কলকাতা: তালিকা বেশ লম্বা। শুভাশিস বসু, বিশাল কেইথ, লিস্টন কোলাসো, সাহাল আব্দুল সামাদ, অনিরুদ্ধ থাপা, দীপক টাংরি, মনবীর সিং। সাত সেরা ফুটবলার এখন রয়েছেন দোহায়। ভারতের হয়ে এএফসি এশিয়ান কাপ খেলার জন্য। এতেই কি তালিকা শেষ? না। আশিক কুরুনিয়ানকেও না-পাওয়ার তালিকায় রাখতে হচ্ছে। চোটের জন্য। পরিস্থিতি এমন যে, আলাদা একটা টিমই নামিয়ে দেওয়া যায়! এ হেন পরিস্থিতিতে কী বলতে পারেন কোচ? ‘লড়ব’, ‘চেষ্টার ত্রুটি থাকবে না’, ‘টিম তৈরি’র মতো কিছু শব্দবন্ধনী সযত্নে তুলে ধরার কথা। কী আশ্চর্য, তেমন কিছু শোনা যাচ্ছে না। বরং ভারতীয় ফুটবল মঞ্চে শুক্রবার সন্ধেয় নিজেদের ‘সুপার জায়েন্ট’ হিসেবেই তুলে ধরতে চাইছে মোহনবাগান (Mohun Bagan)। কেন? এমনই মহিমা ডার্বির (Derby)। কে আছে, কে নেই— ভাবে না কেউই। তিনের গন্ধে আর লড়াইয়ের ছন্দে বুঁদ হয়ে থাকে দুটো টিম। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে নামার আগে তারই প্রতিধ্বণি শোনা যাচ্ছে সবুজ-মেরুন শিবিরে।
হুয়ান ফেরান্দো ছাঁটাইয়ের পর মোহনবাগান আবার ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়েই সুপার কাপ খেলতে গিয়েছে। প্রথম দুটো ম্যাচে জয়ও এসেছে। আসল পরীক্ষা ডার্বি। কোচ হিসেবে নাম রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় আন্তোনিও হাবাস থাকতে পারবেন না ডাগআউটে। কোচের ভূমিকায় থাকবেন ক্লিফোর্ড মিরান্ডাই। হাবাস অবশ্য গ্যালারি থেকে কোচিং করাবেন। কিন্তু কার্লেস কুয়াদ্রাতের টিমের বিরুদ্ধে নামার আগে একটাই দুশ্চিন্তা থেকে যাচ্ছে বাগানের। ডিফেন্স সে ভাবে জমাট নয়। বিপক্ষের আক্রমণের সামনে ভেঙে পড়ছে। শ্রীনিদি ডেকান, হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে গোল হজম করতে হয়েছে। তাতেও কিন্তু ডিফেন্স নিয়ে দুশ্চিন্তায় নেই ক্লিফোর্ড। প্রাক্তন গোয়ান ফুটবলার প্রেস মিটে বলে দিয়েছেন, ‘অনেকে অনেক কথা বলছে ঠিকই, আমার কিন্তু ডিফেন্স নিয়ে চিন্তা নেই। শুধু ডিফেন্স নিয়ে ভাবতে যাব কেন? ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে খেলার জন্য নিজেদের পুরোপুরি গুছিয়ে নামতে হবে। ডিফেন্স তার একটা পার্ট। এটুকু বলতে পারি, আমি ডিফেন্সের পারফরম্যান্সে খুশি।’
পয়েন্ট ও গোল পার্থক্য সমান হলেও অঙ্ক বলছে, গোল বেশি দেওয়ার নিরিখে শুক্রবার ড্র করলেই শেষ চারে চলে যাবে ইস্টবেঙ্গল। কুয়াদ্রাতের হাতে পড়ে লাল-হলুদ ধীরে ধীরে ভালো খেলছে। সুপার কাপেও ভালো পারফর্ম করছে টিম। ধারাবাহিকতা তুলে ধরেছে। ক্লিফোর্ড কিন্তু বলে দিচ্ছেন, ‘ইস্টবেঙ্গল কতটা ভালো খেলছে, সেটা মাঠে দেখা যাবে।’
আসলে মোহনবাগানের ত্রুটি যদি ধরা পড়ে, তা হলে সবুজ-মেরুনকেও মেপে রেখেছেন ক্লিফোর্ড। শক্তি-দুর্বলতার নোট নিয়ে রেখেছেন। মরসুমে দু’বার ইস্টবেঙ্গলের মুখোমুখি হয়েছে মোহনবাগান। ডার্বির স্কোরলাইন এখন ১-১। শুক্র-সন্ধেয় কার মুখে থাকবে শেষ হাসি? টিমের সঙ্গে হাবাসের যোগ দেওয়া ক্লিফোর্ড এবং টিমের মনোবল কিন্তু বাড়িয়ে দিচ্ছে।