কলকাতা: গঙ্গাসাগর মেলায় এক পয়সাও কেন্দ্র দেয় না। মঙ্গলবার তিনদিনের গঙ্গাসাগর সফরে গিয়ে এভাবেই সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার কথায়, ‘কুম্ভমেলা যদি ওয়ান হয়, এটা টু পাওয়া উচিৎ। এটা কুম্ভের মেলা থেকে কোনও অংশে কম নয়।’ তাঁর দাবি, গঙ্গাসাগর মেলাকে জাতীয় মেলার তকমা দেওয়ার জন্য বহুবার কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। কিন্তু তার কোনও জবাবই আসেনি। মুখ্যমন্ত্রীর গঙ্গাসাগর-সফর নিয়ে এ বার সরাসরি তোপ দাগলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
প্রবীণ বিজেপি নেতার কথায়, “কলকাতা পুরনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী যে পাপ করেছেন তা ধুতেই গঙ্গাসাগরে গিয়েছেন ওঁ। মোহন্ত তো রাজনীতি বোঝেন না, তাই আশীর্বাদ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। অমনটা ওঁ সবাইকেই করতে পারেন। প্রত্যেক নির্বাচনের পরেই দিদিমণি কোথাও না কোথাও পুজো দিতে যান। বাংলার বাইরে কোথাও রাজনীতি শুরু করেন।”
দিলীপের আরও সংযোজন, “সত্যি যদি গঙ্গাসাগরের উন্নয়ন চান তাহলে নির্দিষ্ট প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রের সাথে কথা বলুন মুখ্যমন্ত্রী। বিগত ১০ বছরে গঙ্গাসাগরের কী উন্নতি হয়েছে তা খতিয়ে দেখান।” উল্লেখ্য, পুরনির্বাচনে ল্যান্ডস্লাইড জয় পেয়েছে তৃণমূল। কলকাতার নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। বিজেপির ভাগ্যে শিঁকে ছিড়েছে মাত্র তিনটি ওয়ার্ড। পুরভোটের নেপথ্যে ভোটলুঠের অভিযোগ করেছে পদ্ম শিবির। সেই বিতর্ক এখনও তাজা। এরইমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর গঙ্গাসাগর সফর। সেখানে গিয়েই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ
মঙ্গলবার গঙ্গাসাগরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, কুম্ভমেলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সবরকম সহযোগিতা করলেও গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে তাদের কোনওরকম সহযোগিতা নেই। মমতা বলেন, “কুম্ভমেলায় সব টাকা ভারত সরকার দেয়। কিন্তু এখানে এক পয়সাও দেয় না। যদি কুম্ভমেলা ওদের সুয়োরানি হয়, গঙ্গাসাগর কি দুয়োরানি হয়ে গেল?”
মঙ্গলবার গঙ্গাসাগরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন এখানকার মেলাকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বহুবার কেন্দ্রকে চিঠি লেখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন “আমি অনেকবার চিঠি দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীকে অনেকবার চিঠি লিখেছি গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করা উচিৎ। কুম্ভ যদি ওয়ান হয়, এটা টু পাওয়া উচিৎ। আমি মনে করি কুম্ভ থেকে এটা কিছুতেই কম নয়। কুম্ভ মেলা রোড কানেকটেড, রেল কানেকটেড। কিন্তু এটা জল পেরিয়ে আসতে হয়। সেই জন্যই সবাই বলে সব তীর্থ বার বার গঙ্গা সাগর একবার। কিন্তু আজ একবার যাঁরা গঙ্গাসাগরে এসেছেন তারা বারবার আসেন। আগে গঙ্গাসাগরে থাকার জায়গা পর্যন্ত ছিল না। এখন কিন্তু সব ব্যবস্থা করা আছে। আপনারা যখন প্রশ্নের উত্তর না পেলে অপেক্ষা করেন আমাকেও অপেক্ষা করতে হবে।”
হারউড পয়েন্ট থেকে কচুবেরিয়া পর্যন্ত ব্রিজ তৈরির বিষয়টি বহু বছর ধরে চলছে। বুড়িগঙ্গার উপর এই ব্রিজ তৈরি নিয়ে বাম আমল থেকে ফাইল চালাচালি চললেও ঠাণ্ডাঘর থেকে তা আর বেরোয়নি। এদিন এই ব্রিজ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই মেলায় এক পয়সা কেন্দ্র দেয় না। কুম্ভ মেলাতে সব কেন্দ্র দেয়। আমরা তাজপুর বন্দর নিয়ে বলেছিলাম। সেই কথাও রাখেনি। কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ হবে এই সেতু তৈরিতে। টাকা পয়সা হাতে এলেই করা হবে। আমাদের কাজ আমরাই করে নেব।”
আরও পড়ুন: Soumen Mahapatra on Suvendu Adhikari: ‘আলো নিভিয়ে ধমকে-চমকে জিতেছেন, আপনাকে বিধায়ক মানি না’