মালদহ: ‘পরকীয়া করছে ওরা’ শুধুমাত্র সেই সন্দেহের করে বসল সালিশি সভা। ভরা সভা থেকে তরুণীকে প্রকাশ্যে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে নির্যাতন। পরে পুলিশ বাধা দিতে এলে পুলিশের উপরও চলল হামলা। থানার আইসির গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে উত্তেজিত জনতা বলে অভিযোগ। ঘটনায় আহত হয়েছেন কয়েকজন পুলিশকর্মী। মালদহর কালিয়াচক থানায় জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শেরপুর গ্রামের ঘটনা।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার রাত্রিবেলা। সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে। জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক যুগলকে আমবাগানে দেখতে পেয়ে পরকীয়া সম্পর্কের অভিযোগ তুলে তাঁদের আটক করে গ্রামবাসীদের একাংশ। আমবাগান থেকে রাস্তায় তুলে এনে যুগলকে বেধড়ক মারধর শুরু হয়। সালিশি সভা বসে। তারপর শাস্তি স্বরূপ যুগলকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে নির্মম অত্যাচার চালানো হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে রাতেই জালালপুরের শেরপুর গ্রামে যায় কালিয়াচক থানার পুলিশ। যুগলকে উদ্ধার করতে বাধা দেয় উত্তেজিত জনতা। এনিয়ে জনতা-পুলিশ বচসা শুরু হয়।
হঠাৎ বাসিন্দাদের একাংশ পুলিশকর্মীদেরও মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। এমনকী, ভাঙচুর করা হয় আইসির গাড়ি। অভিযোগ, পুলিশকর্মীদের উপর লাঠিসোটা এবং ইট পাথর নিয়ে হামলা চালানো হয়। তারপর বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কালিয়াচক থানার আইসি সুমন রায়চৌধুরী। কিন্তু উত্তেজিত বাসিন্দারা আইসির গাড়িতেও ভাঙচুর চালায়। ইট ও লাঠির আঘাতে জখম হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। ওই যুগলকে উদ্ধার করে কালিয়াচক থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় তিনজনকে পুলিশ আটক করে।
কালিয়াচক থানার আইসি সুমন রায়চৌধুরি জানিয়েছেন,যুগলকে মারধরের খবর পেয়ে পুলিশ শেরপুর এলাকায় যায়। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা করতেই পুলিশের উপর চড়াও হয় বেশ কয়েকজন। তাদের প্রত্যেকের হাতে ধারাল অস্ত্র-সহ ইটপাথর ও লাঠি ছিল। ইটের আঘাতে গুরুতর আহত হন এক পুলিশকর্মী। স্বতঃপ্রণোদিত একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। অপরদিকে, নিগৃহীতা মহিলার পুলিশকে জানান, তিনি ব্যাঙ্কের শাখায় টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। তখনই ওই যুবকের সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়। যুবক পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তিনি রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন।