কলকাতা: এবার উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসতে একটু বেশিই সময় নিচ্ছে। গতি বড় মন্থর। গত পাঁচ বছরে অন্তত উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসতে এত সময় লাগেনি। বহু হাপিত্যেস করে বসে থাকার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার বৃষ্টি এল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়। তবে বর্ষা এল কি?
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ঘন কালো মেঘে ঢাকে আকাশ। এরপরই কোথাও হালকা, কোথাও বিক্ষিপ্ত মাঝারি বৃষ্টি। সঙ্গে বিদ্যুতের ঝলকানি। ধীরে ধীরে দক্ষিণবঙ্গে পা বাড়াচ্ছে বর্ষা। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস জানান, দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু উত্তরবঙ্গের মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং বিহারের কিছু অংশে পৌঁছে গিয়েছে। আগামী দু’ তিনদিনে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু অংশে বর্ষা পৌঁছে যাবে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের কিছু এলাকা, উত্তরবঙ্গের বাকি অংশে ঢুকবে মৌসুমি বায়ু।
আগামী তিনদিন দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা মাঝারি বৃষ্টি হবে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায়। এদিন দুপুরের বৃষ্টিতে সামান্য হলেও কমেছে তাপমাত্রা। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেলে তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে আগামী দু’দিনে। তবে রবিবারের পর কমবে বৃষ্টির পরিমাণ।
এবার উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসতে একটু বেশিই সময় নিচ্ছে। গত পাঁচ বছরে উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসতে এতদিন সময় লাগেনি। ২০১৯ সালে উত্তরবঙ্গের চারদিন পর বর্ষা ঢুকেছিল দক্ষিণবঙ্গে। ২০২০ সালে ১২ জুন একই দিনে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা এসেছিল।
২০২১ সালে উত্তরবঙ্গের পাঁচ দিন পর দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসে। ২০২২ সালে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসার সময়ের পার্থক্য ছিল ১৫ দিন। ২০২৩ সালে অর্থাৎ গত বছর ১২ জুন উত্তরবঙ্গে এলেও দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসে ১৯ জুন। অর্থাৎ সাতদিন পর। কিন্তু ২০২৪ সালে ৩১ মে উত্তরবঙ্গে বর্ষা এসে গিয়েছে। ২০ দিন পার হয়ে গেলেও দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার দেখা নেই। উল্টে তীব্র গরম আর আর্দ্রতায় ঘেমেনেয়ে একসা বঙ্গবাসী।
তবে উত্তরবঙ্গকে কিন্তু নিংড়ে নিচ্ছে বর্ষা। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি জেলাতেও ভারী বৃষ্টি। মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা থাকছে। শনিবার এবং রবিবার উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমবে। গত ২৪ ঘণ্টায় তুফানগঞ্জে বৃষ্টিপাত হয়েছে ২০২.৪ মিলিমিটার। কোচবিহারে ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গঙ্গারামপুরে ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।