জলের আর এক নাম জীবন। ছোটবেলা থেকেই একথার সঙ্গে আমরা পরিচিত। পৃথিবীতে এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কোথা থেকে এল অর্থাৎ পৃথিবীপৃষ্ঠে জলের উৎস কী? এই রহস্যের সমাধানে অনেকদিন ধরেই গবেষণা শুরু করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। মনে করা হচ্ছে এবার এই রহস্যের সমাধান করে ফেলেছেন তাঁরা। শোনা যাচ্ছে যে, পৃথিবীপৃষ্ঠে জলের আগমন হয়েছে আসলে সূর্য থেকে। বিভিন্ন প্রমাণ সেই দিকেই ইঙ্গিত করছে।
ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকার একদল বৈজ্ঞানিক পৃথিবীতে জলের উৎস খোঁজার জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেছিলেন। সেই সূত্রেই একটি প্রাচীন গ্রহাণু খতিয়ে দেখেছন তাঁরা। ২০১০ সালে জাপানে হায়াবুসা মিশন হয়েছিল। সেখানেই এই প্রাচীন অ্যাস্টেরয়েড বা গ্রহাণু পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। আর তার থেকে জানা গিয়েছে যে, পৃথিবীতে জল এসেছে বহির্জগতের ধূলিকণা থেকে। পৃথিবী সৃষ্টির আদি পর্যায়ে অর্থাৎ পৃথিবী সৃষ্টির পরপরই এই জলের অবস্থান লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই জলের উৎপাদন সম্ভব হয়েছে যখন সৌর ঝড়ের চার্জড পার্টিকেলে রাসায়নিক গঠনের পরিবর্তন হয়েছে, সেই সময়। এই পদ্ধতিকে স্পেস ওয়েদারিং বা মহাকাশের আবহবিকার অ্যাখ্যা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
নেচার অ্যাস্ট্রোনমি জার্নালে এই প্রসঙ্গে যে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে সেখানে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পৃথিবীর মহাসাগরের জলের কম্পোজিশন পুনরায় তৈরি করা যথেষ্ট জটিল। তবে বিজ্ঞানীরা এই প্রমাণ পেয়েছেন যে সৌরঝড়ের মাধ্যমেই পৃথিবীতে জল তৈরি হয়েছিল। অর্থাৎ সূর্য থেকেই এসেছিল পৃথিবীর জল। তবে এর পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা এও বিশ্বাস করেন যে, পৃথিবীর কিছুটা পরিমাণ জল অতি অবশ্যই সি টাইপ মেটিওর বা উল্কার মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে।
এবার নতুন গবেষণার মাধ্যমে আরও নতুন কিছু রহস্যের সমাধান হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কখন এবং কীভাবে জল পৃথিবীতে এসেছিল এবং ৭০ শতাংশ এলাকা জলে পূর্ণ হয়েছিল, এই প্রশ্নের জবাব নতুন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পাওয়া যাবে। সৌর জগতের বায়ুহীন এলাকায় বিজ্ঞানীদের জলের উৎস খুঁজতেও সাহায্যে করবে এই নতুন গবেষণা। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন। বেশ কিছু ভিন্ন ধরনের স্পেস রক নিয়ে গবেষণা করেছিলেন তাঁরা। এর মধ্যে ছিল এস টাইপ অ্যাস্টেরয়েড। এই গ্রহাণু সূর্যের কছাকাছি কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করে। সি টাইপের তুলনায় সূর্যের কাছাকাছি রয়েছে এই এস টাইপের গ্রহাণু। Itokawa asteroid থেকে এই সমস্ত নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এইসব গ্রহাণুর নমুনায় ওয়াটার মলিকিউল খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন- Galileo Satellite: আগামী ২ ডিসেম্বর লঞ্চ হবে গ্যালিলিও স্যাটেলাইট, জানিয়েছেন ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি
আরও পড়ুন- Galaxy: ধুলোর পর্দার আড়ালে থাকা দুটো নতুন ছায়াপথের আবিষ্কার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা