New Generation Engineering: ভাঙা বাড়ি দিয়ে ফুটপাথ!

TV9 Bangla Digital | Edited By: আসাদ মল্লিক

Mar 29, 2024 | 10:46 PM

TV9 Bangla: আমেরিকার টুইন টাওয়ারের কথা যদি বলি। সাড়ে পাঁচ লক্ষ টনের ধ্বংসাবশেষ সরাতে সময় লেগেছিল দেড় মাসের বেশি। এর মধ্যে ৫০ শতাংশই পুর্নব্যবহার করা গিয়েছে। ১০ হাজার ডিজাস্টার শেল্টার। ২৫ হাজার ফুটপাথে ঢালাই। ৫০ হাজার গাছ লাগানোর শেড তৈরির পরও সবটা শেষ করা যায়নি। শেষে ডাম্পিং পেস্ট সলিউশন প্রযুক্তিতে একটা মিক্সচার তৈরি করেন প্রযুক্তিবিদরা। নতুন নির্মাণের সময় সেভেন্টি-থার্টি অনুপাতে বালি, সিমেন্টের সঙ্গে তা মেশানো শুরু হয়।

গার্ডেনরিচে ভেঙে পড়া বহুতলের অংশ মিশে যাবে ফুটপাথে। রাবিশ দিয়ে তৈরি হবে পেভার ব্লক। নির্দিষ্ট সময় অন্তর কলকাতার ফুটপাথে পেভার ব্লক বসায় পুরসভা। গার্ডেনরিচ থেকে ইট, পাথর, বালি, সিমেন্টের চাঙর রাজারহাটে আনা হয়েছে। সেখানে পুরসভার প্ল্যান্টে বিপুল পরিমাণ রাবিশের প্রক্রিয়াকরণ হবে। প্রথমে ইট, পাথর, বালি, সিমেন্ট আলাদা করার কাজ। তারপর এসব দিয়ে ওই প্ল্যান্টেই তৈরি হবে পেভার ব্লক। কনস্ট্রাকশন ওয়েস্টের প্রক্রিয়াকরণে ২০২৩ সালে এই প্ল্যান্ট চালু করে কলকাতা পুরসভা। এখান সেখানে দিনে ৫০০ টন নির্মাণ-বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ করা যায়। যখনই কোনও বড় নির্মাণ বিপর্যয় ঘটেছে। তখনই সেই ধ্বংসাবশেষ নিয়ে নতুন নতুন মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে মানুষ। আমেরিকার টুইন টাওয়ারের কথা যদি বলি। সাড়ে পাঁচ লক্ষ টনের ধ্বংসাবশেষ সরাতে সময় লেগেছিল দেড় মাসের বেশি। এর মধ্যে ৫০ শতাংশই পুর্নব্যবহার করা গিয়েছে। ১০ হাজার ডিজাস্টার শেল্টার। ২৫ হাজার ফুটপাথে ঢালাই। ৫০ হাজার গাছ লাগানোর শেড তৈরির পরও সবটা শেষ করা যায়নি। শেষে ডাম্পিং পেস্ট সলিউশন প্রযুক্তিতে একটা মিক্সচার তৈরি করেন প্রযুক্তিবিদরা। নতুন নির্মাণের সময় সেভেন্টি-থার্টি অনুপাতে বালি, সিমেন্টের সঙ্গে তা মেশানো শুরু হয়। ধূলিসাত্‍ হওয়ার ২৩ বছর পরে এখনও এইভাবেই আমেরিকার বাড়িতে-গলিতে মিশে থাকছে টুইন টাওয়ার। নয়ডায় আদালতের নির্দেশে জোড়া টাওয়ার ধ্বংসের পর জমা হয়েছিল ৮০ হাজার কেজি নির্মাণ বর্জ্য। এর মধ্যে মাত্র ৩০ হাজার কেজি রাবিশ পুর্নব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে। তৈরি হয়েছে ১ কোটি ৮০ লক্ষ কংক্রিট ওয়াল। সারা দেশে বছরে কতটা নির্মাণ বর্জ্য জমে বলুন তো? কমবেশি প্রায় ১২০ কোটি টন। শুধু শহর কলকাতার কথাই যদি ধরি, তাহলেও সেটা তিন লক্ষ টনের বেশি। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। যে কোনও ধরণের নির্মাণ বর্জ্যই কমবেশি স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে আমার আবেদন, শুধু নির্মাণ বর্জ্য নয়, যে কোনও বর্জ্যের পুর্নব্যবহারেই আরও উদ্যোগ নেওয়া হোক। গার্ডেনরিচের ক্ষেত্রে যে দৃষ্টান্ত দেখা যাচ্ছে, তা অন্যান্য ক্ষেত্রেও ছড়িয়ে দেওয়া হোক।

স্বভাবটা বেশ পুরনো। দাদাগিরি। অন্যের বিষয়ে নাক গলানো। ইউরোপ-আমেরিকার এ স্বভাব সহজে যাওয়ার নয়। প্রথমে সিএএ। পরে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি। দুই ইস্যুতেই সরব হয়েছে আমেরিকা। অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিয়ে জার্মানিও মুখ খুলেছে। কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা নিয়েও মতামত দিয়েছে আমেরিকা। মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের মন্তব্য। মনে হচ্ছে কংগ্রেসের প্রচারে বাধা তৈরিই এর উদ্দেশ্য। আমরা চাই ভারতে ভোটে স্বচ্ছতা বজায় থাকুক। দেখুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার নির্দেশের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের আর্জি দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ খারিজ করে দিয়েছে। এবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা উঠবে। শুনানি হবে। এখানে আমেরিকার নাক গলানো কেন? ভারতের নিজস্ব ব্যাপারে হস্তক্ষেপের অধিকার কে তাদের দিল? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আমেরিকাকে দিতেই হবে। জার্মানিকেও দিতে হবে। কারণ জার্মানিও কেজরিওয়ালের বিচার নিয়ে দিল্লিকে সতর্ক করতে চেয়েছে। সিএএ চালু হওয়ার পর সংখ্যালঘুদের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছে আমেরিকা। আমি যেটা বলব কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা ঠিক না ভুল? সিএএ কতটা ভাল বা খারাপ? এসব নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। কেউ ভাল বলতে পারেন। কেউ খারাপ বলতে পারেন। রাস্তায় নামতে পারেন। আদালতে যেতে পারেন। সেই স্পেসটা তো আমাদের সামাজিক ব্যবস্থায় রয়েছে। তাই না? কিন্তু তার মানে তো এই নয় যে অন্য দেশের সরকার আমাদের নিজস্ব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ইলেকশনের কথা আমাদের সবার মনে আছে। এবারও আমরা এক প্রার্থীকে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে দেখছি। তাই ভারতকে নীতিশিক্ষা দেওয়ার কথা চিন্তা না করাই ভাল। আর এই ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে ভারত সেটা মেনেও নেবে না। বুধবারই দিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন উপ-রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছিল বিদেশমন্ত্রক। জার্মান রাষ্ট্রদূতকেও তলব করা হয়েছিল। মার্কিন উপ-রাষ্ট্রদূত প্রায় ৪০ মিনিট সাউথ ব্লকে ছিলেন। তারপরেই বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণবীর জয়সওয়াল জানিয়ে দেন, ভারতের নিজস্ব ব্যাপারে দ্বিতীয় কোনও দেশের হস্তক্ষেপের জায়গা নেই। সেই কথাটাই আমরা দুই দেশকে মনে করিয়ে দিয়েছি। কূটনৈতিকভাবে যথেষ্ট কড়া বার্তা। আমেরিকা-ইউরোপের যা বোঝার, বুঝে যাওয়া উচিত। আজ ২০২৪ সালে ভারতের কাউকে পরোয়া করার দরকার নেই। আমেরিকা-ইউরোপের সঙ্গে ওদের ভাষাতেই ডিল করতে হবে। দেশ সেটাই করছে।