নয়া দিল্লি: ভারতে কি এখন অধ্যাপকের চাকরি করার থেকে সবজি বিক্রি করে বেশি আয় করা যায়? প্রশ্ন তুলে দিলেন পঞ্জাবের ড. সন্দীপ সিং। পঞ্জাবি ভাষা, সাংবাদিকতা এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মতো চারটি ভিন্ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আছে তাঁর। তার উপর, তাঁর আইন বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রিও আছে। এখনও পড়াশোনা করে যাচ্ছেন তিনি। তবে, এত উচ্চ শিক্ষিত হয়েও, কোট-টাই পরে কোনও বড় অফিসে চাকরি করা বা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার বদলে, তিনি ভ্যানে করে পঞ্জাবের রাস্তায় সবজি বিক্রি করছেন। সবজির ভ্যানের গায়ে গর্বের সঙ্গে লিখেছেন, ‘পিএইচডি সবজি ওয়ালা’।
চিরকাল অবশ্য তিনি সবজি বিক্রি করতেন না। এর আগে ১১ বছর ধরে, তিনি পাতিয়ালার পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে অধ্যাপনা করতেন। তবে, ১১ বছরেও স্থায়ী হয়ে উঠতে পারেননি। অধ্যাপনার চাকরি ছিল চুক্তিভিত্তিক। তার উপর, ঘন ঘন বেতন কমানো হত। নিয়মিত বেতন পেতেনও না। এই অবস্থায় অধ্যাপনার চাকরি দিয়ে সংসার চালানো ক্রমে চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছিল সন্দীপ সিং-এর জন্য। আর তাই, ৩৯ বছর বয়সে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তাকে সঙ্গী করেই, তিনি তাঁর অধ্যাপনার চাকরি ছেড়ে দিয়ে সবজি বিক্রি করা শুরু করতে বাধ্য হয়েছেন।
ক্লাসরুম থেকে রাস্তায় নেমে সবজি বিক্রি করাটা অবশ্যই তাঁর জন্য চ্যালেঞ্জের ছিল। তবে, ধীারে ধীারে সবজি বিক্রেতা হিসেবে তাঁর রোজগার বেড়েছে। সন্দীপ জানিয়েছেন, বর্তমানে অধ্যাপক হিসাবে তিনি যা আয় করতেন, শাকসবজি বিক্রি করে তার থেকে অনেকটাই বেশি আয় করছেন তিনি। শুধু তাই নয়, অধ্যাপনার চাকরি করে তাঁর আর নিজের পড়াশোনা করার সময় থাকত না। এখন তিনি দিনভর সবজি বিক্রি করার পর, রাতে পড়াশোনাও করতে পারছেন। আসন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না।
তবে, এখন সবজি বিক্রি করলেও, ভবিষ্যতে শিক্ষকতা করার স্বপ্ন ছাড়েননি ড. সন্দীপ সিং। ভবিষ্যতে তিনি নিজের একটি টিউশন সেন্টার প্রতিষ্ঠার করতে চান। তার জন্য টাকা জমাচ্ছেন। তিনি এখনও বিশ্বাস করেন, শিক্ষাই মানুষের ক্ষমতায়নের চাবিকাঠি। তাই, তিনি শিক্ষাদানের মাধ্যমে অন্যদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে চান। আর তার জন্য কয়েকদিন সবজি বিক্রি করতেও অসুবিধা নেই।