Supreme Court: ‘নিজের বেতন থেকে ক্ষতিপূরণ দেবেন’, বুলডোজার জাস্টিস নিয়ে ‘সুপ্রিম’ তিরস্কার

SC on Bulldozer Justice: এ দিন সুপ্রিম কোর্টের তরফে বাড়ি ভাঙা নিয়ে কড়া নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, "আগাম শোকজ নোটিস ছাড়া কোনও বাড়ি ভাঙা যাবে না। নোটিস দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট পুরসভার আইন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট সময়ের পরে বা অন্তত ১৫ দিন পর বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে হবে।"

Supreme Court: 'নিজের বেতন থেকে ক্ষতিপূরণ দেবেন', বুলডোজার জাস্টিস নিয়ে 'সুপ্রিম' তিরস্কার
বুলডোজার অ্যাকশন নিয়ে তুলোধনা সুপ্রিম কোর্টের।Image Credit source: TV9 বাংলা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 13, 2024 | 12:31 PM

নয়া দিল্লি: উত্তর প্রদেশ-সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বড় ধাক্কা। ‘বুলডোজার জাস্টিস’ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচার ছাড়া কোন অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত বেআইনি এবং সংবিধান বিরোধী বলে জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত।

এ দিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গভাই বলেন, “সরকার বা প্রশাসন কখনও বিচার ব্যবস্থার ভূমিকা নিতে পারে না। প্রশাসন কখনই একজন ব্যক্তিকে দোষী ঘোষণা করতে পারে না। যদি শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে কারও বাড়ি ভাঙ্গা হয়, তাহলে আইনের শাসন প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়। প্রশাসন কখনই বিচারকের ভূমিকা নিয়ে একজন অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।”

বুলডোজার জাস্টিসকে কার্যত তুলোধনা করে সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়, “সংবিধানের ১৯ ধারা অনুযায়ী বাসস্থানের অধিকারও মৌলিক অধিকার। যে সরকারি আধিকারিকরা আইন নিজের হাতে নিয়ে এ ধরনের কাজ করছে তাদের আইনের কাঠগড়ায় আনতে হবে।”

কোনও অপরাধী বা অভিযুক্তের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়ার যুক্তি নিয়েই প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্ট এ দিন বলে, “যে প্রশ্নটি বিবেচনা করা উচিত, তা হল যদি কোনও পরিবারের একজন মানুষ অপরাধ করে, তাহলে সেই পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা, যারা অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত নয়, তাদের বাসস্থান শুধুমাত্র একজনের জন্য প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত নিতে পারে কি? সংবিধান কখনওই এ বিষয়ে মান্যতা দেয় না।রাতের অন্ধকারে মহিলা শিশুদের বাড়ি থেকে টেনে বের করে দেওয়া হচ্ছে এই দৃশ্য কখনই কাম্য নয়।”

এ দিন সুপ্রিম কোর্টের তরফে বাড়ি ভাঙা নিয়ে কড়া নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, “আগাম শোকজ নোটিস ছাড়া কোনও বাড়ি ভাঙা যাবে না। নোটিস দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট পুরসভার আইন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট সময়ের পরে বা অন্তত ১৫ দিন পর বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে হবে। রেজিস্টার্ড পোষ্টের মাধ্যমে নোটিস পাঠাতে হবে। বেআইনি নির্মাণের বাইরে সেই নোটিস আটকাতে হবে। নোটিসে কি ধরনের বেআইনি নির্মাণ হয়েছে, কেন নির্মাণ ভাঙা হবে, তাও স্পষ্ট ভাবে জানাতে হবে।”

শীর্ষ আদালত নির্দেশে আরও বলে, “যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে তার ব্যক্তিগত শুনানির সুযোগ দিতে হবে। এই শুনানি বা মিটিং এর সব মিনিটস রেকর্ড রাখতে হবে। কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত নির্দেশে অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্য উল্লেখ করতে হবে। ডেমোলিশন  বা নির্মাণ ভাঙার গোটা প্রক্রিয়া ভিডিওগ্রাফ করতে হবে এবং অনলাইন ডিজি পোর্টালে ৩ মাসের মধ্যে সেই ডেমলিশনের রিপোর্ট আপলোড করতে হবে।”

যদি এই নির্দেশ মানা না হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা শুরু হবে  বলেও জানায় সুপ্রিম কোর্ট। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককেই যার বাড়ি অন্যায়ভাবে ভাঙ্গা হচ্ছে, তার যাবতীয় খরচ মেটাতে হবে।