কলকাতা: ঘরে শোয়ানো মেয়ের দেহ। পাশের ঘরে ডেকে নিয়ে ডিসি নর্থ টাকা দিতে চেয়েছিলেন। বুধবার রাতে আরজি করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ কথা বলেছেন তিলোত্তমার বাবা। অভিযোগটা ভয়ঙ্কর। তরুণী চিকিৎসকে ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখে যখন বাবা-মা দিশেহারা, তখন টাকার ‘অফার’ করল পুলিশ! তিলোত্তমার বাবার এই বক্তব্যে যখন নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই বৃহস্পতিবার সকালেই সেই তিলোত্তমার বাবা-মায়ের একটি ভিডিয়ো সামনে আনল তৃণমূল। সে ভিডিয়োর সঙ্গে বুধবার রাতের বক্তব্যের কোনও মিলই নেই! তাহলে কোনটা সত্যি?
পুলিশ যে টাকা দিতে চেয়েছিল, এই দাবি এই প্রথমবার করলেন না নির্যাতিতার বাবা। ৯ অগস্টের পর অনেককেই এ কথা বলেছেন তিনি। ড. সুবর্ণ গোস্বামী সহ কয়েকজন চিকিৎসক নির্যাতিতার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে বলেছিলেন, পুলিশ টাকা দিতে চেয়েছিল। বুধবার নিজে মুখে সেই কথা বলেন তিলোত্তমার বাবা।
বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়। ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি TV9 বাংলা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, নির্যাতিতার বাবা-মা-কে কেউ প্রশ্ন করছেন, “আপনারা নাকি বলেছেন পুলিশ টাকা দিতে চাইছে?” উত্তরে, নির্যাতিতার বাবা বলছেন, “কে বলল। আমরা এরকম কিছু বলিইনি। কীভাবে বলল। এরকম কিছু ঘটেইনি।” আবার প্রশ্ন, “ছিছিছি… তাহলে এটা মিথ্যা গল্প?” উত্তর- “একদম মিথ্যা, বানানো গল্প।” অর্থাৎ ভিডিয়োটি অর্থ হল, তাঁদের টাকার অফার দেওয়া হয়নি। কুণাল ঘোষ সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন।
এই ভিডিয়ো প্রকাশ্য়ে আসার পর তিলোত্তমার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা TV9 বলে বাংলা। আসল সত্যিটা কী? তিলোত্তমার বাবা বলছেন, “সেদিন রাতে ভিডিয়ো করে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা যে কিছু বলিনি- এটা বলতে চাপ দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ চাপ দিয়েছিল। বোঝানো হয়েছিল পুলিশের বিরুদ্ধে কথা বললে তদন্তে অসুবিধা হবে। তদন্তের ক্ষতি হবে। তখনও তো কেসটা পুলিশের হাতেই ছিল। পুলিশ তদন্ত করবে, আবার পুলিশের নামেই বদনাম করব!” তবে রাজনৈতিক দলের কাছে এই ভিডিয়ো কী করে গেল, সেটা জানেন না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
তারপর কী হল? তিলোত্তমার বাবা-মায়ের বক্তব্য, ‘পরে পুলিশের গতিবিধি দেখে বুঝলাম ব্যাপারটা ওরা অন্যদিকে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর হাইকোর্ট সিবিআইকে তদন্তভার দিল।’