আমতা : আনিস খানের মৃত্যুর (Anis Khan Death) পর কয়েকদিন কেটে গেলেও এখনও অধরা ঘটনার মূল অভিযুক্তরা। গ্রেফতার করা যায়নি কাউকেই। ক্রমেই বাড়ছে ক্ষোভ। মঙ্গলবারই আনিসের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতার রাজপথে বিক্ষোভ দেখান ছাত্রনেতারা। আর আনিস খানের বাড়িতে গেলেও সিটের তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করলেন আনিস খানের বাবা সালেম খান। এ দিন তাঁদের বাড়িতে যান সিটের দুই সদস্য ডিআইজি (সিআইডি অপারেশন) মিরাজ খালিদ এবং ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার ধ্রুবজ্যোতি দে। তাঁরা আনিসের বাবার সঙ্গে কথা বলে মূল ঘটনা সম্পর্কে জানতে চান। কিন্তু, আনিসের বাবা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি রাজ্য পুলিশের সঙ্গে কোনও কথা বলবেন না। সিবিআই-এর সঙ্গেই কথা বলতে চাইছেন তিনি। একই কথা জানিয়েছেন আনিসের দাদাও।
আনিস- কাণ্ডের তদন্তে ইতিমধ্যে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট গঠনের করা হয়েছে। আনিসের বাড়িতে এ দিন যান সিটের সেই উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। মঙ্গলবার দুপুরে আমতায় আনিসের বাড়িতে পৌঁছন তাঁরা। সেখানে পৌঁছতেই তাঁদের ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। এলাকার মানুষ তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতেও শুরু করেন। পরে যে বাড়ির ছাদ থেকে আনিসকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয় সেই ঘটনাস্থলও ঘুরে দেখেন আধিকারিকেরা। তবে আনিসের বাবার কাছ থেকে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ জানতে চাওয়া হলে সেখানেই ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। তিনি সাফ জানান সিটের ওপর তাঁর কোনও ভরসা নেই।
জানা গিয়েছে, এ দিন প্রাথমিকভাবে অফিসারদের সঙ্গে কিছু কথোপকথন হয় আনিসের বাবার। এরপর চেয়ারে বসে কথা বলতেই বলতেই উঠে যান বৃদ্ধ। শারীরিক অসুস্থতার কারণে চলে যান তিনি। আনিসের দাদা সাবির খানও জানিয়েছেন, সিবিআই-এর সঙ্গেই কথা বলবেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘সিটের ওপর আমরা ভরসা করছি না। ওনারা তদন্ত করছেন করুন, আমরা বাধা দেব না। আমরা যা বলার সিবিআই-কে বলব।’ তিনি আরও জানান, তাঁর বাবা দু দিন ধরেই অসুস্থ।
সোমবারই আনিসের বাবা জানান, যে দিন বিচার হবে, দোষীরা শাস্তি পাবে, সে দিনই চাকরি নেওয়া হবে, তার আগে নয়। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘প্রশাসনের উপর আস্থা রাখি না। রাখতে পারব না।’ সোমবারই আনিসের পরিবারকে নবান্নে ডেকে পাঠিয়েছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আনিসের পরিবারের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পারলে তাঁদের বাড়িতে আসুন, কারণ তাঁর বাবা শারীরিকভাবে অসুস্থ।
এ দিকে সিবিআই তদন্তের দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। আনিসের প্রতিবেশীরাও একই দাবি জানাচ্ছেন। আনিসের বাবা এ দিন জানান, তিন পুলিশকে সাসপেন্ড করাতেও সন্তুষ্ট নন তিনি। আনিসের বাবা বলেন, ‘পুলিশই খুন করেছে। তাই তদন্ত শুধু সিবিআই করতে পারে। তাঁর আরও দাবি, সাসপেন্ড করে কী হবে! আদালতে হাজির করে দোষী সাব্যস্ত করতে হবে আসামীদের।’