রায়গঞ্জ: ভূপতিনগরে এনআইএ (NIA)- উপর হামলা। সেই ঘটনায় এনআইএ-র ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তল্লাশি চালাতে গিয়ে হামলার মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রীয় সংস্থাকে। সেই ঘটনায় ২ জন অফিসার আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। এমনকী কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও বাধা পেতে হয় বলে অভিযোগ। পুরো ঘটনার কথা জানিয়ে ভূপতিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে এনআইএ। এই নিয়েই মুখ খোলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। রায়গঞ্জ থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সামনে মমতা প্রশ্ন তুলেছেন, “পুলিশকে জানিয়ে গিয়েছিল? ওরা কেন মধ্যরাতে পুলিশকে না জানিয়ে যাবে?”
মমতা আজ বলেছেন, “নিয়ম অনুযায়ী পুলিশকে জানিয়ে যাওয়া উচিৎ ছিল। মাঝরাতে যদি গ্রামের লোক দেখেন কিছু লোক আসছেন, তাঁরা কীভাবে বুঝবেন? ভোটের আগে কেন গ্রেফতার করবে? বিজেপি কী মনে করছে? সব বুথ এজেন্টকে গ্রেফতার করবে? এই করে ভোটে জিতবে? শূন্যে গুলি ছুড়ছে।” এখানেই শেষ নয়, এনআইএর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মমতা বলেছেন, “কী অধিকার আছে এনআইএ-র? শুধুমাত্র বিজেপিকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য এটা করছে। বিজেপির এই নোংরামি সারা পৃথিবীতে আওয়াজ তুলব।”
এ দিকে, আবার মুখ্য়মন্ত্রী মুখ খোলার পরই পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছে বিজেপি-র পক্ষ থেকে। মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, “চোরকে জানিয়ে তারপর তাঁর বাড়ি পৌঁছতে হবে? এটা কোথায় লেখা আছে? এ তো আগেরকার দিনে রঘু ডাকাতরা চিঠি দিয়ে ডাকাতি করতে যেত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি সেই দিন ফিরিয়ে আনতে চাইছেন? এই মন্তব্যের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। ওনাকে দেখেই বাংলার মানুষ একসময় স্বপ্ন দেখেছিল সিপিএম-কে পরাজিত করা সম্ভব। এখন সেই মুখ্যমন্ত্রী হামলাকে সমর্থন করছেন।” এ প্রসঙ্গে আবার শিশির অধিকারী বলেছেন, “এই সব ঘটনা ভিতরে চলছিল। বাইরে প্রকাশ হল। সরকারের উস্কানি রয়েছে। এনআইএ তদন্ত করছে। সব প্রমাণ খতিয়ে দেখেছে। ওদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। যায়নি। তারপর যা পদক্ষেপ করার এনআইএ করেছে। আর সেটাকে বলপ্রয়োগ করে মানুষকে দেখাতে চাইছে কত শক্তিশালী।”
উল্লেখ্য, আজকের ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছএ ৫ই জানুয়ারির সন্দেশখালিকে। সেখানে তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। আর আজ ভূপতিনগরে গিয়ে আক্রান্ত হলেন এনআইএ-এর আধিকারিক। বস্তুত, ২০২২ সালে ভূপতিনগরে বিস্ফোরণ ঘটে, যার জেরে তিনজনের মৃত্যু হয়।বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৪ জন তৃণমূল নেতার নাম জড়িয়েছিল। তাঁদের দফায় দফায় নোটিস দেওয়া হয়। তৃণমূল দাবি করতে থাকে, ভোটের আগে এগুলো ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। আজ গ্রেফতার হন মনোব্রত জানা ও বাদল মাইতি নামে দু’জন।