পানাজি: চোট সারিয়ে লম্বা বিরতির পর মাঠে ফিরেও গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না বাগানের প্রাণভোমরা রয় কৃষ্ণা (Roy Krishna)। অবশেষে মিটল কৃষ্ণার গোলের তৃষ্ণা। বৃহস্পতিবার রাতে পানাজিতে আইএসএলের (ISL) ম্যাচে চেন্নায়িন এফসির (Chennaiyin FC) বিরুদ্ধে গোলে ফিরেছেন ফিজির তারকা স্ট্রাইকার। তাঁর একমাত্র গোলেই জিতেছে এটিকে মোহনাবাগান (ATK Mohun Bagan)। তবে দলের পারফরম্যান্সে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে না পারলেও, রয়ের গোলে ফেরা ও ছেলেদের লড়াইয়ে খুশি বাগান কোচ হুয়ান ফেরান্দো (Juan Ferrando)।
চেন্নায়িনের কাছে এ দিনের ম্যাচটা ছিল শুধুই উপভোগ করার। কিন্তু বাগান শিবিরের জয়টা প্রয়োজন ছিল, লিগ টেবলের শীর্ষস্থান দখলের জন্য এগিয়ে যাওয়ার। ম্যাচের শেষে ফেরান্দো বলেন, “সত্যি বলতে, বল পজেশন, আক্রমণ ও জায়গা তৈরি করার ক্ষেত্রে আমরা প্রথমার্ধে অনেকটাই এগিয়ে ছিলাম। দ্বিতীয়ার্ধে দল খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। আমাদের ওপর যথেষ্ট চাপ ছিল। কারণ, প্লে অফে যাওয়ার জন্য তিন পয়েন্ট পেতেই হত আমাদের। চেন্নায়িনের ক্ষেত্রে সেই চাপটা ছিল না। ওরা ম্যাচটা উপভোগ করতে নেমেছিল। আর উপভোগ করতে নামলে যে কোনও দল ভালো খেলে।”
জবি জাস্টিনদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটা সুযোগ হাতছাড়া হয়েছিল সবুজ-মেরুন শিবিরের। এ ব্যাপারে বাগান কোচ বলেন, “এটা ঠিকই যে প্রথমার্ধে আমরা অনেকগুলো ক্লিয়ার চান্স পেয়েছিলাম। হয়তো ২-০ হতেই পারত। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা আমাদের সেরাটা দিতে পারিনি। কারণ, দল তরতাজা ছিল না, ভাল সুযোগও তৈরি করতে পারিনি আমরা। তা ছাড়া, অনেক ভুল পাস খেলেছি, ওঠা-নামাও প্রথমার্ধের মতো ভালো হয়নি। প্রথমার্ধের খেলায় আমি খুশি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ক্লান্তির জন্য সাধারণ ফুটবল খেলেছি আমরা। তবে আমার দলের খেলোয়াড়রা যে রোজ নিজেদের উজাড় করে দিচ্ছে, তার জন্য আমি খুশি।”
দল যেমন পারফর্ম করুক না কেন, জিতে মাঠ ছেড়েছে এবং রয়ের গোলে ফেরাটার জন্য কিন্তু খুশি বাগান কোচ। ২০২২ সালে এই প্রথম গোল পেলেন ফিজির তারকা। এ ব্যাপারে ফেরান্দো বলেন, “রয়ের জন্য আমি খুবই খুশি। কারণ, ও আর ওর পরিবার খুব কঠিন সময় পেরিয়ে এসেছে। কোয়ারান্টাইন, ওর বাচ্চার কথাও নিশ্চয়ই সবাই শুনেছেন, কোভিড সব মিলিয়ে দুঃসময় কাটিয়ে এসেছে ও। তবে আমি খুশি যে কোভিডের সঙ্গে লড়াইটা ও প্রায় শেষ করে এনেছে। আশা করি আর দিন কুড়ি পরে আমরা এই জৈব সুরক্ষা বলয় থেকে বেরোতে পারব এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারব।”
ফেরান্দো বাগানে যোগ দেওয়ার পর এখনও অবধি অপরাজিত রয়েছে দল। সেমিফাইনালেও দলের এই ছন্দ বজায় থাকবে কিনা সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “দলের ফর্মে আমি খুশি, তবে এটা শুধু আমার কাজের জন্য নয়। প্রথমত, ক্লাবের মালিক কর্তৃপক্ষ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। দ্বিতীয়ত, খেলোয়াড়রাও অসাধারণ। ওরা ওদের এবং আমাদের কাজটাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করে। আমাদের কোচিং স্টাফের সদস্যরাও যথেষ্ট দক্ষ। দলের প্রত্যেকে রোজই তাদের সেরাটা দিয়েছে। এ সবেরই ফল এটা। জানি না, কত ম্যাচে আমরা অপরাজিত। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছি আমরা, এটাই আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্লে অফে আমাদের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।”