একটু চোট লেগেছে। চোখের নীচের কয়েক সেন্টিমিটার দূরত্বেই হাড় ভেঙেছে, চোখটা নষ্ট হয়ে যেতে পারত।”
পুরো হামলার নেপথ্যে তৃণমূল জড়িত বলে আরও একবার অভিযোগ করেন তিনি।শেহজাদ বলেন, “একজন বর্ষীয়ান আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতা। শঙ্কর ঘোষের ওপর হামলা হয়েছে। শঙ্কর ঘোষও বলেছেন, কীভাবে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে পরিকল্পিত হামলা ছিল। উত্তরবঙ্গে বিপর্যস্ত মানুষের পাশে যাঁরা দাঁড়াতে গিয়েছিলেন, তাঁদের ওপর হামলা হল। কাল দুপুরেও বিধায়ক মনোজ কুমার ওঁরাওয়ের ওপর হামলা হয়েছে। তিনিও আদিবাসী নেতা। কেন্দ্রীয় জওয়ানরাও রক্ষা পাননি। এটা তালিবানি কালচার।”
উল্লেখ্য, ঠিক এই বিষয়টিই মঙ্গলবার দাবি করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তিনি এই ঘটনায় NIA তদন্ত দাবি করেন। একই দাবি করেন শুভেন্দু অধিকারীও। এই হামলার পিছনে রোহিঙ্গা, বাংলাদেশিরা জড়িত বলে অভিযোগ বিজেপি নেতৃত্বে। তবে উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বিজেপির তরফে। কিন্তু ঘটনার পর ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও, এখনও পর্যন্ত এক জনকেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।