কলকাতা: বাংলায় ভোট পরবর্তী (Post Poll Violence) হিংসা নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে কড়া পদক্ষেপ করা হল। গঠন করা হয়েছে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি পদমর্যাদার চার আধিকারিকের একটি প্রতিনিধি দল। বাংলার নির্বাচন পরবর্তী হিংসার তদন্ত, তার বিস্তারিত তথ্য রিপোর্ট করা হবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যে সমস্ত জায়গায় নির্বাচন-পরবর্তী হিংসা হয়েছে সেখানকার বর্তমান অবস্থা কী, যাঁদের উপর হিংসা হয়েছে তাঁরা বর্তমানে কী অবস্থায় রয়েছেন, সেটা খতিয়ে দেখার জন্য তাঁরা এসেছেন। প্রয়োজন হলে তারা সরকারি আধিকারিক রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব অথবা রাজ্য পুলিশের ডিজি সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন।
উল্লেখ্য, বুধবার রাজভবনে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শপথবাক্য পাঠ করার পর তিনি নিজে তাঁর দায়িত্ব প্রসঙ্গে কিছু কথা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন। সে সময় রাজ্যপাল রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। সাংবাদিকদের সামনেই রাজ্যপাল বলেন, ““দেশ, রাজ্য একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি ভোট পরবর্তী হিংসাও হচ্ছে। আমি আশা রাখব নতুন সরকার কড়া হাতে দুই পরিস্থিতি জরুরি ভিত্তিতে নিয়ন্ত্রণ করবে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করবে। আমি একটা নতুন সরকারের কাছে এটাই আশা রাখব।”
ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই রাজ্যের কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক জেলা থেকে রাজনৈতিক হিংসার খবর এসেছে। শুধু বিজেপি নয়, অন্যান্য দলের কর্মীদের মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছে। আগেই এই ইস্যুতে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে সোমবারই রাজ্য পুলিশের ডিজি ও কলকাতার পুলিশ কমিশনার তলব করেছিলেন রাজ্যপাল।
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথবাক্য পাঠ করানোর আগেই রাজ্যের হিংসার নিয়ে তোপ দেগে টুইট করেছিলেন রাজ্য়পাল জগদীপ ধনখড়। তিনি লিখেছিলেন, “এরকম হিংসার ঘটনা গণতন্ত্রের লজ্জা। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। এই অবনতি অবহেলা করার মতো নয়।” মমতাকে শপথবাক্য পাঠ করানোর ঠিক আগেই এহেন টুইট যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন: থামল লোকাল ট্রেনের চাকা, বাসে গাদাগাদি ভিড়ে আশঙ্কা বাড়ছে আরও
রাজ্যপালের কথা শেষ হতেই মাইক হাতে এ প্রসঙ্গের রেশ টেনেই উত্তর দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই হিংসার দায় তাঁর নয়। তাঁর বক্তব্য, “আমি এখুনি শপথ নিলাম। এর আগে নির্বাচন কমিশনের আন্ডারে এই সরকারের পুলিশ কাজ করেছে। কোথাও কোথাও অশান্তি বেশি হচ্ছে। বিশেষ করে যেখানে যেই দল জিতেছে, বেশি অশান্তি করছে। আজকে গিয়েই আমি নতুন সেটআপ তৈরি করব। গত তিন মাসে এই সেটআপ আমার ছিল না। অনেক ইনএফেক্টিভ, ইনএফিসিয়েন্সি ছিল। আমি দেখে নেব, কেউ যেন প্রতিহিংসাপরায়ণ না হয়।”