কলকাতা: পুলিশের কাছে কেন আগাম খবর ছিল না? পুলিশের ‘ইন্টেলিজেন্স’ কেন চূড়ান্ত ব্যর্থ হল? গত দেড় দিনে এসব প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছিল। ঘটনার দেড় দিনের মাথায় সাংবাদিক বৈঠক করে আরজিকরে তাণ্ডবের ঘটনা রুখতে পুলিশি ব্যর্থতা স্বীকার করে নিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ঘটনার দেড় দিনের মাথায় সাংবাদিক বৈঠক করে ব্যর্থতা স্বীকার করলেন তিনি। ১.২৮ মিনিট এবং ১.০৮ মিনিটের দু’টি ভিডিয়োতেই সেদিনকার হামলার ছবি ধরা পড়েছে। কীভাবে সেই রাতে হাজার হাজার মানুষ ঢুকে পড়েছে, কীভাবে হামলা চলছিল, সবটা ধরা পড়েছে তাতে। এক দিক থেকে ধোঁয়া ছাড়া হয়েছিল। আরেকদিক থেকে লোক ঢুকছিল।
ভিডিয়ো দেখিয়ে বলা শুরু করেন সিপি। প্রথমেই তিনি বলেন, “আরজিকরে সেদিন রাতে ওত লোক ঢুকে পড়বে, আমরা আন্দাজ করতে পারিনি।” তাঁর কথায়, নেতাহীন একটা ভিড় সেদিন ঢুকে পড়েছিল। আরজি করে তাণ্ডবের রাতে গোটাটাই গোয়েন্দা ব্যর্থতা। স্বীকার করলেন সিপি। সঙ্গে বললেন, “আরজিকরে কত ফোর্স সেদিন রাখা উচিত ছিল, স্থির করতে পারিনি আমরা।” আরজিকরে ভাঙচুরের ঘটনায় ইতিমধ্যেই ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানালেন সিপি।
সিপি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৯ জনকে সাধারণ মানুষই ছবি দেখে শনাক্ত করেছেন বলে জানান তিনি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের ছবি সংবাদমাধ্যমে ধরা পড়েনি। কিন্তু জেরায় তারা স্বীকার করেছে, সেদিনের তাণ্ডবে তারাও জড়িত ছিল।
বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারেও তৎপর পুলিশ। তবে এক্ষেত্রে আমজনতা ও সংবাদমাধ্যমের কাছেও দোষীদের চিহ্নিত করার আবেদন জানালেন তিনি। সিপি বলেন, “আমরা আমাদের ফেসবুকে পেজে সেদিনের ঘটনার ভিডিয়ো দিয়ে বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করেছি। আপনারা নিজেরাও সেটা শেয়ার করেছেন। আপনাদের কাছেও অনুরোধ তাদের মধ্যে যদি কাউকে নিজেরা শনাক্ত করতে পারেন, তাহলে নির্দ্বিধায় আমাদের জানান। এক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক রঙ দেখবেন না। রাজনৈতিক রঙের উর্ধ্বে উঠে, কোনও ভয় না পেয়ে আমাদের জানাবেন। অভিযুক্ত যদি কোনও রাজনৈতিক নেতাও হন, তাহলেও নির্দ্বিধায় জানাবেন।”
বৃহস্পতিবার রাতে যখন আরজিকরের সামনে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল, তখনই আন্দোলনকারীদের বেশে হাসপাতালে ঢুকে পড়ে হাজার হাজার দুষ্কৃতী। চলে বেপরোয়া তাণ্ডব। গোটা বাংলা শিউরে উঠেছে সেই ঘটনা।