লন্ডন : একমাসেই বিশ্বের ১০৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। এই পরিস্থিতে কোথাও আঘাত করেছে করোনা চতুর্থ ঢেউ, কোথাও আবার পঞ্চম ঢেউ। আর ব্রিটেন সম্ভবত করোনাকালে সবথেকে ভয়ঙ্কর সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। লন্ডন শহরের যে তথ্য উঠে আসছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, গোটা শহরই কার্যত আক্রান্ত কোভিডে। পরিসংখ্যান বলছে, প্রত্যেক দিন রেকর্ড ভেঙে বাড়ছে সংক্রমণ। রবিবারের মধ্যে সেই শহরে প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন কোভিডে আক্রান্ত হতে পারে।
গত সাত দিন ধরে ওমিক্রনের জেরে হু হু করে বেড়েছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। ১৬ ডিসেম্বরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি ২০ জনের মধ্যে একজন আক্রান্ত ছিল রাজধানী শহর লন্ডনে। সেই সংখ্যা পরে বেড়েছে আরও। নিয়ন্ত্রণে আসার কোনও সম্ভাবনাই দেখছে না প্রশাসন। এত বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে যে অফিসে, কারখানায় কর্মী সংখ্যা কমে গিয়েছে। অনেকেই অসুস্থ হওয়ায় আইসোলেশনে রয়েছেন। হাসপাতালগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন দাবি করেছিলেন, ক্রিসমাসে গত বছরের তুলনায় এবছর কিছুটা ভালো পরিস্থিতি থাকবে। কিন্তু ক্রিসমাসের মুখেই যে ছবি দেখা যাচ্ছে, তাতে নতুন করে বিধি নিষেধ জারি করা হচ্ছে।
শুক্রবার ব্রিটেনে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ১৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যাটা ছিল ১৪৭। শুধু লন্ডন নয়, পুরো ব্রিটেনেই করোনা ছড়িয়েছে ব্যাপক হারে। ১৯ ডিসেম্বরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি ৬৫ জনের মধ্যে একজন আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে।
এ দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়ে দিয়েছে বুস্টার ডোজ়েও নিস্তার মিলবে না। বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল বলেন, “বুস্টার ডোজ় দিতেই কোনও দেশ পার পাবে না। বুস্টার ডোজ়ের অর্ত এই নয় যে স্বাস্থ্যবিধি ভুলে উৎসবে মজে ওঠা।” রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ পরামর্শদাতাদের রিপোর্ট তুলে ধরে হু-র প্রধান জানান, টিকাকরণের প্রধান লক্ষ্য গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যু প্রতিরোধের উপরই থাকা উচিত। বিশ্বে প্রতিদিন যে পরিমাণ করোনা টিকা দেওয়া হচ্ছে, তার মধ্যে ২০ শতাংশই অতিরিক্ত ডোজ় বা বুস্টার ডোজ় হিসাবে দেওয়া হচ্ছে। এরফলে আগামিদিনে বিশ্বে টিকা বৈষম্য আরও বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওমিক্রনই হয়ত শেষ নয়, এর পরেও করোনার আরও অন্যান্য় ভ্যারিয়েন্ট আসতে পারে। কিন্তু আশার বাণী, সেগুলি আর উদ্বেগের হবে না। সম্ভবত ওমিক্রনই করোনার শেষ ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’। ভাইরাসগুলি জীবিত কি না তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ থাকতেই পারে। তবে এটা প্রমাণিত যে, তারা বিবর্তিত হয়। অতিমারি পরিস্থিতিতে এই সত্যিটা আরও বেশি করে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। করোনার একটি ভ্যারিয়েন্টের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার এক নতুন ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাব হচ্ছে কয়েক মাসের মধ্যেই।
আরও পড়ুন : Omicron Variant: বাংলায় বাড়ছে ওমিক্রন-দাপট! পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসছে কেন্দ্রীয় দল