ইসলামবাদ: ভোট হয়েছিল বৃহস্পতিবার। ভোটদান প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরই গণনা শুরু হলেও, চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করতে লেগে গেল তিনদিন। রবিবার সকালে, অবশেষে সামনে এল পাকিস্তান সাধারণ নির্বাচন ২০২৪-এর চূড়ান্ত ফলাফল। পাকিস্তান সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের জন্য, যে ২৬৬ আসনে ভোট হয়, তার মধ্যে ১৩৪টি আসনে জয় প্রয়োজন। কিন্তু, ভোটে কোনও দলই তা পায়নি। সবথেকে বেশি আসনে জয় পেয়েছে নির্দল প্রার্থীরা। ১০১টি আসন জিতেছে তারা। এর মধ্যে অবশ্য ৯৬ জনই ইমরান খানের দল পিটিআই-এর সমর্থিত প্রার্থী। নির্বাচন কমশন পিটিআই-এর ভোটে লড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন। নওয়াজ শরিফের পিএমএল(এন) পেয়েছে ৭৫টি আসন এবং তৃতীয় স্থানে আছে বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি। তারা জিতেছে ৫৪টি আসন। তবে, নির্বাচনে সবথেকে বেশি আসন জিতেও, সরকার গঠন করতে পারবে না ইমরান খান সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা।
পাকিস্তানের নির্বাচনী আইনে বলা হয়েছে, নিপ্দল প্রার্থীরা নিজেরা একজোট হয়ে সরকার গঠন করতে পারবে না। সরকার গঠনের জন্য নির্দল প্রার্থীদের কোনও একটি স্বীকৃত রাজনৈতিক দলে যোগ দিতেই হবে। সেই দলের সরকার তৈরি হবে। এর পাশাপাশি, পাক সংসদে সংরক্ষিত আসনও রয়েছে। পাক সংসদের মোট আসন সংখ্যা ৩৩৬। এর মধ্যে ২৬৬ জন প্রার্থী সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। বাকি ৭০টি আসন সংরক্ষিত। এর মধ্যে, ৬০টি মহিলাদের জন্য এবং ১০টি অমুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত। বিধানসভায় প্রতিটি দলের শক্তির ভিত্তিতে এই আসনগুলি বরাদ্দ করা হয়। নির্দল প্রার্থীদের এই সংরক্ষিত আসনও বরাদ্দ করা হয় না। তাই, ইমরান সমর্থিত নির্দল প্রার্থীদের পক্ষে, কোনও রাজনৈতিক দলে যোগদান করা ছাড়া সরকার গঠন করা অসম্ভব।
তবে, এরও সমাধান বের করেছে ইমরান খানের দল। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে ইমরানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী তথা মিডিয়া উপদেষ্টা জুলফি বুখারি বলেছেন, তাঁদের সমর্থিত জয়ী নির্দল প্রার্থীদের কয়েক দিনের মধ্যেই পিটিআই দলে যোগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে। এর মধ্যে, ইমরান খান ,সমর্থিত নির্দল প্রার্থীদের ভাঙিয়ে নিজের শিবিরে আনার জন্য সক্রিয় নওয়াজ শরিফ। তবে, ‘ঘোড়া কেনাবেচা’র ভয় তাঁদের নেই বলে দাবি করেছেন তারা। রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, “নির্দল প্রার্থীরা অন্য কোনও দলে যোগ দেবেন বলে আমরা ভয় পাচ্ছি না। এই মানুষগুলো গত ১৮ মাস ধরে সংগ্রাম করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের নির্যাতন ও নিপীড়ন সহ্য করেছেন।” পিটিআই মুখপাত্র বলেছেন, আপাতত ইমরান জেল থেকেই একজন কোনও নেতাকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করবেন। পরে, আইনি পথে জেলের বাইরে আনা হবে ইমরানকে।