কলকাতা: নবান্ন-বনাম রাজভবনের সংঘাতের আঁচ এ বার পড়ল বিধানসভায়। রাজ্য বিধানসভার অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়েও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় হস্তক্ষেপ করছেন বলে সম্প্রতি লোকসভার স্পিকারকে অভিযোগ করেছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গ টেনেই পালটা চিঠিতে রাজ্যপাল লিখেছেন, তিনি এই বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমের মারফৎ জানতে পেরে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ওম বিড়লাকে করা নালিশের জবাবে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি লিখেছেন, “স্পিকার নিজেই রাজ্যপাল পদটির অবমাননা করেছেন।”
গত ২২ জুন ‘সারা ভারত স্পিকার সম্মেলন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিমানবাবু লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে নালিশের সুরে জানান, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল বিধানসভার অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে হস্তক্ষেপ শুরু করেছেন। যা তাঁর এক্তিয়ারভুক্ত নয়, সেই নিয়েও চিঠি চালাচালি করছেন রাজ্যর সাংবিধানিক প্রধান, অভিযোগ করেন বিমান। তার পালটা দিয়ে বুধবার রাজ্যপাল লিখেছেন, “এর থেকে দুঃখজনক কিছু হতে পারে না। আপনার অভিযোগ সংবিধানের পরিপন্থী। আমি বিধানসভায় যাওয়ার পরেও গেট বন্ধ করে রাখা হয়। আপনি নিজেও উপস্থিত থাকেননি। আমাকে অপমান করা হয়েছে।”
এখানেই থেমে থাকেননি রাজ্যপাল। তিনি আরও লেখেন, বিধানসভায় তাঁর ভাষণের লাইভ সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছিল, যা ‘জরুরি অবস্থার শামিল’ বলে উল্লেখ করেছেন ধনখড়। বিধানসভার স্পিকারের অভিযোগ তোলা হয়েছিল, রাজভবনে পাঠানো একাধিক বিল স্বাক্ষর করে পাঠাননি রাজ্যপাল। সেই অভিযোগও পত্রপাট খারিজ করে দিয়েছেন তিনি। রাজভবনে কোনও বিল পড়ে নেই বলেই স্পষ্ট দাবি জগদীপ ধনখড়ের।
Adherence to constitutional norms is quint essential to democracy & rule of law.
Urged Speaker #WBLA“ to work in togetherness in a harmonious manner to uphold and justify the essence and spirit of the Constitution for ensuring the overall welfare of the people @MamataOfficial. pic.twitter.com/onzI3jjHvY
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) June 30, 2021
আরও পড়ুন: বিধানসভার খুঁটিনাটি বিষয়েও হস্তক্ষেপ করছেন রাজ্যপাল, লোকসভার স্পিকারকে নালিশ অধ্যক্ষের
এই চিঠির বিষয় নিয়ে স্পিকারের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়ার জন্য বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় TV9 বাংলার পক্ষ থেকে। তখন বিমানসভার স্পিকার জানান, তিনি বিধানসভায় নিজের দফতরে পৌঁছনর আগেই এই চিঠি ফাঁস করে দেওয়া হয়েছে। যা খুব একটা ইতিবাচকভাবে নিচ্ছেন না তিনি।
আগামী ২ জুলাই বিধানসভার অধিবেশন বসতে চলছে। সেখানে উদ্বোধনী ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে জগদীপ ধনখড়ের। যদিও রাজ্য মন্ত্রিসভায় পাস হওয়া সেই ভাষণে খসড় তাঁকে পাঠানো হলে তাতে কিছু খুঁত খুঁজে বের করেছিলেন রাজ্যপাল। ফলে আগামী পরশু তিনি সেই ভাষণ পাঠ করবেন কি না, সেই বিষয়টি নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে। তারই মধ্যে স্পিকারকে পাঠানো রাজ্যপালের এই চিঠিতে রাজনৈতিক সংঘাত আরও বড় আকার ধারণ করবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভায় পাস হওয়া ভাষণের খসড়া ‘অসাংবিধানিক’, বিধানসভায় পাঠ করতে নারাজ রাজ্যপাল