জ্যোতির্ময় রায়: দেশ করোনা (COVID) থাবায় বিধ্বস্ত। গোটা দেশে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৩২ লক্ষ ছাড়িয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ‘সুনামির’ আকার নিয়েছে। যার ফলে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। একাধিক রাজ্যে অক্সিজেনের জোগান নেই। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন হাইকোর্টে একাধিক মামলার শুনানি চলছে। হাইকোর্টও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।
করোনার মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড়, এল নাগেস্বর রাও, এস রবীন্দ্র ভাটের বেঞ্চ জানিয়েছে , হাইকোর্টের বিচারপতিদের শুনানির সময় অপ্রয়োজনীয় এবং দ্বিধাহীন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, এগুলির মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানায়, বিচারপতিদের চিন্তাভাবনা করেই তাদের মতামত দেওয়া উচিত। আমরা যখন হাইকোর্টের কোনও সিদ্ধান্তের সমালোচনা করি,তখনও আমরা ভেবে চিন্তে কথা বলি। আবেগকে সংযত করি। বিচারপতি চন্দ্রচুড় বলেন, “কখনও কখনও বিচারপতিরা রাজ্যগুলির আইনজীবীদের উদ্দেশে কড়া মন্তব্য করে থাকেন, এটি কখনও কারও বিরুদ্ধে বিবেচিত হওয়া উচিত নয়।”
করোনা মামলায় সাম্প্রতিক শুনানির সময় মাদ্রাজ হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে কঠোর মন্তব্য করেছে। আদালত জানায়, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য নির্বাচন কমিশন সবচেয়ে বেশি দায়ী। কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছিল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। একইভাবে, দিল্লি হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার সম্পর্কে কড়া মন্তব্য করেছিল।
করোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলা নিয়ে হাইকোর্ট আর সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছে। ইতিমধ্যেই, করোনা সংক্রমণে মারা গিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মোহন এম শান্তনাগোদার, এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি বিরেন্দ্র কুমার শ্রীবাস্তব। সাধারণ মানুষের মতো বহু আদালতকর্মী এবং আইনজীবী করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত। প্রত্যেকেরই মন প্রভাবিত ও ভারাক্রান্ত। তাই এর প্রতিক্রিয়া ও প্রভাব নিত্য মামলার শুনানিতে পড়ছে। মামলার শুনানির সময় বা টিপ্পনী করার সময় যাতে কোনও আবেগ বিচারকে প্রভাবিত করতে না পারে, সেই সতর্ক বার্তাই দিলেন সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে আরও ১ সপ্তাহ বাড়ল লকডাউন