নয়া দিল্লি: প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই কোনও মতে ইউক্রেন থেকে দেশে ফিরেছেন ভারতীয় পড়ুয়ারা। তবে পড়াশোনার জন্য যে দেশে গিয়েছিলেন, কঠিন পরিস্থিতিতে সেই দেশ ছেড়ে আসার সময় অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখদায়ক হল না অনেক ভারতীয় পড়ুয়ারই। দেশের মাটিতে পা রাখার পর অধিকাংশ পড়ুয়ার অভিযোগ, পোল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছতেই বাধা দেয় ইউক্রেনীয় সীমান্তরক্ষীরা। উদ্ধারকারী বিমান ধরার জন্য়ই তারা সীমান্ত পার করছেন, এই কথা জানানোর পরও অনেককে সীমান্ত পার করতে দেননি। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ইউক্রেন-পোল্যান্ড সীমান্তে আটকে থাকা পড়ুয়াদের হেনস্থার শিকার হতে দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতিই সামনে এসেছে এমনই একটি ভিডিয়ো, যেখানে দেখা যাচ্ছে এক পড়ুয়া সুটকেস টেনে আনছেন। আচমকাই পিছন থেকে এক ইউক্রেনীয় সেনা এসে সুটকেসে লাথি মারেন। ওই পড়ুয়া ভারতীয়ই ছিলেন কিনা, সে সম্পর্কে জানা না গেলেও, ওই সীমান্তে আটকে থাকা বহু পড়ুয়াই অভিযোগ করেছেন যে ভারতীয়দের নিত্যদিন হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে।
এনডিটিভিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মানসী চৌধুরী নামক ইউক্রেনে আটকে থাকা এক পড়ুয়া বলেন, “প্রতিদিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এরা আমাদের উপর অত্যাচার করছে। ভারতীয় পড়ুয়াদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। ইউক্রেনের সেনারা আমাদের সীমান্ত পার করে পোল্যান্ডে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। প্রত্যেকটি মহিলা পড়ুয়াকে হেনস্থা করা হচ্ছে, আমাদের চুল ধরে টানা হচ্ছে, রড দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে। বেশকিছু মহিলার গুরুতর আঘাত, এমনকি হাত বা পা ভেঙেও গিয়েছে।”
"Government has helped us a lot. All possible support was provided by the Indian Embassy. The main problem is crossing the border. I hope all Indians are brought back. There are several more Indians still stranded in Ukraine," said the students who arrived to Delhi from Ukraine pic.twitter.com/UU5zRseUcx
— ANI (@ANI) February 28, 2022
ওই ছাত্রী আরও যোগ করে বলেন, “ভারতীয় দূতাবাসের প্রতিনিধিরা আমাদের খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করছেন। কিন্তু ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষীরা আমাদের পোল্যান্ডে যেতে দিচ্ছে না। গেলেই রড নিয়ে আক্রমণ করতে আসছে। গতকাল তো গুলিও চালিয়েছে।”
মানসী জানান, তিনি তিনদিন ইউক্রেন-পোল্যান্ড সীমান্তে আটকে থাকার পরও দেশে ফিরতে পারেননি। তিনি জানান, গাড়ি করে হস্টেলেই ফিরে যাচ্ছেন। বিগত তিনদিন ধরে তাদের উপর পশুর মতো অত্যাচার করা হয়েছে। ইউক্রেনের সেনারা নিজেদের দেশের বাসিন্দাদের বিনা বাধায় সীমান্ত পার করতে দিলেও, বাকিদের বাধা দিচ্ছে। তিনি জানান, হস্টেলে ফিরেই ভারতে ফেরার জন্য তিনি বিকল্প কোনও রাস্তা খুঁজবেন। এবার রোমানিয়া বা হাঙ্গেরির সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরার চেষ্টা করবেন।
দীক্ষা পাণ্ডে নামক অপর এক পড়ুয়াও বিগত কয়েকদিনের অভিজ্ঞতাকে বিভীষিকাময় বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সীমান্তে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়ছেন, তাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। বিশেষ করে মেয়েদের চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হচ্ছে। জানি না কেন এই ধরনের হিংসাত্নক রূপ ধরেছে সেনারা।”