কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জিতলেন! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হারলেন। অবাক করার ব্যাপার হলেও জয় এবং হারে মমতারই ছাপ বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে। একদিকে মমতার ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় (বাবুন) অন্যদিকে, মমতার দাদা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় (ষষ্ঠী)। বাবুন বনাম ষষ্ঠীর এই নির্বাচন নিয়েই আগ্রহ ছিল রাজ্য রাজনীতিতেও। খোদ মমতার পরিবারের লোক, একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছেন সচরাচর দেখা যায়নি। শুক্রবার BOA-র নির্বাচনের ফল যা অনুমান করা হয়েছিল, তাই হল। বাবুন মাত্র ২০টা ভোট পেয়েছেন। প্রেসিডেন্ট পদে বিরোধী প্রার্থী চন্দন রায়চৌধুরী পেয়েছেন ৪৫টি ভোট। যার অর্থ হল, বাবুন ভোটে দাঁড়াতেই পারেননি।
মমতা বিরোধিতা যে বাবুনের কাল হয়েছে, এ বিষয়ে একমত ময়দান। লোকসভা ভোটে শোনা গিয়েছিল, তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন। যার জেরে মমতা তাঁকে ত্যাজ্য ভাই করেছিলেন। বিওএ-র নির্বাচনে মমতার ঘনিষ্ঠ লোকজন বুঝিয়ে দিলেন বাবুন আর ময়দানে ডাল পালা মেলতে পারবেন না। একা অজিত নন, বাবুন বিরোধিতায় নেমেছিলেন খোদ ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও। লেক ক্লাব থেকে বিজয়গড়ের অফিস, গোপন ডেরায় একাধিক বৈঠকে তৈরি হয়েছে বাবুনকে সরানোর নীল নকশা। সেই মতোই ধোপে টিকলেন না মমতার ভাই।
শুধু প্রেসিডেন্ট পদে নয়, বাবুনের পুরো প্যানেলই গো-হারা হেরেছে। সচিব পদে বিরোধী হয়ে দাঁড়ানো জহর দাস ৪১টি ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। সহ সভাপতি পদে বিশ্বরূপ দে ৫২ ভোট পেয়ে জিতেছেন। প্রেসিডেন্ট পদে জেতার পর চন্দন রায়চৌধুরী বলেছেন, ‘অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ ছিল। তবে অলিম্পিক সংস্থার হয়ে কাজ করাটাই মূল লক্ষ্য। যাতে বাংলা থেকে নতুন করে প্লেয়ার তুলে আনতে পারি। এই লক্ষ্যেই আমাদের কমিটি কাজ করবে।’ বিশ্বরূপ দে-ও বলেন, ‘খেলা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদ ছিল। দেখা করব তাঁর সঙ্গে। ক্রীড়ামন্ত্রীও পাশে ছিলেন।’
এই হারের পরও বাবুন দমছেন না। বরং তাঁর মুখে দিদির স্লোগান, ‘খেলা হবে’। বাবুন বলেছেন, ‘আমি বরাবর মাঠের ছেলে। ময়দান ছেড়ে যাওয়ার বান্দা নই।’ ফিরে আসার অঙ্গীকার বাবুন হয়তো করছেন, পারবেন কি?