কলকাতা: ভুয়ো আইএএস অফিসার দেবাঞ্জনের জালিয়াতির তালিকা তৈরি করতে গিয়ে চোখ কপালে উঠছে পুলিশ-পুরসভার। বৃহস্পতিবারই জানা গিয়েছে, ধৃত দেবাঞ্জন দেব যে ভ্যাকসিন টিকাকরণের নামে দিয়েছিল তা ছিল জাল। এ বার উঠে আসছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, একটি বেসরকারি সংস্থাকে টিকা বেচে লক্ষাধিক টাকা আদায় করেছিল দেবাঞ্জন। সম্প্রতি এমনই তথ্য উঠে এসেছে পুরসভার হাতে। সূত্রের খবর, ওই সংস্থাটি ১৭১ টি করোনার টিকা বিক্রি করেছিল দেবাঞ্জন। যার বদলে ১.১১ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছিল।
পুরসভা সূত্রে খবর, সম্প্রতি সরলা ডেভলপমেন্ট মাইক্রোফিনান্স প্রাইভেট লিমিটেড নামক একটি সংস্থাকে ১৭১ টি করোনা টিকা সরবরাহ করেছিল দেবাঞ্জন। যার বিনিময়ে সে আদায় করেছিল ১ লক্ষ ১১ হাজার ১৫০ টাকা। মঙ্গলবার ভুয়ো টিকাকরণের বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর এবং দেবাঞ্জনকে পুলিশ গ্রেফতার করার পরই এই রিপোর্ট আসে পুরসভার কাছে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক পুরো প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য এ দিন সেই রিপোর্ট দেখান। একই সঙ্গে জানান, এনইএফটি করে এই টাকা পাঠানো হয় দেবাঞ্জনকে। ওই সংস্থাকে পাঠানোগুলিও জাল ছিল কি না, সেই নিয়েও ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এই বিষয়টি সামনে আসার পরই পুরসভা অনুমান করতে শুরু করেছে, এটা হিমশৈলের চূড়া মাত্র হতে পারে। এরকম আরও বহু বেসরকারি সংস্থাকেই টিকা বেচে থাকতে পারে দেবাঞ্জন। সেই টিকা আদৌ আসল কি না, সেই প্রশ্ন তো রয়েছেই। শুধুমাত্র দেবাঞ্জনই এই জালিয়াতিতে জড়িয়ে রয়েছে, না কি আরও কোনও বড় আধিকারিকের মদতে এতদিন এই চক্র চলেছে, সেই প্রশ্নও মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: কসবার ক্যাম্পে জাল টিকা নিয়েছেন মিমিরা! গুঁড়ো পাউডার মিশিয়ে তৈরি হয়েছিল ভ্যাকসিন
এরই মধ্যে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন ১৫ আগে নাকি কসবার ভুয়ো অফিসে নিজের কর্মীদের বেশ কয়েকজনকে ‘স্পুটনিক-ভি’ ভ্যাকসিন দিয়েছিলেন দেবাঞ্জন। যদিও কোথা থেকে দেবাঞ্জন ওই ভ্যাকসিন পেলেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। সেই টিকাগুলি আসল ছিল না নকল, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। কারণ, কলকাতায় এখনও পর্যন্ত খুব বেশি সংখ্যক স্পুটনিক এসে পৌঁছয়নি। একমাত্র দু-একটি জায়গায় রাশিয়ার এই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। অন্তত ১০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছিল বলে খবর।
আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে ‘গায়েব’ প্রায় ৫৫ হাজার ডোজ় ভ্যাকসিন, জানেই না স্বাস্থ্য দফতর