কলকাতা: ভোটের আগে যখন প্রার্থী তালিকা থেকে অমিত মিত্রের নাম বাদ পড়েছিল, তখন অনেকেই প্রশ্ন করেছিলেন কে হবেন অর্থমন্ত্রী? উত্তরে মমতা বলেছিলেন, তিনি নিজেও হতে পারেন। তারপর থেকেই জল্পনা চলছিল। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে যে পদে অমিত মিত্রকেই টানা ১০ বছর দেখা গিয়েছে, সেই গুরুত্বপূর্ণ দফতর কার হাতে দেবেন মমতা? তা নিয়ে আলোচনাও হয় রাজনৈতিক মহলে। কিন্তু মন্ত্রিসভার তালিকা সামনে আসতেই দেখা গেল জয়ী বিধায়ক না হয়েও সেই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন অমিত মিত্র। তাঁকেই যে ফের অর্থ দফতর দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট হয়ে যায় সেই তালিকা থেকে। কিন্তু না জিতে কী ভাবে মন্ত্রী হবেন তিনি?
করোনা কালে নিজেকে ঘরবন্দি করেছেন অমিত মিত্র। শারীরিক অসুস্থতার কারণেই এবার ভোটেও দাঁড়াননি তিনি। তাই অর্থ মন্ত্রী হিসেবে কী ভাবে কাজ করবেন অমিত মিত্র, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। জানা যাচ্ছে, মন্ত্রী হওয়ার পর যে কোনও একটা পথ বাছতে হবে অমিত মিত্রকে। আগামী ছ’য় মাসের মধ্যেই কোনও কেন্দ্র থেকে জিতে আসতে হবে তাঁকে। অথবা একাংশের দাবি, বিধান পরিষদ তৈরির যে ভাবনা আছে মুখ্যমন্ত্রীর, তার বাস্তবায়ন হলে সেই পরিষদের সদস্য হতে পারেন তিনি। সে ক্ষেত্রে ভোটে লড়ার প্রয়োজন থাকবে না অমিত মিত্রের। মুখ্যমন্ত্রী আগেই ঘোষণা করেছিলেন রাজ্য স্তরে প্ল্যানিং কমিশনের ধাঁচে একটি যোজনা কমিশন তৈরি করবেন। সেখানে তাঁকে চেয়ারপর্সন করার সম্ভাবনার কথাও শোনা গিয়েছিল।
বাম সরকারের অবসান ঘটিয়ে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসেন, তখন প্রথম থেকেই তিনি রাজকোষ নিয়ে সরব হয়েছিলেন। বাংলা যে ঋণে জর্জরিত, সে কথা বারবার মনে করিয়ে দিতেন। আর সেই অবস্থায় হাল ধরেন অমিত মিত্রই। মমতা সরকার বরাবরই দাবি করে এসেছে, অমিত মিত্রই রাজ্যের আয় বৃদ্ধি করেছেন। রাজ্যের একের পর এক স্কিমে টাকা বরাদ্দ করা ও স্কিমগুলি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্বও দেওয়া হয় অমিত মিত্রকে। এ ছাড়া, সর্বভারতীয় স্তরেও অর্থনীতিবিদ হিসেবে তাঁর একটা প্রভাব রয়েছে। সেই জন্যই সম্ভবত এই পদে আর কোনও বিকল্প খুঁজে পাননি মমতা।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভায় একগুচ্ছ নতুন মুখ, কাদের জায়গা দিলেন মমতা?
রাজ্যে বেশ কয়েকটি আসন ফাঁকা আছে। যার মধ্যে অন্যতম খড়দা, সেই কেন্দ্রের বিধায়ক ফলাফলের আগেই প্রয়াত হন। এছাড়া জগন্নাথ সরকার ও নিশীথ প্রামাণিক সাংসদ আসন ছাড়বেন না বলে বিধায়ক পদে শপথ নেননি। ফলে সেখানেও ফের ভোটের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে কোনও আসন থেকেই নির্বাচনে লড়ে জিতে আসতে পারেন অমিত মিত্র। উল্লেখ্য, মমতা নিজেও ভোটে হেরে গিয়েছেন। নন্দীগ্রামের শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে লড়াইতে পরজিত হয়েছেন তিনি।