মুম্বই: দিল্লির বুকে কেদারনাথ মন্দির নির্মাণ নিয়ে তৈরি হল বিতর্ক। দিল্লিতে এই মন্দির তৈরির তীব্র বিরোধিতা করলেন জ্যোতির্মঠের শঙ্করাচার্য, স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ। প্রসঙ্গত, ১০ জুলাই, উত্তর-পশ্চিম দিল্লির বুরারির কাছে হিরাঙ্কি পাড়ায় এই মন্দিরের ভূমি পূজায় অংশ নিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। ওইদিন সেখানে একটি নতুন কেদারনাথ মন্দির নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু, এর তীব্র বিরোধিতা করে স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ কেদারনাথ ধামের মন্দিরের গর্ভগৃহে সোনার প্রলেপ লাগানোর কাজে কেলেঙ্কারির কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। সেই কেলেঙ্কারির তদন্ত দাবি করেছেন। শঙ্করাচার্য বলেছেন, “কেদারনাথ মন্দির থেকে ২২৮ কেজি সোনা চুরি গিয়েছে, এর হিসেব কে দেবে?”
বর্তমানে মুম্বইয়ে আছেন স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ। অনন্ত অম্বানি এবং তাঁর স্ত্রী রাধিকা মার্চেন্টের ‘শুভ আশির্বাদ’ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মুম্বইয়ে এসেছেন তিনি। সোমবার (১৫ জুলাই), তিনি বলেছেন, “কেদারনাথ মন্দির দিল্লিতে তৈরি করা যায় না। ১২টি সংজ্ঞায়িত জ্যোতির্লিঙ্গ রয়েছে। এগুলির অবস্থান ঠিক করা আছে। এটা ভুল হচ্ছে। কেদারনাথে ২২৮ কেজি সোনা নিয়ে কেলেঙ্কারি হয়েছে। কেউ এটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। এখনও কোনও তদন্ত শুরু হয়নি। এর জন্য দায়ী কে? এখন বলছে দিল্লিতে কেদারনাথ তৈরি করবে। এটা হতে পারে না। সেখানে কেলেঙ্কারি করার পর দিল্লিতে কেদারনাথ মন্দির তৈরি করা হচ্ছে। এরপর, এখানে আরেকটি কেলেঙ্কারি হবে।”
#WATCH | Mumbai: On Kedarnath Temple to be built in Delhi, Shankaracharya of Jyotirmath, Swami Avimukteshwaranand alleges, “There cannot be a symbolic Kedarnath… 12 Jyotirlingas have been mentioned in the Shiv Puran with name and location… When the address for Kedarnath is in… pic.twitter.com/ZnvCNtztrO
— ANI (@ANI) July 15, 2024
প্রসঙ্গত, চার ধামের চার পবিত্র হিন্দু মন্দিরের অন্যতম হল কেদারনাথ। এছাড়া বাকি তিনটি ধাম হল, বদ্রীনাথ, গঙ্গোত্রী এবং যমনোত্রী। গত বছর, কেদারনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহে সোনার প্রলেপ দেওয়ার কাজ চলছিল। সেই কাজে ১২৫ কোটি টাকার বড়-সড় কেলেঙ্কারি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন কেদারনাথ মন্দিরের এক বরিষ্ঠ পুরোহিত। তিনি দাবি করেছিলেন, সোনার বদলে পিতলের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। তবে, মন্দির কমিটি তাঁর এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছিল। এদিন জ্যোতির্মঠের শঙ্করাচার্য, সেই ঘটনারই তদন্তের দাবি করলেন। এর আগে নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই অযোধ্যার রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করারও বিরোধিতা করেছিলেন স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ।
স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ একাই নন, দিল্লিতে নতুন কেদারনাথ মন্দির তৈরি নিয়ে বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে রুদ্রপ্রয়াগ জেলার মূল কেদারনাথ মন্দিরেই। রবিবারই, কেদারনাথে দিল্লির মন্দিরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখান কেদারনাথ মন্দিরের পুরোহিতরা। ‘কেদার সভা’র ব্যানারে, উত্তরাখণ্ড রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন তাঁরা। কেদার সভার মুখপাত্র, পঙ্কজ শুক্লা বলেন, “আমরা মন্দির নির্মাণের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু, দিল্লির এক ধর্মীয় ট্রাস্ট সেখানে যে কেদারনাথ মন্দির নির্মাণ করতে চাইছে, আমরা তার বিরোধিতা করছি। এমনকি কেদারনাথ ধাম এলাকা থেকে যদি একটি পাথরও সরানো হয়, কেদারনাথ ধামের ধর্মীয় পবিত্রতা ক্ষুণ্ণ হবে।”